সমরজিতের 'ও যে আমায় মন্দ বলে'
জুলাইয়ের মাঝামাঝি সমরজিৎ রায় ও হৈমন্তী শুক্লার দ্বৈত কণ্ঠে ‘তুমি ভোরের পাখির মতো’ গানটি বেশ শ্রোতাপ্রিয় হয়েছে। আগস্টের প্রথম দিন প্রকাশ পাবে তাঁর একক গান ‘ও যে আমায় মন্দ বলে’। ১ আগস্ট গুণী এ শিল্পীর জন্মদিন।
সমরজিৎ রায় জানান, ‘ও যে আমায় মন্দ বলে’ শিরোনামের এই গান জি সিরিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হবে। গানটির কথা লিখেছেন জি কে দত্ত। সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন সমরজিৎ নিজেই। গানটি রেকর্ড করা হয়েছে কলকাতার জেএমডি স্টুডিওতে।
কক্সবাজারের চকরিয়ার ছেলে সমরজিতের বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। গানের সঙ্গে সখ্যও পুরোনো। সেই চার বছর বয়সে। ঘরে দুই দাদা যখন গান করতেন, তখন কান পেতে শুনতেন ছোট্ট সমরজিৎ। তা ছাড়া ক্যাসেট প্লেয়ারে মান্না দের গান শুনে তা হারমোনিয়ামে তুলে হুবহু গেয়ে ফেলতেন। বয়সের সঙ্গে পোক্ত হয় সুর-তাল। এর মধ্যে পুরোনো দিনের বাংলা ও মান্না দের গানের জন্য খ্যাতি ছড়াল। ২০০০ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে সব ছেড়েছুড়ে পাড়ি জমালেন দিল্লিতে। ভর্তি হলেন গান্ধর্ব মহাবিদ্যালয়ে। সংগীতবিশারদে ছয় বছরের পড়া শেষে ফল হলো চমকে দেওয়ার মতো—সারা ভারতে প্রথম। সংগীতবিশারদের চূড়ান্ত পরীক্ষায় সারা ভারতবর্ষে প্রথম স্থান অধিকার করায় তিনি অর্জন করেছিলেন পণ্ডিত ডি বি পলুস্কর অ্যাওয়ার্ডসহ মোট সাতটি সাম্মানিক অ্যাওয়ার্ড। অনুষ্ঠান করার সুযোগ পেয়েছেন ভারতের অনেক গুণী শিল্পীর সঙ্গে, যাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন জগজিৎ সিং, অনুপ জালোটা, পণ্ডিত যশরাজ, পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, কবিতা কৃষ্ণমূর্তি, অনুরাধা পাড়োয়াল। স্বর্ণযুগের প্রখ্যাত গীতিকার প্রয়াত পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, বটকৃষ্ণ দের লেখা ও প্রখ্যাত শিল্পী প্রয়াত মৃণাল চক্রবর্তী, প্রয়াত অজয় দাসের সুরে বেশ কিছু মৌলিক গান রেকর্ড করার সুযোগও তাঁর হয়েছে।
গানের পাশাপাশি সমরজিৎ ভারতের চণ্ডীগড়ের প্রাচীন কলাকেন্দ্র থেকে তবলায়ও সংগীতবিশারদ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি দীর্ঘ ১২ বছর উচ্চাঙ্গসংগীতের শিক্ষক হিসেবে দিল্লির গান্ধর্ব মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ২০১১ সালে তাঁর প্রথম হিন্দি গানের অ্যালবাম ‘তেরা তসব্বুর’ ভারতের জিমা অ্যাওয়ার্ডে সেরা জনপ্রিয় অ্যালবাম হিসেবে মনোনয়ন পায়। এ পর্যন্ত বাংলা ও হিন্দি গান মিলিয়ে ভারত ও বাংলাদেশে সমরজিতের মোট আটটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে।
২০০৯ সালে বের হয় প্রখ্যাত শিল্পী অনুপ জালোটার সঙ্গে আধুনিক গানের দ্বৈত অ্যালবাম ‘অচেনা একটা দিন’। অ্যালবামটিতে অনুপ জালোটা গেয়েছেন সমরজিতের সুরে। এরপর ২০১১ সালে বেরিয়েছে রবীন্দ্রসংগীতের দ্বৈত অ্যালবাম ‘রবি রঞ্জনী’। সর্বশেষ প্রথম বাংলা একক গানের অ্যালবাম ‘এক চিলতে রোদ’ বের হয় ২০১২ সালের জানুয়ারিতে।