Thank you for trying Sticky AMP!!

শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী চতুর্থ জাতীয় গণসংগীত উৎসব

‘গণসংগীত অতীতের মতো আমাদের পথ দেখাবে’

‘সাম্প্রদায়িকতা ও শ্রেণিবৈষম্যের বিরুদ্ধে জেগে ওঠো বাংলাদেশ’ স্লোগানে  শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী চতুর্থ জাতীয় গণসংগীত উৎসব। মুক্ত মঞ্চে ১৩৫ জন শিল্পীর সমস্বরে জাতীয় সংগীত ও উৎসব সংগীত ‘আমারই দেশ সব মানুষের’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উৎসবের পর্দা ওঠে।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উৎসবের উদ্বোধন করেন সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক অনুপম সেন। গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজী মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী পর্বে প্রধান আলোচক ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ও উৎসব কমিটির আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছ। আলোচক ছিলেন জোট ও বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ।
অনুপম সেন বলেন, ‘আমাদের অনেক উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু সম্পদ অল্প কয়েকজনের হাতে কুক্ষিগত হচ্ছে। এটা ঠিক নয়। দুর্নীতি হচ্ছে। তাই মানুষকে জাগাতে হবে। গণসংগীত বিশ্বের শক্তিশালী শিল্পমাধ্যম। গণসংগীত মানুষকে জাগায়। “অগ্নিবীণা”র গান মানুষকে জাগিয়েছিল। আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় বিশ্বের কয়েকটি দেশে যখন চক্রান্ত হচ্ছিল, তখন বাংলাদেশ কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছিল। এভাবে আবার জাগতে হবে। গণসংগীত অতীতের মতো আমাদের পথ দেখাবে।’

লেখক ও গবেষক গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘যখন সমাজ ভালো থাকে না, এই বাংলাদেশে সব আন্দোলনে গণশক্তি শক্তি জোগায়। সবার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সাহসী ভূমিকা নেয়। এখনো নববর্ষ উদ্‌যাপনে বাধা আসে। সব ধর্মের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে পারিনি। হয়তো কেউ না খেয়ে মরেনি কিন্তু ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাট অনেক বেড়েছে। সরকারকে আরও কঠোরহস্তে এসব দমন করতে হবে। জনবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রয়োজন সাংস্কৃতিক জাগরণ। অশুভ শক্তিকে বাংলাদেশ থেকে বিনাশ করতে হবে। এতে অন্যতম প্রাণশক্তি হবে গণসংগীত।’

সমস্বরে জাতীয় সংগীত ও উৎসব সংগীত ‘আমারই দেশ সব মানুষের’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উৎসবের পর্দা ওঠে

আবৃত্তিশিল্পী আহকাম উল্লাহ বলেন, ‘ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ দেশে গণসংগীতের যাত্রা শুরু। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণসংগীত সংগ্রামের প্রেরণা হয়েছে। গণসংগীতের মাধ্যমে আমরা জোট বাঁধছি, তৈরি হচ্ছি।’

বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ফারাহ পলাশের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী, উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম সমন্বয়ক শ্রেয়সী রায় ও চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার মোসলেম উদ্দিন শিকদার।

উদ্বোধনী পর্বের পরিবেশনা

পরে সকালের অধিবেশনে লালন সাঁইজির গান পরিবেশন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী চট্টগ্রাম, কাজী নজরুল ইসলামের সাম্যের গান পরিবেশন করে নজরুল সংগীত শিল্পী সংস্থা চট্টগ্রাম। এরপর একক সংগীত পরিবেশন করেন ঢাকার শিল্পী আবিদা রহমান।

বিকেলে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী গান পরিবেশন করে খুলনার বাংলাদেশ গণশিল্পী সংস্থা, আবদুল লতিফের গান পরিবেশন করে দিনাজপুরের দল ভৈরবী, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, রজনীকান্ত সেন ও অতুলপ্রসাদের দেশের গান পরিবেশন করবে রাজশাহীর দল জয়বাংলা, বর্ণবাদবিরোধী গান পরিবেশন করে বরগুনার দল মাটিয়াল, সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী গান পরিবেশন করবে নোয়াখালীর দল বিশ্বভুবন, ফকির আলমগীরের গান পরিবেশন করবে ঢাকার দল ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী, ভূপেন হাজারিকার গান পরিবেশন করবে ঢাকার দল উঠোন, শ্রেণিসংগ্রাম ও সমসাময়িক বিষয়ের গান পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের দল সৃজামি সাংস্কৃতিক অঙ্গন এবং অজিত রায়ের গান পরিবেশন করবে চট্টগ্রামের অভ্যুদয় সংগীত অঙ্গন।

উদ্বোধনী পর্বের পরিবেশনা