Thank you for trying Sticky AMP!!

'বারবার সংগীতের রাজনীতির ছোবল খেয়েছি'

অটামনাল মুন

গানের মানুষ অটামনাল মুন। অনেকটা সময় গানের দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এককভাবে গান নিয়ে ব্যস্ত হয়েছেন। আবার গানের দল নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। পাশাপাশি এককভাবেও কাজ করছেন এই গায়ক, গীতিকার ও সংগীত পরিচালক। ৪ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। এই আয়োজনের অন্যতম দল খুলনা টাইটানসের থিম সং করেছেন তিনি। এ ছাড়া গুণী গায়ক ও সংগীত পরিচালক লাকী আখান্দ্‌কে সম্মান জানিয়ে নতুন একটি গান বানিয়েছেন তিনি। এসব নিয়ে গতকাল বুধবার কথা হলো তাঁর সঙ্গে।

লাকী আখান্দ্‌কে নিয়ে গান তৈরির পরিকল্পনা কেন করেছেন?
এটা একেবারে ব্যক্তিগত। লাকী ভাই (লাকী আখান্দ্‌) আমাকে খুব স্নেহ করতেন। আমার লিরিক, টিউন আর গানের ভাবনা তাঁর পছন্দ ছিল। ভালোবাসা, শ্রদ্ধা এবং একজন কিংবদন্তিকে নিয়ে মুগ্ধ করার মতো কিছু তৈরি করার প্রচেষ্টা বলতে পারেন। আমার পরিকল্পনার সময় হঠাৎ জিপি মিউজিক থেকে একজন ফোন করে বললেন, তারা এবারের অনুষ্ঠান লাকী ভাইকে উৎসর্গ করবে। তাই একটা দারুণ গান যেন বানিয়ে দিই। সময় বেঁধে দেয় তিন দিন। এর মধ্যেই কাজটি করতে হয়েছে।

এত অল্প সময়ে একজন কিংবদন্তিকে নিয়ে গান তৈরির নিশ্চয়ই কোনো সহজ ব্যাপার ছিল না।
তিনি তো মনেপ্রাণে রয়েছেন আগে থেকেই। একটা গানে গিটার বাজাতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে পরিচয়। এরপর তাঁর বাসায় গিয়েছি, শাহবাগে আড্ডা হতো, তাঁর গান শুনতাম, কথা শুনতাম—তাঁর সঙ্গে কাটানো মুহূর্তের সঙ্গী হতে পারায় নিজের আবেগ, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধের জায়গাটা কাজে লাগানোর একটা বড় সুযোগ মনে হয়েছে। তবে পুরো ব্যাপারটা খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল।

লাকী আখান্দের সঙ্গে প্রথম দেখার স্মৃতি মনে পড়ে?
২০০১ সালের কথা। কি-নোট নামে একটা স্টুডিও ছিল মগবাজার ওয়্যারলেস গলিতে। সেখানে আমি রেকর্ডিং রুমের পাশে ঘুমিয়ে ছিলাম। লাকী ভাইয়ের একটি গানের জন্য সারা রাত আদিত্য সন্ন্যাসী দুই-তিনজন গিটার শিল্পীর টেক নিচ্ছিলেন। তাঁরা বাজাচ্ছেন, কিন্তু লাকী ভাইয়ের পছন্দ হচ্ছে না। তাঁদের সারা রাতের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় লাকী ভাইয়ের মন খারাপ হয়। ঘুম থেকে ওঠে তাঁর মন খারাপ দেখে আমি সালাম দিলাম। বললাম, ভাই, আমি কি ট্রাই করে দেখব? আমাকে বললেন, ‘তুমি কে?’ বললাম, আমি মুন। তিনি বললেন, ‘দেখো, পারো কি না।’ আমি প্রথম টেকে গিটার বাজিয়ে চমকে দিলাম। তিনি আমাকে আদর করলেন। বাসায় যেতে বললেন। এরপর আমার অন্য কাজের সঙ্গেও তাঁর পরিচয় হলো। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গানচিল নতুনভাবে যখন আবার যাত্রা শুরু করে, তখন আমি টানা ২২টি গান গেয়েছিলাম। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন লাকী ভাই।

শুনলাম আপনি খুলনা টাইটানস নিয়ে একটি গান করেছেন?
এরই মধ্যে খুব ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। সবাই আলাদা আলাদা করে প্রশংসা করছেন। ছোটবেলায় অনেক ক্রিকেট খেলেছি। ব্যাটিংয়ে খুব ভালো ছিলাম, খুব বাউন্ডারি মারতাম। বোলিংয়েও ভালো ছিলাম। ফিল্ডিং আর বোলিং ছিল প্রিয়।

ক্রিকেট নিয়ে এই প্রথম গান তৈরি করেছেন?
হ্যাঁ। অনেক গান তৈরি করেছি, কিন্তু প্রকাশ করতে পারিনি। বারবার সংগীতের রাজনীতির ছোবল খেয়েছি। আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। এবার খুলনা টাইটানস থেকে আমাকে তাদের থিম সং বানাতে বলে। তখন দুরন্ত গতিতে ছুটলাম। ভাবলাম, ব্যাট-বলের খেলাটা এবার কলম আর গিটারে করি।

‘এক নির্ঝরের গান’ আয়োজনেও তো আপনি গান গেয়েছেন।
‘এক নির্ঝরের গান’ আসলে একটা ভাবনার নাম। এই প্রকল্পে ‘আমি থেকে আমরা’ হওয়ার চেষ্টা আছে। এর সঙ্গে আমি প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছি। কখনো নেতৃত্বও দিয়েছি। এখানে সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় হলো, এই প্রকল্পের ভাবনা যাঁর, সেই এনামুল করিম নির্ঝর খুবই খুঁতখুঁতে একজন মানুষ। এরপরও এই মানুষটির পছন্দের শিল্পী আমি। এবার ‘এক নির্ঝরের গান’ নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করছে ইন্দিরা গান্ধী সংস্কৃতি কেন্দ্র। ৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে গান করব আমি, সভ্যতা আর লিমন।

আপনার গানের দলের খবর বলুন।
প্র্যাকটিস করছি। ভাবছি আরেকটু দক্ষ হয়ে দল নিয়ে ছুটব। এর মধ্যে সহযোদ্ধারা আরও দক্ষ হোক। আমরাও আমাদের গানগুলো আত্মার মধ্য লালন করি।