Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির খতিয়ান

গতকাল আয়োজিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত অভিনয়শিল্পী সংঘের নেতারা

দেশের টেলিভিশন নাটকের অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচিত কমিটি পার করল এক বছর। গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন শহীদুল আলম সাচ্চু এবং আহসান হাবীব নাসিম। বছরজুড়ে নানা ধরনের কর্মকাণ্ডে মুখর ছিল এই সংগঠন। তবে কমিটির সভাপতি মনে করেন, অভিনয়শিল্পীদের ভোটের মাধ্যমে একটা নির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব পালন করছে, এটাই সবচেয়ে বড় সফলতা। একই সঙ্গে নির্বাচন আয়োজনটিও একটা বড় সফলতার অংশ মনে করেন তিনি।

গতকাল প্রথম আলোর সঙ্গে অভিনয়শিল্পী সংঘের সফলতা ও ব্যর্থতা নিয়ে কথা হয় সভাপতি শহীদুল আলম সাচ্চুর সঙ্গে। ওপরের সফলতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত এক বছরে অভিনয়শিল্পীদের জন্য আমরা নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। যেমন ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করেছি। যেখানে অভিনয়শিল্পীরা পরিচয়পত্রের মাধ্যমে ৩৫-৫০ ভাগ ছাড় পাবেন। শুধু তা-ই নয়, অভিনয়শিল্পীদের নিয়মিত পোশাক কিনতে হয়। এ জন্য বেশ কিছু ফ্যাশন হাউসের সঙ্গেও চুক্তি করা হয়েছে। যেখানে পরিচয়পত্র প্রদর্শন করলে ছাড় পাবেন অভিনয়শিল্পীরা। এ ছাড়া আপত্কালীন নির্বাচিত ২০ জন অভিনয়শিল্পীকে প্রতি মাসে মেগাশপ স্বপ্ন থেকে ৫ হাজার টাকার বাজার পৌঁছে দিচ্ছি।’

শহীদুল আলম সাচ্চু জানান, অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে পরিচয়পত্র বিতরণ ও অফিস নিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা একটা বড় উদ্যোগ। নির্বাচনী ওয়াদা অনুযায়ী, এরই মধ্যে গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করে সেটি এ বছরের সাধারণ সভায় পাস হয়েছে। সরকারি নিবন্ধনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজীবন সদস্য ও উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এত এত সফলতার বিপরীতে কিছু ‘করতে না পারার’ কাজের কথাও শোনান শহীদুল আলম সাচ্চু। নাটক নির্মাণের আগে তিনটি সংগঠন-ডিরেক্টরস গিল্ড, টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রোডিউসার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও অভিনয়শিল্পী সংঘ সদস্যদের মধ্যে যৌথভাবে একটি চুক্তিপত্র স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। কিন্তু সেটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারেননি এখনো। চুক্তি স্বাক্ষর করে নাটক নির্মাণ করলে নানা ধরনের সমস্যা এড়ানো যায়। তিনি মনে করছেন, এটা অনেকেই পালন করছেন, আবার অনেকেই করছেন না।

২০১৭ সালের অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘তাদের কার্যক্রম নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। ভালোই কাজ করছে। আমি মনে করি কমিটিতে বেশ কজন কাজের মানুষ আছেন। তবে যে জায়গাগুলোয় কাজ করা খুব জরুরি, সেটা এখনো শুরু করেনি। আবার যেটা পরে করলেও হয়, সেগুলো এখনই শুরু হয়ে গেছে।’

আরও এক বছর কমিটির মেয়াদ আছে। নতুন কিছু প্রত্যাশা করেন কি না জানতে চাইলে শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘যতগুলো সংগঠন আছে তার মধ্যে অভিনয়শিল্পী সংঘ এক নম্বরে থাকুক, এটাই প্রত্যাশা করি। নাটক তৈরি ও নাটকে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে শিল্পীদের যে দাবি এবং অনিয়ম চলছে, সেগুলো সংগঠনটি দেখবে এবং ব্যবস্থা নেবে। এটাও আশা করি।’

অভিনয়শিল্পী সংঘের এক বছরের কার্যক্রম নিয়ে কথা হয় ২০১৭ সালের নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী অভিনেতা ডি এ তায়েবের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এক বছরে আশানুরূপ কাজ হয়নি। যে গতিতে কমিটি কাজ করছে, তার চেয়ে বেশি গতি আশা করছি। তাদের কাছে অভিনয়শিল্পীদের প্রত্যাশা অনেক।’

নতুন উদ্যোগ ‘সংযোগ’
‘অভিনয় করলেই সবাই শিল্পী হন না। সাংবাদিকতা করলেও সবাই সাংবাদিক হন না।’ এ কথা বলেন অভিনেতা আজাদ আবুল কালাম তাঁর প্রবন্ধে। গতকাল মঙ্গলবার শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার হলে আয়োজিত ‘অভিনয়শিল্পী ও বিনোদন সংবাদকর্মী সংযোগ’ নামে একটি মতবিনিময় সভায় তিনি প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন।

টেলিভিশন অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন ‘অভিনয়শিল্পী সংঘ’ আয়োজিত এই সভায় উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী, বিশেষ করে বিনোদন সাংবাদিকেরা। দুপুর ১২টার একটু আগে শুরু হয় এই সভা। চলে দুপুর অবধি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, ড. ইনামুল হক, আফরোজা বানু, কে এস ফিরোজ, আহসাদুল হক মিনু, লুৎফর রহমান জর্জ, সংগঠনের সভাপতি শহীদুল আলম সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিমসহ সংগঠনের নেতারা। সভায় বিনোদন সাংবাদিকেরা তাঁদের কাজের পরিবেশ ও অভিনয়শিল্পীরা সংবাদ পরিবেশন নিয়ে পরামর্শ ও পারস্পরিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।