Thank you for trying Sticky AMP!!

'গান আর সংসার - এই আমার জগৎ'

নোলক বাবু

রিয়ালিটি শো’র মাধ্যমে সংগীতজগতে আসেন জামালপুরের ছেলে নোলক বাবু। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করা নোলক ২০০৫ সালের ‘ক্লোজআপ ওয়ান: তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতার প্রথম আসরের একজন প্রতিযোগী ছিলেন। বিচারকদের রায় আর দর্শকের ভোটে চূড়ান্ত লড়াইয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন নোলক। এরপর পেশাদার শিল্পী হিসেবে গানের জগতে বিচরণ করেন তিনি। পথ চলতে গিয়ে মাঝে-মধ্যে তাঁকে হোঁচট খেতেও হয়েছে। এ ছাড়া, তাঁকে নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগও। এসব নিয়েই আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন নোলক বাবু। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরেছেন মনজুর কাদের
নোলক বাবু, কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ, এখন আমি অনেক বেশি ভালো আছি। স্ত্রী, দুই সন্তান আর মাকে নিয়ে আমি এখন ঢাকার রামপুরার বনশ্রী এলাকায় থাকি।
গান বাজনার কি খবর?
আমি নিয়মিত স্টেজ শো করছি। এ মাসে আমার ১৩টা শোর বুকিং আছে। গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি টেলিভিশনেও সরাসরি গানের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। কিন্তু আপনাকে তো সেভাবে গানের কোনো বড় অনুষ্ঠানে দেখা যায় না
মাঝে এক বছর লন্ডনে ছিলাম আমি। তার আগেও কিছু অনুষ্ঠানের জন্য দেশের বাইরে থাকতে হয়েছে। পারিবারিকভাবেও কিছুটা ডিস্টার্ব ছিলাম। তাই দেশের অনেকের সঙ্গে সেভাবে আর যোগাযোগ হয়নি।
যে তারকাখ্যাতি পেয়েছিলেন তা ধরে রাখতে কি ব্যর্থ হয়েছেন?
এটা ঠিক যে আমি খুব অল্প বয়সে অনেক কিছু পেয়েছি। আর সে কারণেই হয়তো, ক্লোজআপ ওয়ান প্রতিযোগিতার পর না বুঝেই অনেক কিছুই আমি করেছি। তা ছাড়া সে সময় আমাকে গাইড করার মতোও কেউ ছিল না। পরে ভুলগুলো বুঝতে পেরেছি। ভুল থেকে শিক্ষাও নিয়েছি। এখন নতুন করে পথ চলছি। নিজেকে পুরোপুরিভাবে শুধরে নিয়েছি।

সমসাময়িকদের তুলনায় আপনি কি অনেক পিছিয়ে বলে হয়?
আমি যেই সুযোগ পেয়েছিলাম তার তুলনায় বেশ পিছিয়ে আছি। আমার নিজের গাফিলতি কারণে তা হয়েছে। আজকাল অনেকে নিজেদের পিআর বাড়ানোর কাজ করে থাকেন। আমার তা একেবারেই নাই। মিডিয়ার সঙ্গেও নিজে থেকে আমি যোগাযোগ করিনি। আমি আমার মতো করে কাজ করে গেছি। আমাকে নিয়ে অনেক পলিটিকসও হয়েছে অনেক।
এই ‘পলিটিকস’টা কেমন?
আমাকে নিয়ে একটা কথা ছড়ানো হয়েছে যে, আমাকে নাকি মোবাইলে পাওয়া যায় না। অথচ গত দশ বছর ধরেই আমি একটা মোবাইল নম্বর ব্যবহার করছি। অথচ, যারাই আমার খোঁজ করেছেন, গভীর রাতেও পেয়েছেন। আমাকে নিয়ে আরও কিছু কথা রটেছিল, এই যেমন আমি নাকি প্রায়ই মাতাল থাকি। এটা পুরোপুরি ঠিক নয়।
এখন পর্যন্ত মোট কয়টা অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে?
এখন পর্যন্ত আমার চারটি একক অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ‘সে যে কন্যা ভালো’ (২০০৬), ‘দুই চোখের কান্দন’ (২০০৭), ‘আনন্দ দিন’ (২০০৮) ও ‘আমার আকাশ’ (২০১৪)। এ ছাড়া দ্বৈত এবং মিশ্র অ্যালবাম মিলিয়ে ১৫টার মতো হবে। এটাও ঠিক যে, এত বছরে আমার যত গান করা উচিত ছিল তার তুলনায় কিছুই হয়নি।
চলচ্চিত্রের গানে?
একেবারেই হাতেগোনা। ১০ বছরে সাতটা ছবিতে; শেষ যে ছবিতে গান গেয়েছি সেটি হচ্ছে ‘ঢাকা টু বোম্বে’।
কোন কোন সংগীত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন?
আমি অনেক সৌভাগ্যবানদের একজন। এই দশ বছরের সংগীত যাত্রায় আমার পাশে ছিলেন আলাউদ্দীন আলী, বারী সিদ্দিকী, প্রিন্স মাহমুদ, প্রণব ঘোষ, মানাম আহমেদ, শওকত আলী ইমন ও রাজেশের মতো সংগীতপরিচালকেরা। আমি তাঁদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত অনেক কিছুই শিখেছি।
নিয়মিত গানের রেওয়াজ করেন?
নিয়মিত করতে পারি না। তবে যখনই সময় পাই রেওয়াজ করি। আমি মনে করি, আমার গায়কি এখন আগের চেয়েও পরিণত।
এখন কী করছেন?
গান আর সংসার— এই নিয়ে আমার পুরো জগৎ। আমার একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যালবাম রেডি আছে। এখন আরও কিছু গান করছি। এর মধ্যে নিজে সংগীত পরিচালনার কাজও করেছি।
নিজেকে নিয়ে নতুন কী স্বপ্ন দেখছেন?
বাংলাদেশের মানুষ আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি এত দিন তাঁদের সেই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে পারিনি। এখন আবারও নতুন করে সবকিছু শুরু করেছি। খুব শিগগিরই নিজের একটি স্টুডিও চালু করব। কারণ, ইদানীং আমি নিজে গানের সুর ও সংগীত পরিচালনার কাজও শুরু করেছি। নিজের স্টুডিওতে বসে মনের মতো গান তৈরি করতে চাই।