Thank you for trying Sticky AMP!!

ভালোবাসায়, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাপস পালকে শেষ বিদায়

বুধবার দুপুরে প্রখ্যাত অভিনেতা তাপস পালকে শেষ বিদায় জানাল কলকাতাবাসী।

বুধবার দুপুরে প্রখ্যাত অভিনেতা তাপস পালকে শেষ বিদায় জানাল কলকাতাবাসী। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাপস পালকে শেষ বিদায় জানানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কসহ কলকাতার সংস্কৃতি অঙ্গনের তারকাসহ বিশিষ্টজনেরা। চোখের জলে গান-স্যালুটের মধ্য দিয়ে তাপস পালকে জানানো হয় শেষ বিদায়। এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।

গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে মুম্বাই থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয় তাপস পালের মরদেহ। বিমানবন্দরে তাপস পালের মরদেহ গ্রহণ করেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং তাপস পালের মেয়ে সোহিনী। এরপর তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর বাসভবনে দক্ষিণ কলকাতার গলফ ক্লাব রোডে। সেখানে পরিবারের সদস্যদের শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মরদেহ রাখা হয়।

কেওড়াতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

আজ বুধবার বেলা ১১টায় মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার রবীন্দ্রসদনে। সেখানে মরদেহ শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখা হয়। এখানেই কলকাতার ছবিপাড়ার তারকারাসহ কলকাতার বিশিষ্টজনেরা তাপস পালকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। বেলা একটার দিকে মরদেহ শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। এর পরই সেখানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাপস পালকে গান স্যালুট দেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে বেজে ওঠে বিউগলে করুণ সুর। তারপর মরদেহ শেষকৃত্যের জন্য তোলা হয় মহাশ্মশানে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাপস পালের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমি তাপস পালের অকালমৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। আমাদের এই সাবেক বিধায়ক ও সাংসদের মৃত্যুতে তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। তাপস পালের মৃত্যুতে বাংলা এক নামী তারকাকে হারাল। তাঁর প্রয়াণে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল।’ তিনি আরও বলেন, বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতির কোপে পড়ে তাপস পালকে অকালে চলে যেতে হলো। এ ক্ষতি অপূরণীয়।

কেওড়াতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

গত সোমবার মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তাপস পাল। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন।
গত ২৮ জানুয়ারি তিনি চিকিৎসার জন্য মুম্বাই যান। সেখান থেকে ১ ফেব্রুয়ারি তাঁর যাওয়ার কথা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসার জন্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার দিন তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয় বিমানবন্দর থেকে। এরপর তাঁকে ভর্তি করা হয় মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। রাখা হয় ভেন্টিলেশনে।

কেওড়াতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

১৯৫৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর হুগলির চন্দননগরে জন্ম তাপস পালের। মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৯৮০ সালে ‘দাদার কীর্তি’ ছবি দিয়ে তাঁর চলচ্চিত্রযাত্রা শুরু হয়। তাপস পাল সব মিলিয়ে ৭২টি ছবিতে অভিনয় করেন। তাঁর অভিনীত শেষ ছবি ‘খিলাড়ি’। মুক্তি পায় ২০১৩ সালে।
তাপস পাল অভিনয়ের পাশাপাশি জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। ২০০৯ সালে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকে প্রথম সাংসদ হন। এরপর সাংসদ হন ২০১৪ সালেও। এর আগে তিনি দুবার বিধায়ক হন আলিপুর কেন্দ্র থেকে।