Thank you for trying Sticky AMP!!

ইউরোপ ভ্রমণে লেখা রবীন্দ্রনাথের গানের আসর

‘উত্তরায়ণ’-এর নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার জাতীয় জাদুঘরে ‘ইউরোপে রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক এক সংগীত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

ছিমছাম সুদৃশ্য মঞ্চ। মঞ্চের পেছনে বিশাল পর্দায় ভেসে আসছিল বিভিন্ন বয়সে চিত্রিত রবীন্দ্রনাথ। কখনো কখনো বিভিন্ন স্থাপনা। যেখানে যেখানে কবির স্মৃতি আছে, সেগুলো। আর এরই সামনে মঞ্চে বসে তাঁর ইউরোপ ভ্রমণের সময়কার সৃষ্টিগুলো তুলে ধরছিলেন শিল্পীরা। গানে ফাঁকে ফাঁকে পাঠ আর আবৃত্তির মিশেলে দারুণ এক আবহ তৈরি হয়েছিল আসরে। 


কবিগুরু প্রথম যেবার ইউরোপে যান, তখন তাঁর বয়স ১৭। তিনি বিভিন্ন সময় ভ্রমণে গেছেন ইউরোপে, তখনো লিখেছেন গান। সে রকম কিছু গান নিয়েই ছিল উত্তরায়ণের নিবেদন ‘ইউরোপে রবীন্দ্রনাথ’। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে শনিবার সন্ধ্যায় বসেছিল এ আসর। সংগীত সংগঠন উত্তরায়ণের নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপনের প্রয়াসে ‘ইউরোপে রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক এই গীতি আলেখ্য অনুষ্ঠানটি ছিল দর্শকের জন্য মুগ্ধকর এক অভিজ্ঞতা।

কবির ইউরোপ ভ্রমণের সময় রচিত ১৯টি গান দিয়ে সাজানো হয়েছে এই আয়োজন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন একই মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবু হেনা মোস্তাফা কামাল। অনুষ্ঠান দেখে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদও মুগ্ধ। তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘আমার দেখা অন্যতম সেরা আয়োজন এটি। সুন্দর আয়োজন।’

রবীন্দ্রনাথের ইউরোপে বসে লেখা কিছু গান নিয়েই ছিল উত্তরায়ণের নিবেদন, ‘ইউরোপে রবীন্দ্রনাথ’। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

অনুষ্ঠানের মূল পরিকল্পক ও পরিচালক লিলি ইসলাম গানগুলো বেছেছেন বেশ যত্ন করে। অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘প্রথম যুগের উদয়দিগঙ্গনে’ গানটি সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশন করে আয়োজক সংগঠনের শিল্পীরা। এরপর রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী লিলি ইসলামের নেতৃত্বে একে একে ১৯টি গান পরিবেশন করেন উত্তরায়ণের শিল্পীরা। এর মধ্যে ১১টি সমবেত কণ্ঠে আর ৭টি একক ও ১টি ছিল দ্বৈত কণ্ঠের পরিবেশনা।

অনুষ্ঠানটি বেশ সাজানো–গোছানো ছিল। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

পরিবেশিত গানের মধ্যে ছিল ‘গানে গানে তব বন্ধন যাক টুটে’, ‘সুন্দর বটে তব অঙ্গদখানি তারায় তারায় খচিত’, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে’, ‘মধুর, তোমার শেষ যে না পাই প্রহর হল শেষ’, ‘তোমারি নাম বলব নানা ছলে’, ‘কার চোখের চাওয়ার হাওয়ায় দোলায় মন’, ‘আকাশে তোর তেমনি আছে ছুটি’, ‘কোথায় ফিরিস পরম শেষের’, ‘অরূপ তোমার বাণী’, ‘আপনি আমার কোনখানে’, ‘দিনের বেলায় বাঁশী’, ‘যা পেয়েছি প্রথম দিনে’, ‘তুমি উষার সোনার বিন্দু’, ‘প্রাণে খুশির তুফান’, ‘তার হাতে ছিল’, ‘ক্ষমা করো মোরে সখী’, ‘সঙ্কোচের বিহ্বলতা’ এবং ‘নাই নাই ভয়’। প্রতিটি পরিবেশনার আগে সে গানটির রচনার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন অনুষ্ঠানের পরিচালক লিলি ইসলাম। আর ছিল ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডালিয়া আহমেদের পাঠ ও আবৃত্তি।

১৯টি গান দিয়ে সাজানো হয়েছে এই আয়োজন। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

লিলি ইসলামের পরিকল্পনা, গবেষণা ও পরিচালনায় আসরে সংগীত পরিবেশন করেন ইশরাত জাহান, নাহিদ পারভীন, রতন মজুমদার, টিংকু কুমার শীল, মৌমিতা পাল, সাইফুল ইসলাম, অভিজিৎ দে, নুসরাত জাহান সাথী, শিমু দেসহ উত্তরায়ণের ২৫ জন সদস্য।

গানের ফাঁকে ফাঁকে ছিল আবৃত্তি ও পাঠ। ছবি: তানভীর আহাম্মেদ