Thank you for trying Sticky AMP!!

বেকার হয়ে গেল ছোট্ট শরিফুল

খুদে অভিনেতা শরিফুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

এক বিজ্ঞাপনচিত্রে ‘হু টোল্ড ইউ, ওয়েল ইয়োর ওন মেশিন’ সংলাপটির মাধ্যমে সবার কাছে পরিচিতি পেয়ে যায় শিশুশিল্পী শরিফুল। পরিচিতি বেড়ে যাওয়ায় কাজ পেতে শুরু করে ছোট পর্দা, বড় পর্দা এবং বিজ্ঞাপনচিত্রে। খুদে এই শিল্পীর কিছু সংলাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল। শরিফুল ইসলামকে এখন ভাবনায় ফেলে দিয়েছে করোনাভাইরাস। কারণ অভিনয়ের উপার্জন দিয়ে তাঁকে সংসার চালাতে হয়। ছোট পর্দার ১৪টি সংগঠন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আজ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত শুটিং বন্ধ থাকবে।

শরিফুল ইসলামের রোজগারে চলে তাদের সংসার। ছবি: সংগৃহীত

করোনা পরিস্থিতির কারণে গতকাল থেকে শুটিং বন্ধের নির্দেশনা মেনে চলছেন সবাই। তাদের মধ্যে আছে শরিফুলও। শুটিং থেকে কিছুদিনের অবসর মিললেও ভালো নেই খুদে এই অভিনেতার মন। শরিফুল বলে, ‘অহন তো শুটিং নাই, কিতা যে অয় বুঝতাছি না। সবাই কাজ ক্যান্সেল করতাছে। আমাগো দোহানও অহন নাই। ক্যামনে চলমু!’ খতিব খামার বাড়িতে শরিফুলের বাবার একটি দোকান ছিল। বছরে তিন মাস চলতো সেটি। বাবা মারা যাওয়ার পর বড় ভাই আরিফুল সেই দোকান কিছুদিন চালিয়েছেন। কিন্তু এখন সেটি বন্ধ।

অভিনেত্রী বুবলির সঙ্গে শরিফুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

শরিফুলের বড় ভাই আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আব্বা একটা খাবারের দোকান চালাতেন। সেটা বছরে অল্প কিছু দিন চলত। আব্বা মারা যাওয়ার পর আমি সেই দোকান চালাতাম। কিন্তু এখন আর দোকান চালানোর সময় করতে পারি না। ছোট ভাই অভিনয় করে, তাঁকে সঙ্গে করে নিয়ে যাই, নিয়ে আসি। আমাদের সংসার শরিফুলের আয়ের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু করোনার কারণে অনেকেই শুটিং বন্ধ করছে।’

করোনা সতর্কতায় এখন নাটক, বিজ্ঞাপন এবং ছবির শুটিং বন্ধ। এই নিয়ম মানলে আর্থিক অনটনে পরবে শরিফুলের পরিবার। সে জানান, ‘আমগোরে তো সমস্যা অইবই, আমরা কি ধনী মানুষ?’ কতটুকু সমস্যা হবে জানতে চাইলে সে বলে, ‘এইডা আমার ভাই কইতে পারব।’ আরিফুল বলেন, ‘আমাদেরও তো বাঁচতে হবে। কেউ ডাকলে শুটিং করতে হবে। নইলে পরিবারের সবাই বিপদে পরে যাব।’

শরিফুল ইসলাম খুদে শিল্পী হিসেবে প্রায় সব ধরনের কাজ করে। ছবি: সংগৃহীত

শরিফুল দশম শ্রেণির ছাত্র। থাকে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার মণিপুরে। তারা ছয় ভাই, দুই বোন। হোতাপাড়ার খতিব খামারবাড়ি শুটিং হাউসে যখন তার বাবার দোকান ছিল, প্রায়ই অভিনয় করার লোক সংগ্রহ করে দিতেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই পালিয়ে দূর থেকে শুটিং দেখত শরিফুল। এভাবেই তার পরিচয় হয় চিত্রগ্রাহক রাশেদ জামানের সঙ্গে। তাঁর মাধ্যমে পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিমের সঙ্গে কাজের সুযোগ পায় শরিফুল। বেশ কয়টি কাজ করার পর অমিতাভ রেজা চৌধুরীর বিজ্ঞাপনচিত্র দিয়ে রাতারাতি পরিচিতি পায় সে। অমিতাভ রেজা ও রাশেদ জামান তাঁকে যেমন ভালোবাসেন, তেমনি অভিভাবকের দায়িত্বও পালন করেন।