Thank you for trying Sticky AMP!!

লাইফ সাপোর্টে সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ

করোনায় আক্রান্ত সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। আজ রোববার ভোর থেকে তাঁকে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাসপ্রশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। প্রথম আলোকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন সংগীত পরিচালকের বড় মেয়ে দুর্দানা ফরিদ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন ফরিদ আহমেদের শারীরিক অবস্থা গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে অবনতি হতে থাকে। এরপর চিকিৎসকেরা তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কথা বলেন। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে রাত ১২টার পর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর আইসিইউয়ের ব্যবস্থা হয়। কিন্তু ভোরবেলা পরিবারকে জানানো হয়, ফরিদ আহমেদকে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাসপ্রশ্বাস দিতে হবে। পরিবারের অনুমতি নিয়ে ভোররাত চারটায় তাঁকে লাইফ সাপোর্ট নেওয়া হয়।

ফরিদ আহমেদ

দুর্দানা ফরিদ বলেন, ‘আব্বুকে চিকিৎসকেরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। কিন্তু তাঁর ফুসফুসের কন্ডিশন খুব একটা ভালো না। এ নিয়ে সবার দুশ্চিন্তা। সবাইকে আমার আব্বুর জন্য দোয়া করতে বলবেন। চিকিৎসকেরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছেন।’
এদিকে ফরিদ আহমেদের স্ত্রী শিউলি আক্তারও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হয়েই তিনি হাসপাতালে ভর্তি স্বামী ফরিদ আহমেদের সার্বক্ষণিক সেবা করছিলেন। বর্তমানে তিনি করোনা নেগেটিভ।

গত মাসের শেষ দিকে টানা কয়েক দিন ভীষণ জ্বর ছিল সুরকার ও সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদের। খাবারে স্বাদ-গন্ধ কিছুই পাচ্ছিলেন না। তিনবার করোনার পরীক্ষা করানো হয়। প্রথম দুই দফায় নেগেটিভ এলেও তৃতীয়বারে কোভিড-১৯ পজিটিভ ধরা পড়ে। এরপর আর বাসায় রাখা হয়নি তাঁকে। পরিবারের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ২৫ মার্চ রাতে তাঁকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়। ১৭ দিনের মাথায় তাঁর হাসপাতাল বদল করা হয়।


করোনায় ফরিদ আহমেদের ফুসফুস সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হয়েছে। শুরুর দিকে জানা যায়, তাঁর ফুসফুসের ৬০ শতাংশ সংক্রমিত হয়েছে।

ফরিদ আহমেদ

অনেক কালজয়ী গানের সুরকার ফরিদ আহমেদ। স্কুলবন্ধু বায়েজীদের কাছে গিটারে তাঁর হাতেখড়ি। এরপর ফিরোজ সাঁইয়ের হাত ধরে পেশাদার সংগীতাঙ্গনে তাঁর পথচলা। ব্যান্ড ‘স্পন্দন’-এ তখন তিনি বেজ গিটার বাজাতেন। ফিরোজ সাঁই ‘স্পন্দন’ ছেড়ে দিলেও তাঁর সঙ্গে থেকেই তিনি গিটার বাজাতেন। লিটন অধিকারী রিন্টুর লেখা ও কুমার বিশ্বজিতের গাওয়া ‘তুমি ছাড়া আমি যেন মরুভূমি’ গানে সুর করে প্রশংসিত হন ফরিদ আহমেদ। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত বহু গানের সুর তৈরি করেছেন তিনি। করেছেন সংগীতায়োজনও।

বিশেষ করে উল্লেখ করতেই হয় হানিফ সংকেতের ‘ইত্যাদি’-এর টাইটেল সং ‘কেউ কেউ অবিরাম চুপি...’, কুমার বিশ্বজিতের ‘মনেরই রাগ অনুরাগ’, ‘আমি তোরই সাথে ভাসতে পারি মরণ খেয়ায় একসাথে’, রুনা লায়লার ‘ফেরারী সাইরেন’, রুনা লায়লা ও সাবিনা ইয়াসমীনের কণ্ঠে ‘দলছুট প্রজাপতি’, চ্যানেল আইয়ের ‘আজ জন্মদিন’, ‘ক্ষুদে গানরাজ’, ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’, ‘সেরা কণ্ঠ’ প্রতিযোগিতার থিম সং, সুমী শবনমের জনপ্রিয় গান ‘ললিতা’, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার কণ্ঠে সিনেমার গান ‘তুমি আমার জীবনের গহীনে’সহ আরও অনেক জনপ্রিয় গানের সুরকার তিনি। নূর হোসেন বলাইয়ের ‘নিষ্পত্তি’ চলচ্চিত্রে প্রথম সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেন ফরিদ আহমেদ।

২০১৭ সালে সংগীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প অবলম্বনে নির্মিত ‘তুমি রবে নীরবে’ সিনেমায় সংগীত পরিচালনা করে এ পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত এই সিনেমার পরিচালক মাহবুবা ইসলাম। এই সিনেমার আবহ সংগীতের কাজও করেন ফরিদ আহমেদ।