Thank you for trying Sticky AMP!!

বাবার সৃষ্টি দেখে মুগ্ধ নুহাশ হুমায়ূন

নুহাশ হুমায়ূন

‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকটি যখন প্রচারিত হয়, নুহাশ হুমায়ূনের তখন জন্ম হয়নি। সে সময় দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল ধারাবাহিকটি। সম্প্রতি আবারও বিটিভিতে প্রচারিত হচ্ছে নাটকটি। বাবা হুমায়ূন আহমেদের লেখা নাটকটি দেখে মুগ্ধ হয়েছেন নুহাশ। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নিজের মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন তিনি।

১৯৯০ সালে বিটিভির জন্য ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকটি লিখেছিলেন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। পরিচালনা করেছিলেন আবদুল হাফিজ মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ। প্রায় ৩০ বছর পর নাটকটি আবার প্রচার করছে বিটিভি। করোনাভাইরাসের কবলে ঘরবন্দী মানুষের একঘেয়েমি কাটাতে বাংলাদেশ টেলিভিশনে গত সোমবার থেকে প্রচার শুরু হয় জনপ্রিয় দুই ধারাবাহিক নাটক ‘কোথাও কেউ নেই’ ও ‘বহুব্রীহি’। টানা এক মাস ধরে প্রতিদিন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর প্রচারিত হবে নাটক দুটি।

গতকাল নাটক দেখে ফেসবুকে নুহাশ লিখেছেন, ‘প্রথমবারের মতো দেখছি ‌“কোথাও কেউ নেই”। এই অস্থির সময়েও নাটকটি দেখে মনে হচ্ছে, গল্প ও শিল্প একটা ব্যাপার বটে। বাবা ও তাঁর সৃষ্টি এখনো জীবন্ত, এখনো সেগুলো আমাদের স্বস্তি দিচ্ছে, অনুপ্রাণিত করছে। তোমার কথাই ভাবছি বাবা।’ ‘বহুব্রীহি’ নাটকটি দেখার প্রতিক্রিয়া শেয়ার করে নুহাশ লেখেন, ‘“বহুব্রীহি” নাটকটি দেখছি আর ইতিমধ্যে এর প্রেমে পড়ে গিয়েছি। “পাবলিকের মুখ তো বন্ধ করে রাখতে পারবেন না, দুলাভাই” সংলাপটি আজও প্রাসঙ্গিক।’

‘বহুব্রীহি’ নাটকের দৃশ্য

১৯৯২-৯৩ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয় ‘কোথাও কেউ নেই’। এ নাটকের ‘বাকের ভাই’ চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেন অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর। এমনকি নাটকের চরিত্র বাকের ভাইয়ের ফাঁসি ঠেকাতে সাধারণ মানুষ রাজপথে মিছিল বের করে প্রতিবাদ করে। সমসাময়িক দৈনিকে সেই খবরও গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়। ফাঁসির বিপক্ষে জনমত থাকা সত্ত্বেও চিত্রনাট্য অনুযায়ী বাকের ভাইয়ের ফাঁসি দেওয়া হয়।

‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে মুনা চরিত্রে অভিনয় করেন সুবর্ণা মুস্তাফা, বদি চরিত্রে আবদুল কাদের, মজনু চরিত্রে লুৎফর রহমান জর্জ, মতি চরিত্রে মাহফুজ আহমেদ, বকুল চরিত্রে আফসানা মিমি, উকিল চরিত্রে হুমায়ুন ফরীদি।

‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের একটি দৃশ্য

১৯৮৮-৮৯ সালের দিকে বিটিভিতে প্রচারিত হয় আরেকটি ধারাবাহিক নাটক ‘বহুব্রীহি’। এটিও লেখেন হুমায়ূন আহমেদ এবং প্রযোজনা করেন নওয়াজিশ আলী খান। সামরিক শাসনের সেই সময়ে এ ধারাবাহিকেই পাখির মুখে ‘তুই রাজাকার’ সংলাপটি তুলে দেন হুমায়ূন আহমেদ। ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সেটি। স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রতি যখন সরাসরি ঘৃণা প্রকাশ করা যেত না, তখন হুমায়ূন বেছে নিয়েছিলেন এই ব্যতিক্রম পথ। পরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলনে স্লোগান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এ সংলাপ।

একটি পরিবারকে ঘিরে ‘বহুব্রীহি’ নাটকের গল্প। এর বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত, আসাদুজ্জামান নূর, আলী যাকের, আফজাল হোসেন, লুৎফরনাহার লতা, লাকী ইনাম, আবুল খায়ের, আফজাল শরীফ প্রমুখ।

লকডাউনে ঘরে থাকা মানুষকে বিনোদন দেওয়ার জন্য পুরোনো এ দুটি ধারাবাহিক প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিটিভি। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সবকিছু স্থবির হয়ে যাওয়ায় নতুন করে অনুষ্ঠানও নির্মিত হচ্ছে না। তাই প্রতিদিন রাত আটটার বাংলা সংবাদের পর দেখানো হচ্ছে হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ ও তারপর ‘বহুব্রীহি’। অন্য টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও এ সময় একই পথ বেছে নিতে শুরু করেছে।