Thank you for trying Sticky AMP!!

লোকসংগীতে তরুণদের আগ্রহ বাড়ছে

দর্শক মাতিয়েছেন ভারতের জনপ্রিয় লোকসংগীতশিল্পী রঘুপতি দ্বারকানাথ (ডানে)। গতকাল বনানীতে বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে ঢাকা আন্তর্জাতিক লোক উৎসবে। ছবি: সাইফুল ইসলাম

কে বলে ইন্টারনেট-স্মার্টফোনের দুনিয়ায় তরুণেরা শিকড়বিমুখ? বনানীর আর্মি স্টেডিয়ামে গত দুই দিনে তারুণ্যের প্রাণচঞ্চল উপস্থিতি বলে দেয়, এ প্রজন্ম শিকড়মুখী। লোকগানের প্রবল শক্তি আর আনন্দের আহ্বানে সাড়া দিতে দেরি করেননি তাঁরা। ডাক পেলে ঠিকই চার দেয়ালের বাইরে আসেন, নেন সংগীতের সুধা। শুধু প্রয়োজন উপলক্ষ। ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব এমনই এক উপলক্ষ, এমনই শক্তি।

ডিজিটাল যন্ত্রের দাপটের যুগে লোকসংগীতের প্রতি তরুণদের আগ্রহ কমেনি, বরং দিন দিন বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার উৎসবের উদ্বোধনীতে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছিলেন, তারুণ্যের স্রোত দেখে তিনি অভিভূত।

গতকাল শুক্রবার ছিল উৎসবের দ্বিতীয় দিন। সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে উপস্থাপক হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল দর্শকদের স্বাগত জানান। এরপর মঞ্চে আসে রাজশাহীর গানের দল ‘স্বরব্যঞ্জ’। প্রথমেই সত্যজিৎ রায়ের ‘মহারাজা তোমারে সেলাম, ’ গানটি শোনায় টগবগে তরুণদের দলটি। গান শেষে রাজশাহী আঞ্চলিক উচ্চারণে দলের গায়ক বগা তালেব বললেন, ‘একটু তালি দিলে সাহস পাই, এত বড় আয়োজনে আগে কখনো গাইনি।’ মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে দর্শক দেশের নবীন বাজিয়েদের অভিনন্দন জানান। দর্শকের করতালির মান রাখে স্বরব্যঞ্জ। ‘জানিতে চাই দয়াল’, ‘কত রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়’সহ আরও কয়েকটি গানের পরিবেশনা ছিল মনে রাখার মতো।

স্বরব্যঞ্জের পর মঞ্চে আসে বাহরাইনের তরুণদের দল মাজাজ। একেবারেই ভিন্ন মেজাজ তাদের পরিবেশনায়, সংগীতে নিজেদের প্রাচীন রীতির সঙ্গে যুক্ত করেছে পাশ্চাত্যের ধারা। দলটির পরিবেশনা এ দেশের শ্রোতার কাছে এক নতুন অভিজ্ঞতা।

মাজাজের পর মঞ্চে আসে রঘু দীক্ষিত। ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় লোকশিল্পী রঘুপতি দ্বারকানাথ পরিবেশন করেন তাঁর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকসংগীত। পরের দল গ্র্যামি পুরস্কারবিজয়ী যুক্তরাষ্ট্রের দল লস টেক্সমেনিয়াকস। তাদের গানে ব্লুজ, কান্ট্রি, জ্যাজ, এমনকি রকের দারুণ প্রভাব ছিল। ম্যাক্স বাহার নেতৃত্বে দলটিতে ছিলেন জশ বাকা, লরেনজো মার্টিনেজ, নোয়েল হার্নান্দেজ, উইল জে লস ও ফ্লাকো ইয়েমিনেজ।

রাত ১১টায় মঞ্চে আসেন মমতাজ বেগম। নিজের জনপ্রিয় গানগুলোর পাশাপাশি অপ্রচলিত গানও শোনান তিনি। ‘আমি জন্ম নিয়ে দেখতে পেলাম’ গান দিয়ে শুরু করে একে একে বেশ কয়েকটি গান শোনান। সবশেষে গান ‘পাঙ্খা হইল মন’।

সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা—টানা ছয় ঘণ্টা বনানী আর্মি স্টেডিয়ামের মাঠের ঠিক মাঝে সুবিশাল মঞ্চটি ছিল সমাগতদের আগ্রহের কেন্দ্র। শুধু মঞ্চ না, উৎসবের রং ছড়িয়ে পড়েছিল মাঠের বিভিন্ন প্রান্তে। উত্সব উপলক্ষে মাঠের এক পাশে নানা আকৃতির স্টলে চলছিল ভোজনরসিকদের আরেক উৎসব। মাঠের বিভিন্ন কোনায় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে ছিল তরুণদের ছোট ছোট দলের আড্ডা। গোল হয়ে নিজেরাই নেচেগেয়ে উদ্‌যাপন করছে উৎসব।

সান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ ও সান কমিউনিকেশনের আয়োজনে মেরিল নিবেদিত এ উৎসবে সহযোগিতা করছে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, গ্রামীণফোন ও রাঁধুনী। উৎসবের শেষ দিন আজ। এবারও এই উৎসব সরাসরি সম্প্রচার করছে মাছরাঙা টেলিভিশন।