Thank you for trying Sticky AMP!!

কেমন কাটল কাঙালিনী সুফিয়া ও আকবেরর ঈদ

কাঙালিনী সুফিয়া ও আকবর। ছবি-সংগৃহীত

 কিছুদিন আগে প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবরে জানা যায়, এই করোনায় কাঙালিনী সুফিয়া ও আকবর দুজনেই খাবার আর অসুস্থতা নিয়ে ভীষণ কষ্টে দিনযাপন করছেন। খবর প্রকাশের পর সাময়িকভাবে অনেকের সহযোগিতায় তাঁদের এই কষ্ট লাঘব হয়। ব্যবস্থা হয় খাবারের। কিন্তু করোনার এই সময়টায় ঈদ কেমন কাটল এই দুই পরিবারের? জানতে চাইলে কুষ্টিয়া থেকে কাঙালিনী সুফিয়া বললেন, খারাপ না। মোটামুটি ভালোই কেটেছে। স্বস্তির কথা শোনা গেছে আকবরের কণ্ঠেও। তবে অসুস্থতা নিয়ে ছিল কিছুটা আক্ষেপ।

লোকগানের শিল্পী কাঙালিনী সুফিয়া করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে থেকেই কুষ্টিয়াতে। লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়াতে সাভারের বাড়িতে আসতে পারেননি। কুষ্টিয়া শহরের জেলখানা মোড়ের এরশাদ নগরের বাড়িতেই মেয়ে ও নাতীদের নিয়ে ঈদ উদযাপন করেছেন তিনি। ‘কোনবা পথে নিতাইগঞ্জ যাই’, ‘বুড়ি হইলাম তোর কারণে’, ‘নারীর কাছে কেউ যায় না’, ‘আমার ভাটি গাঙের নাইয়া’সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় গানের এই শিল্পী জানান, মার্চে দোলপূর্ণিমার সময় কুষ্টিয়ার লালনের আখড়ায় যান। সেখান থেকে শহরের জেলখানা মোড়ের এরশাদ নগরের বাড়িতে যান।

অন্যদিকে ঢাকার মিরপুর ১৩ নম্বরে থাকা আকবর তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ঈদের সপ্তাহ তিনেক আগে যশোরের কোতোয়ালি থানাধীন আরবপুর ইউনিয়নের সুজনপুর গ্রাম চলে যান। পর্যাপ্ত খাবারদাবার থাকলেও অসুস্থ শরীরের ব্যথায় কাতর আকবর মঙ্গলবার জানান, ‘কাজ-কর্ম নাই ভাবলাম, ঢাকায় একটা ঘরে বদ্ধ না থেকে কয়েকটা দিন গ্রামের বাড়িতে খোলা আকাশের নিচে কাটিয়ে আসি। যাওয়ার পর শুরুতে ১৪ দিন বাড়িতে নিজের ইচ্ছায় গৃহবন্দী ছিলাম। সব ঠিকঠাক থাকলেও গ্রামে এসে শরীরটা নিয়ে সমস্যায় পড়ি। ঘা এর কারণে ব্যথা বেড়ে যায়। এর মধ্যে জায়েদ খান (চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক) যোগাযোগ করেন। তিনি ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রেখেছেন বলেছেন। ৩০ মের মধ্যে ঢাকায় ফিরব। ফিরেই চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করব। তা ছাড়া ঈদে মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে যতটা ভালো থাকা যায়, থেকেছি। কিন্তু চারদিকে করোনা নিয়ে যে আতঙ্ক, তার কারণে মনটা ভালো না।’   

কাঙালিনী সুফিয়া। ছবি-সংগৃহীত

আট বছর ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন আকবর। তিন বছর হলো তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছে জন্ডিস, রক্তে প্রদাহসহ নানা রোগ। তাই আগের মতো এখন আর মঞ্চে গাইতে পারেন না। গেল বছরের শুরুর দিকে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েক দিন হাসপাতালে থাকতে হয় আকবরকে। তাঁর অসুস্থতার খবর পৌঁছে যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। এরপর তাঁর পরিবারকে ডেকে ২০ লাখ টাকা অনুদান দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই টাকার মুনাফা হিসেবে তিন মাস পর পর ৪৯ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে তোলেন আকবর।

সংগীত শিল্পী আকবর। ছবি-সংগৃহীত

কাঙালিনী সুফিয়া বললেন, ‘খাবার নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ঈদের দিন মেয়ে ও নাতিদের নিয়ে সেমাই খেয়েছি। খাবার খেয়েছি। নতুন কাপড় পরা হয়নি। এ নিয়ে আফসোসও নেই। দেশের এখন যে অবস্থা, বাঁইচা আছি, এটাই অনেক বড় শুকরিয়া। দেশটারে আল্লাহ ভালো কইরে দিক, এটাই শুধুই চাইছি।’

দুস্থ শিল্পী হিসেবে কাঙ্গালিনী সুফিয়া ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পেতেন ৫ হাজার টাকা। ২০১৪ সাল থেকে সে অঙ্ক দ্বিগুণ হয়ে প্রতি মাসে দাঁড়ায় ১০ হাজার টাকা। এই টাকার সঙ্গে গান গেয়ে আয় করা টাকায় চলে মেয়ে ও নাতিদের নিয়ে সংসার।