শিল্পীদের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কিছু করা কঠিন
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পীদের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কিছু করা কঠিন বলে মনে করেন শিল্পী আসিফ আকবর। তাঁর মতে, বাংলাদেশের সংগীত অঙ্গনে ঐক্যের ঘাটতি আছে। সে কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পীদের জন্য কাজ করা কঠিন। তবু এই মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পীদের জন্য কিছু করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
করোনায় অন্য সব পেশাজীবীর মতো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশের শিল্পীসমাজও। জনসমাগম বন্ধ, কনসার্ট ও অনুষ্ঠানে গেয়ে আয়ের পথও বন্ধ হয়ে গেছে তাঁদের। দীর্ঘ মেয়াদে এ অবস্থা চললে বিপদে পড়তে হবে কণ্ঠশিল্পীদের। এ অবস্থায় যাঁদের হাতে গচ্ছিত অর্থ নেই, তাঁদের রয়েছে অভাবে পড়ার আশঙ্কা। এদিকে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এ ছুটি কবে শেষ হবে বা সামাজিক দূরত্ব কতকাল বজায় রাখতে হবে, তা কেউ বলতে পারে না। তা ছাড়া করোনাভাইরাস থেকে কবে নাগাদ মুক্তি মিলবে বা কবে থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, সেটাও কেউ বলতে পারছেন না।
শিল্পী আসিফ আকবর বলেন, 'বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গন ছোট্ট একটা ইন্ডাস্ট্রি। তবু এখানকার শিল্পীদের মধ্যে ঐক্য নেই। আমরা যদি সরকারের কাছে কোনো আবেদন করি, চার-পাঁচটি আবেদন জমা পড়বে। যদি কোনো উদ্যোগ নিই, তখন একই ধরনের চার-পাঁচটা উদ্যোগের কথা শোনা যাবে। যদি কোনো ধারণা সামনে আনি, শিল্পীরা চার-পাঁচটা আদর্শে বিভক্ত হয়ে যায়। তবু আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, সম্মিলিতভাবে একটি তহবিল গড়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পীদের সহায়তা করা যায় কি না।'
সরকারের পক্ষ থেকে সংগীতাঙ্গনের জন্য কী ধরনের উদ্যোগ নিলে তাঁরা উপকৃত হবেন? এমন প্রশ্নে আসিফ প্রথম আলোকে বলেন, 'সরকার যদি অতি অল্প সুদে শিল্পীদের ঋণ দিতে পারে, তাহলে খুবই ভালো হয়। কেননা কবে নাগাদ এ অবস্থার পরিবর্তন হবে, তা আমরা কেউ জানি না। কবে নাগাদ আবার স্টেজে গান করতে পারব, সেটাও জানা নেই। শিল্পীদের যদি সরকার ঋণ দেয়, পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিল্পীরা রোজগার করে সরকারকে সেই ঋণ শোধ করে দিতে পারবে। কনসার্ট না থাকলেও শিল্পীদের বাড়িভাড়া, বাজার খরচসহ দৈনন্দিন জীবনযাপনের ব্যয় আছে। এক একজনের খরচ এক এক রকম। তাই অল্প সুদে ঋণ পেলে আমার মনে হয়, শিল্পীদের জন্য সুবিধা হয়।'
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব প্রসঙ্গে এই শিল্পী মনে করেন, প্রকৃতি সব সময় নিজের যত্ন নেয়। মানুষের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পৃথিবী নিজের যত্ন নিতেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়েছে। মানুষের ভুলের কারণেই এটা হয়েছে। মানুষ প্রকৃতির ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, এ ভাইরাসের প্রকোপ তারই ফল।
২০০১ সালে 'ও প্রিয়া তুমি কোথায়' গানটির দিয়ে সংগীতাঙ্গনে তারকা হয়েই প্রবেশ করেন শিল্পী আসিফ আকবর। তারপর তাঁর দীর্ঘ পথচলা। সেই নামে প্রকাশিত তাঁর অ্যালবামটি বিক্রি হয়েছিল ৬০ লাখ কপি। পরেও বহু শ্রোতাপ্রিয় গান মানুষকে উপহার দিয়েছেন এই শিল্পী। গত বছর গহীনের গান চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন আসিফ।