Thank you for trying Sticky AMP!!

গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর

গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর আইসিইউতে

তিন দিন ধরে গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীরের গায়ে জ্বর। এরও দুই দিন আগে থেকে খুশখুশে কাশি। এরপর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। কোভিড-১৯ পরীক্ষার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। ফলাফল হাতে পেলে জানতে পারেন, তিনি করোনা পজিটিভ। গতকাল শারীরিক অবস্থা খারাপ হয় এবং বেড়ে যায় শ্বাসকষ্ট। এরপর দ্রুত তাঁকে গ্রিন রোডের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) প্রয়োজন পড়লে গ্রিন রোডের সেই হাসপাতালে পাওয়া যায়নি তা।

ফকির আলমগীর গানের পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখিও করেন

এদিক–ওদিক যোগাযোগ করে শেষ পর্যন্ত আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে পাওয়া যায় আইসিইউ। বর্তমানে সেই হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন তিনি। প্রথম আলোকে খবরটি জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী সুরাইয়া আলমগীর।

গণসংগীতের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর করোনায় আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে ঢাকার গুলশানে একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। গতকাল সন্ধ্যার পর তাঁর তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং তাঁদের পুরো পরিবার সন্ধ্যার পর থেকে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে অবশেষে রাত ১২টার দিকে সৌভাগ্যক্রমে হাসপাতালে কোভিড আইসিইউতে একটি সিট পায়।

স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে ভূমিকা রেখেছেন ফকির আলমগী

ফকির আলমগীরের স্ত্রী সুরাইয়া আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁর ফুসফুস ২৫ শতাংশ সংক্রমিত। বর্তমানে তাঁর অক্সিজেন ঘণ্টায় ৬০ লিটার করে লাগছে। ফকির আলমগীর সাহেব খুব কষ্ট পাচ্ছেন। আমরা সবাই খুবই চিন্তিত। সবাই ওর জন্য দোয়া করবেন।’

স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে ভূমিকা রেখেছেন ফকির আলমগীর। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তাঁর কণ্ঠের বেশ কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়।

ছবিতে বাম থেকে গানের বন্ধু ফেরদৌস ওয়াহিদ ফকির আলমগীর, পিলু মমতাজ, ফিরোজ সাই এবং আজম খান

এর মধ্যে ‘ও সখিনা’ গানটি এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ১৯৮২ সালের বিটিভির আনন্দমেলা অনুষ্ঠানে গানটি প্রচারের পর দর্শকের মধ্যে সাড়া ফেলে। কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি গানটির সুরও করেছেন ফকির আলমগীর। তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা, গণসংগীত চর্চার আরেক সংগঠন গণসংগীতশিল্পী পরিষদের সাবেক সভাপতি।

তাঁর গাওয়া ‘ও সখিনা’ গানটি এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা ফকির আলমগীর গানের পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখিও করেন। ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বিজয়ের গান’, ‘গণসংগীতের অতীত ও বর্তমান’, ‘আমার কথা’, ‘যাঁরা আছেন হৃদয়পটে’সহ বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ হয়েছে তাঁর।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে

ফকির আলমগীর ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ১৯৬৯ সালের গণ–অভ্যুত্থানে যোগ দেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সরকার ১৯৯৯ সালে ফকির আলমগীরকে একুশে পদক দেয়।