Thank you for trying Sticky AMP!!

টেলিভিশন নাটকে অনাপত্তিপত্র নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

দুর্গা ও বনজ্যোৎস্নার গল্প নাটকে ইরফান সাজ্জাদ ও তানজিন তিশা। নাটকের ইন্ডাস্ট্রিতে অনিয়ম ঠেকাতে উদ্যোগ নিচ্ছে সংগঠনগুলো। ছবি: সংগৃহীত

টেলিভিশন নাটক নিয়ে অভিযোগ পুরোনো। মানহীন নাটক, শুটিংয়ে বিশৃঙ্খলা, ঠিকমতো শুটিং সেটে অভিনয়শিল্পীর উপস্থিত না হওয়া, অভিনয়শিল্পীকে সময়মতো পারিশ্রমিক না দেওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে। সেখানে শৃঙ্খলা আনতে উদ্যোগ নিচ্ছে টেলিভিশন নাটকের আন্তসংগঠনগুলো।

উদ্যোগের মধ্যে একটি হলো টেলিভিশন চ্যানেলে নাটক চালাতে প্রযোজকের লাগবে অনাপত্তিপত্র। এ ছাড়া নাট্যকার, পরিচালক ও অভিনেতা—প্রত্যেককে নিজ নিজ সংগঠনের সদস্য হতে হবে টেলিভিশনে তাঁর কাজ প্রচার করতে হলে। টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির সংগঠনগুলো বলছে, ইন্ডাস্ট্রির নিয়মশৃঙ্খলা ফেরাতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করছে তাঁরা। অনাপত্তিপত্রের বিষয়টি নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ এটাকে দেখছেন ইতিবাচকভাবে, কেউ আশঙ্কা করছেন এটি সৃজনশীলকাজের ক্ষেত্রে বাধা হয়েও দাঁড়িয়ে যেতে পারে।

অভিনয়শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী মনে করেন, ইন্ডাস্ট্রির নিয়মশৃঙ্খলা ফেরাতে এটি ভালো উদ্যোগ। বেশ কয়েক বছর ধরে অনিয়মে ভরে গেছে এই অঙ্গন। তিনি বলেন, ‘এটি ইতিবাচক এই অর্থে, যেকোনো প্রফেশনেই যে কেউ কাজ করতে যাক, অন্তত তার অভিজ্ঞতা কিংবা প্রস্তুতি লাগবে। অভিনয়শিল্পী সংঘের যারা সদস্য হতে যায়, তারা যে অভিনয় করে তার একটা প্রমাণপত্র নিয়ে সদস্য হতে যায়। এটা একটা পেশা। এখানে এই সিস্টেম না করলে যে কেউ এসে যেকোনো সময় অভিনয় করে যাবেন, তিনি কোনো নিয়মশৃঙ্খলার ধার ধারবেন না। একজন পেশাদার শিল্পীর যে দায়বদ্ধতা থাকে এই ইন্ডাস্ট্রির প্রতি একজন শখের বশে এসে ১০ দিন অভিনয় করলে তার সেই দায়বদ্ধতা থাকে না। সুতরাং এই জায়গায় শৃঙ্খলার দরকার আছে।’

তরুণ পরিচালক আশফাক নিপুণ বলেন, ‘সংগঠন অবশ্যই কাজের। কাউকে বাধ্য করে সংগঠনের ভেতরে আনার প্রয়োজন নেই। প্রতিটা সংগঠন নিজেরা এমন কিছু কাজ করুক, যাতে অভিনয়শিল্পী হোক কিংবা পরিচালক তাঁর নিজের জন্যই তিনি এসব সংগঠনে যুক্ত হবেন। কিন্তু নাটকের মান খারাপ কিংবা টেলিভিশনে অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন চালানোর জন্য ইন্ডাস্ট্রির এই যে দর্শক কমে যাওয়া—এগুলো নিয়ে তারা উল্লেখযোগ্য কাজ এ পর্যন্ত দেখাতে পারেনি। ’ নিপুণ বলেন, ‘আমি মনে করি, যাঁরা কাজ করেন দীর্ঘ সময় ধরে, তাঁদের সংগঠন এমনিতেই সদস্য হিসেবে নিতে পারে। আমি যখন কাজ করি, একটা নাটক লিখতে হয়েছে, প্রযোজককে রাজি করাতে হয়েছে, অভিনয়শিল্পীদের রাজি করাতে হয়েছে, সবশেষ কাজটা শেষ করতে হয়েছে। এবং টেলিভিশন চ্যানেলকে রাজি করাতে হয়েছে, চ্যানেলে যেন কাজটা চলে। এতগুলো লোক যখন আমার পেছনে ইনভেস্ট করেছে, তাহলে আমার কেন একটি ইনস্টিটিউট থেকে আবার অনাপত্তিপত্র লাগবে? আমি যখন পুরো কাজটা করে ফেলছি, তখন আমাকে সংগঠনের কাছে আবার দৌড়াতে হচ্ছে। এই জিনিসটা আমি মানতে নারাজ।’

আরেক পরিচালক রেদওয়ান রনি বলেন, ‘নাটক নির্মাণের ক্ষেত্রে নানাবিধ অনিয়মের কারণে তিনটি সংগঠন একত্র হচ্ছে। এখন এর সদস্য না হলে নির্মাণের ক্ষেত্রে এই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না। সদস্য না হলে বলা সম্ভব না যে কেন আপনি দেরি করে শুরু করেছেন বা অভিনয়শিল্পীদের সম্মানী দিচ্ছেন না। অভিনেতাকে বলা যাবে না কেন দেরি করে আসছেন? আপনি ক্ষতি পূরণ দেবেন। এ কারণে এর দরকার আছে। নতুন যারা বানাতে চায়, তাদের ক্ষেত্রে যেন শিথিলতা থাকে সদস্য পদে। এমন যেন না হয় যে তুমি সদস্য না, তুমি বানাতে পারবা না। এমন হলে ভালো লোকজন হারাতে থাকব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘এটা কোনো ঘটনা না। যাঁকে লাগে সাময়িকভাবে একটি অন্তর্ভুক্তি দেওয়া হবে। এখানে কোনো বাধার সম্মুখীন হবে না। সে সাময়িকভাবে অনুমতি নিয়ে নেবে। এটা যতটা সুন্দর করা যায় আমরা সে চেষ্টা করছি।