Thank you for trying Sticky AMP!!

বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে বলায় বন্ধ জি বাংলাসহ অনেক চ্যানেল

বন্ধ আছে ভারতের জি নেটওয়ার্কভুক্ত বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল। গতকাল সোমবার থেকে দেশের কোথাও দেখা যাচ্ছে না জি বাংলা, জি সিনেমাসহ এই নেটওয়ার্কের চ্যানেলগুলো। প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ কেবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজ।

সূত্র জানায়, যেকোনো সময় চালু হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশে বন্ধ থাকা এসব টেলিভিশন চ্যানেল।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে আনোয়ার পারভেজ বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, বিদেশি কোনো চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখানো যাবে না। বিজ্ঞাপন ছাড়া তো চ্যানেল কোথাও নেই। মন্ত্রণালয় থেকে শুরুতে বলা হয়েছিল, বিদেশি চ্যানেলে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন দেখানো যাবে না। এটা বন্ধ করা হয়েছে। এখন নতুন করে মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, কোনো পে-চ্যানেলে বিজ্ঞাপন থাকতে পারবে না। বাংলাদেশের বাজারে পে–চ্যানেলে বিজ্ঞাপন ছাড়া প্রদর্শন তো সম্ভব না। এ কারণেই জি নেটওয়ার্কের চ্যানেলগুলো পুরো বাংলাদেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কোয়াব সভাপতি আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘শুধু ভারতের জি নেটওয়ার্কভুক্ত চ্যানেল না, কিছুদিনের মধ্যে বিশ্বের আরও যেসব দেশের চ্যানেল আছে, সেগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে। সিএনএন, বিবিসিও বাদ যাবে না, কারণ এসব চ্যানেলেও বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয়। শুধু বাংলাদেশের চ্যানেল থাকবে। আমি তো বাংলাদেশের ৩০টা চ্যানেল দিয়ে ব্যবসা করতে পারব না। শুধু বাংলাদেশের চ্যানেল কোনো সাবস্ক্রাইবার দেখবে বলে মনে হয় না। আমার মনে হয়, ২ শতাংশ সাবস্ক্রাইবারও তখন থাকবে না। বাধ্য হয়ে তখন আমাকেও এই ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে। ইউটিউব কেউ বন্ধ করতে পারবে? এসব সিদ্ধান্তের কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটা হঠকারী সিদ্ধান্ত।’

অন্যদিকে, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিজান উল আলম বলেন, ‘চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়ার কোনো নির্দেশনা কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়নি। যত দূর জানি, কেবল অপারেটরদের কাছে এসব চ্যানেলে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন সম্প্রচার হচ্ছে কি না, তা জানাতে বলা হয়েছে। বিষয়টি সাত দিনের মধ্যে জানাতে কেবল অপারেটরদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন চ্যানেল কেন বন্ধ করা হয়েছে, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই বলতে পারবে।’

বাংলাদেশের কেবল টেলিভিশন পরিবেশক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেবল টেলিভিশন ব্যবসা নিয়ে কয়েকটা পক্ষের মধ্যে একটা বৈরী সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এভাবে সমস্যার সমাধান সম্ভব না। প্রতিটি পক্ষকে একসঙ্গে নিয়ে কথা বলতে হবে। সবার কী কী সমস্যা জানতে হবে। এখানে কেউ কারও প্রতিপক্ষ নয়। সরকারের উচিত সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে বসে এসব সমস্যার সমাধান করা। আর চ্যানেল বন্ধ কিন্তু বেশি দিন তো রাখা যাবে না। আমরা দর্শক প্রতিক্রিয়াও বোঝার চেষ্টা করছি। যেকোনো সময় চালু হয়ে যেতে পারে বন্ধ থাকা চ্যানেলগুলো।’

সম্প্রতি রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘সংকটে বেসরকারি টেলিভিশন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ডাউনলিংক করে বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখানো দণ্ডনীয় অপরাধ। শুধু এ-সংক্রান্ত আইন যথাযথভাবে মানা হলে বছরে দেশে ৫০০ কোটি টাকা বাড়বে। তিনি টেলিভিশনে বিদ্যমান সমস্যার কথা ইঙ্গিত করে বলেন, ‘টিভি শিল্পকে সুরক্ষা দিতে সবাই একযোগে কাজ করি।’

সরকারের অনুমতি ছাড়া ও কর না দিয়ে বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যাপারে দেশের কেবল অপারেটরদের সতর্ক করে আরেকটি অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের কেবল অপারেটররা ডাউনলিংক করে বিদেশি চ্যানেল প্রদর্শন করছেন৷ বিদেশি চ্যানেল প্রদর্শন কোনো অপরাধ নয়। কিন্তু সরকারের অনুমতি ছাড়া ও কর না দিয়ে বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করা আইনগতভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ। যাঁরা এই কাজগুলো করছেন, তাঁরা আইন লঙ্ঘন করছেন। তিনি আশা করছেন, সরকার কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করার আগেই তাঁরা এই কাজ থেকে বিরত হবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে টেলিভিশন সাংবাদিকদের নবগঠিত প্ল্যাটফর্ম ‘সম্প্রচার সাংবাদিক কেন্দ্র’র উদ্বোধন ও সম্প্রচার সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী এই সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন।