Thank you for trying Sticky AMP!!

'ভ্রমর কইয়ো গিয়া'র কবিকে স্মরণ

রাধারমণ দত্তের গানে গানে তাঁকে স্মরণ করেন শিল্পীরা

‘ভ্রমর কইয়ো গিয়া’ গানের লোককবি ও সুরকার রাধারমণ দত্তের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তাঁর স্মরণে, তাঁর সুরে, তাঁর গানে গানে আজ শুরু হয়েছে তিন দিনের ‘রাধারমণ সংগীত উৎসব–২০১৮ ’। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে এ উৎসব উদ্বোধন করেন শ্রীহট্টের আঞ্চলিক গান ও রাধারমণ সংগীতের প্রবীণ শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস।

প্রাণছোঁয়া সুর ও সহজিয়া কথার লোককবি রাধারমণ দত্ত পুরকায়স্থ। নানা আঙ্গিকে তিন হাজারের বেশি গান বেঁধেছিলেন তিনি। তাঁর স্মরণ উৎসবে গীত হবে রাধারমণের কীর্তন, দেহতত্ত্ব, ধামাইল ও ভাটিয়ালি গান। গাইবেন ঢাকা, সিলেট, মৌলভীবাজার, নবীগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের শিল্পীরা।

প্রধান অতিথি হিসেবে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশ্বজিৎ ঘোষ ও জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সি এম তোফায়েল বারী। আলোচক ছিলেন সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি তপন মাহমুদ ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী। রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রের সভাপতি মাহমুদ সেলিমের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সহসভাপতি হারিসুল হক, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিশ্বজিৎ রায়। অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা দেওয়া হয় রাধারমণের গানের দুই প্রবীণ শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস ও শাহ মো. ছুরত মিয়াকে। যৌথভাবে অষ্টমবারের মতো এ উত্সবের আয়োজন করেছে শিল্পকলা একাডেমি ও রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র। সহযোগিতা করছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সোনালী ব্যাংক ও গ্রিন ডেল্টা ইনস্যুরেন্স।

আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, প্রায়ই রাধারমণের গানের সুর বিকৃতির অভিযোগ পাওয়া যায়। এ রকম হওয়ার কারণ হচ্ছে, তিনি নিজের গানগুলোকে প্রকাশ করে যাননি, যা কিনা শাহ আবদুল করিম করেছিলেন। তাই বলে তাঁর গানকে অস্বীকার করা যায় না।

উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতার পর একক কণ্ঠে দীপ্তি রাজবংশী গেয়ে শোনান ‘বাঁশী রে পরানের বাঁশী’ ও ‘ভ্রমর কইয়ো গিয়া’, চন্দনা মজুমদার ‘শ্যাম দাও আনিয়া বৃন্দে গো’ ও ‘এহন মায়ার কান্দন আর কাইন্দো না’, শাহনাজ বেলী শোনান ‘যুগল মিলন হইল গো’ ও ‘পিরিতি বিষম জ্বালা’, আবুবকর সিদ্দিক শোনান ‘যাওরে ভ্রমর উড়িয়া’ ও ‘কারে দেখাবে মনের দুঃখ রে’, সন্দীপন ‘শ্যামকালিয়া সোনা বন্ধুরে’ ও ‘ওরে আইজ কেনরে প্রাণের সুবল’, লাভলী দেব ‘সারানিশি কই ছিলায়রে রসরাজ’ ও ‘আমায় পাগল করলো গো’, খায়রুল ইসলাম ‘জলে যাইও না গো রাই’ ও ‘আমি ডাকি কাঙালিনী’, সুতপা রায় ‘মনে নাই গো আমারে বন্ধুয়ার’ ও ‘পাষাণ মনরে বুঝাইও’, মানিক ‘পূর্বে তোমার যে ভাব ছিলরে’ এবং সালাম ‘নিশীথে জাগিয়া’। সৃজ্যোতি রায় ও সৃজন রায় দ্বৈত কণ্ঠে গেয়ে শোনান ‘কুঞ্জ সাজাও গিয়া’।

সম্মেলক কণ্ঠে রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রের শিল্পীরা গেয়ে শোনান ‘সুরধ্বনীর কিনারায় সোনার’ ও ‘সজনী তোরা জল আনিতে যাবেনি’ এবং মরমী লোকগীতি শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা ‘আমার বন্ধু দয়াময়’ ও ‘আমি রবো না রবো না গৃহে’। উৎসবে স্বপ্নবিকাশ কেন্দ্রের নৃত্যশিল্পীরা ‘আসবে শ্যাম কালিয়া’ ও আঙ্গীকাম ললিতকলা একাডেমির নৃত্যশিল্পী ‘সুরধ্বনির কিনারায়’ গানের সঙ্গে নাচ করেন।

আগামীকাল শুক্রবার উত্সবের দ্বিতীয় দিনে গান করবেন সিলেট, মৌলভীবাজার, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের শিল্পীরা। পরশু শনিবার সমাপনী দিনে করবেন সুনামগঞ্জ ও জগন্নাথপুরের শিল্পীরা।