যে কারণে আত্মহত্যা করেছেন মডেল সাদিয়া
বাবার সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে আত্মহত্যা করেছেন উঠতি মডেল সাদিয়া ইসলাম নাজ। গত মঙ্গলবার ভোররাত পৌনে চারটায় বসুন্ধরা আবাসিকের বাসা থেকে পুলিশ তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। তাঁর বয়স হয়েছিল ২১ বছর। এই ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। আজ বুধবার দিবাগত রাতে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
১৮ জানুয়ারি রাত ৩টার পর ৯৯৯-এর মাধ্যমে ভাটারা থানায় একটি ফোন আসে। অপর প্রান্ত থেকে মনিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, রাত ১১টা থেকে তাঁর মেয়েকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মুক্তারুজ্জান জানান, সাদিয়া বসুন্ধরার বাসায় একাই থাকতেন। কোনো কারণে বাবা-মেয়ের মধ্যে মনোমালিন্য হয়েছিল। ঘটনা শুনে পুলিশ দ্রুত সাদিয়ার বাসায় যায়। সেখানে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে বাবার অনুমতি নিয়ে রাত পৌনে চারটায় ঘরের তালা ভাঙে তারা। ঢুকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে সাদিয়ার লাশ। রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়। গতকাল ময়নাতদন্ত শেষে মেয়ের লাশ খুলনায় নিয়ে যান মনিরুল ইসলাম।
এই ঘটনায় গতকাল ভাটারা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন সাদিয়ার বাবা মনিরুল ইসলাম। সেখানে উল্লেখ করা হয়, ১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় পারিবারিক বিষয় নিয়ে সাদিয়ার সঙ্গে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। অভিমান ভাঙাতে রাত ১১টা পর্যন্ত মেয়ের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেন মনিরুল ইসলাম। একপর্যায়ে মেয়ে বাবার ফোন কেটে দেন। ভাটারা থানার একজন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের বরাত দিয়ে জানান, পারিবারিক কিছু বিষয় মেয়েকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন তাঁর বাবা। মেয়ে নিজ সিদ্ধান্তে অটল ছিল। কিছুটা জেদ ছিল তাঁর। একসময় সে রাগ করে ফোন কেটে দেয়। তখন মনিরুল ইসলাম আবারও মেয়েকে ফোন করেন। সাদিয়া ফোন না ধরলে তিনি বাসার কেয়ারটেকারদের মাধ্যমে জানতে পারেন, সাদিয়ার রুমের দরজায় তালা দেওয়া। তখন তিনি জরুরি ফোন কল সেবার মাধ্যমে পুলিশের সহযোগিতা নেন।’
সাদিয়ার সহকর্মী মডেল বারিশা হক জানান, করোনার মধ্যে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে সাদিয়াকে। মাসের পর মাস তাঁর কোনো কাজ ছিল না। তাঁর মা-বাবার বিচ্ছেদের কারণে সে কিছুটা ভেঙে পড়েছিল। শোকবিহ্বল বারিশা বলেন, ‘সাদিয়ার যোগ্যতার মূল্যায়ন হয়নি। করোনায় তাঁর রোজগার একদম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সে সময় কীভাবে তাঁর দিন কেটেছে, শোবিজের কেউ সে খবর নেননি। বেঁচে থাকতে একটু খোঁজখবর নিলে সাদিয়ার মতো তরুণেরা এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পেতেন।’
তিন বছর আগে স্থিরচিত্রের মডেলিংয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন সাদিয়া। নিয়মিত টিকটক ভিডিও বানাতেন তিনি। সম্প্রতি নীলিমা নামে একটি ব্র্যান্ডের ফটোশুটে অংশ নিয়েছিলেন। সাদিয়ারা দুই ভাই-বোন। তাঁদের বাবা আরেকটি বিয়ে করে খুলনায় বসবাস করতেন।
আরও পড়ুন
-
মানুষের হাত-পা কেটে নিজেই ‘অস্ত্রোপচার’ করতেন মিল্টন সমাদ্দার: ডিবি
-
শুক্রবার ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি, ভুল করে ফেসবুকে পোস্ট হয়েছিল: মন্ত্রণালয়
-
ইজারার পুরো টাকা না দিয়েই গাবতলী পশুর হাট দখল, হাসিল আদায় ডিপজলের
-
মানব পাচার মামলায় চার দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার
-
শিক্ষার্থী বিক্ষোভে বাম–ডান দুই দিক দিয়েই বিপদে বাইডেন