Thank you for trying Sticky AMP!!

মুজিব চিরন্তন অনুষ্ঠানের দশম দিন বঙ্গবন্ধুকে নিবেদন করে রচিত রাগ মৈত্রী পরিবেশন করেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী

অজয় চক্রবর্তীর কণ্ঠে মৈত্রীমুগ্ধ বাংলাদেশ

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে কবিতা ও গান লেখা হয়েছে অনেক। হঠাৎ জানা গেল ‘মৈত্রী’ নামের একটি নতুন রাগ রচিত হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের কাছ থেকে সেটি উপহার হিসেবে পাবে বাংলাদেশ। সেই রাগে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর কণ্ঠে আনকোরা নতুন গান শুনল দুই দেশ। বাংলাদেশ যেন হলো মৈত্রীমুগ্ধ।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে ছিল মুজিব চিরন্তন অনুষ্ঠানের দশম দিন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এ অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর পরিবেশনা দিয়ে। বঙ্গবন্ধুকে নিবেদন করে রচিত রাগ মৈত্রী পরিবেশন করেন তিনি। পাতিয়ালা কসুর ঘরানার এ রাগ রচিত হয়েছে বাংলাদেশের আলাউদ্দিন খাঁর সৃষ্ট রাগ হেমন্ত ও উত্তর–দক্ষিণ ভারতের সমাদৃত রাগ আভগির মিলনে। এ রাগে সংস্কৃত, হিন্দি ও বাংলা ভাষায় তিনটি গান শোনান অজয় চক্রবর্তী, যা অনেকটাই দেশমাতৃকা, দেশের কীর্তিমান সন্তানদের বন্দনাগীত। এই শিল্পীর সঙ্গে তবলা, ঢোল ও পিয়ানোতে ছিলেন তিনজন সংগত শিল্পী।

মেয়ে ও বাবা কৌশিকী চক্রবর্তী ও পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী প্রায়ই আসেন বাংলাদেশে

গানের মধ্যবর্তী বিরতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, লালন সাঁই, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পঞ্চকবি ও এই অঞ্চলের প্রখ্যাত শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি। বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘আজ এ ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে তিনি সশরীরে না থাকলেও অবশ্যই উপস্থিত আছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে আজ আমি সপরিবারে, সবান্ধবে এখানে উপস্থিত থাকতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। ময়মনসিংহ আমার মা–বাবার জন্মস্থান। এই অঞ্চলটি সংগীতের জন্য প্রসিদ্ধ। সুতরাং আমিও বাংলাদেশের একজন। বাংলাদেশের গৌরীপুর ও কুমিল্লায় ভারতের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ যন্ত্রসংগীতশিল্পী ওস্তাদ বিলায়াত খাঁ সাহেব ও ওস্তাদ বাবা আলাউদ্দিন খাঁ সাহেবের জন্ম। তাঁর ছাত্র পণ্ডিত রবিশঙ্করজি ও ওস্তাদ আলী আকবর খাঁ সাহেব ও পণ্ডিত নিখিল ব্যানার্জি—এই তিন বঙ্গসন্তানই পৃথিবীর সবার প্রণম্য যন্ত্রসংগীতশিল্পী।’ পরিবেশনের আগে তিনি জানান, প্রথমবারের মতো এ রাগে গান করছেন তিনি। অজয় চক্রবর্তীর পরিবেশনায় সংস্কৃত ভাষার গানটি রচনা করেছেন খ্যাতিমান দার্শনিক অরিন্দম চক্রবর্তী, হিন্দিটি ডা. সুস্মিতা বসু ও রবি বর্মণ। ‘আজ আবার অতীত বেয়ে ইতিহাস ছুঁয়ে দেখা’ গানটি লিখেছেন তাঁর ছাত্র অনল চট্টোপাধ্যায়। দুই হাজার দর্শক সরাসরি এ অনুষ্ঠান উপভোগ করেছেন।

অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় অস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী এ আর রহমানের কণ্ঠে নতুন গান ‘এক দোস্ত মুজিবহে বাংলা’, গানটি লিখেছেন জুলফিকার রাসেল। অতুল রানিঙ্গার অর্কেস্ট্রেশনে ছিল কোরিওগ্রাফি, ‘বিন্দু থেকে সিন্ধু’ শীর্ষক তিনটি কালজয়ী গান, পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী। এ ছাড়া গান করেন কণ্ঠশিল্পী ও সাংসদ মমতাজ বেগম। ওয়ার্দা রিহাবের পরিচালনা ও পরিকল্পনায় ছিল ধৃতি নর্তনালয়ের কোরিওগ্রাফিক নৃত্য।