Thank you for trying Sticky AMP!!

পালিত ভাই সম্পত্তি পেতে চাপ দিচ্ছে

পাঠকের প্রশ্ন বিভাগে আইনগত সমস্যা নিয়ে নানা রকমের প্রশ্ন পাঠিয়েছেন পাঠকেরা। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মিতি সানজানা নির্বাচিত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন এবার।

মিতি সানজানা

প্রশ্ন: আমি আমার মা–বাবার একমাত্র মেয়ে। বয়স ২৬ বছর। আমার একজন পালক ভাই আছে। বয়স ২৮। তাকে আইনগতভাবে গ্রহণ করা হয়নি। তার টাকা ও সম্পদের প্রতি অনেক লোভ। আজ পর্যন্ত বিভিন্নভাবে ব‍্যবসা করার নাম করে, বিভিন্ন জায়গায় ধার করে সে প্রায় ৩০ লাখ টাকা শেষ করেছে। সে জাল ভোটার আইডি কার্ডও বানিয়েছে। যখন সে জানতে পারে যে আমার বাবা বাড়ি ও জায়গা আমার নামে দানপত্র করে দিয়েছেন, তখন ও সম্পত্তির ভাগের জন‍্য চাপ দিচ্ছে। আমার বাবাকে জোর করছে স্ট‍্যাম্পে সই করে ওর নামে নতুন করে দলিল করার জন্য।

আমার মা–বাবা বৃদ্ধ ও অসুস্থ। সম্পত্তি না দিলে আমাকে ও আমার মাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। তাকে ভবিষ্যতের জন‍্য আমার বাবা ২ কাঠা জায়গার ওপর বাড়ি করে দিতে চেয়েছিলেন। সে জন্য সে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে সেটা খরচ করে ফেলে। এখন সে জায়গা বিক্রি করার জন‍্য আমাকে সই করে ওর নামে করে দিতে বলছে। আমি চাই না জায়গা বিক্রি হোক। বসবাসের জন‍্য ওকে দিতে পারি। এখন তাকে আইনের সহায়তায় কীভাবে তার পাওনা বুঝিয়ে বাসা থেকে অন‍্যত্র পাঠাতে পারি? সে কি আমার বাবাকে জোর করে ভয় দেখিয়ে জাল ভোটার আইডির সহায়তায় সম্পত্তি নিজের নামে করতে পারবে? যদিও আমার নামে দানপত্রে আছে সে কি দাবি করে নিতে পারবে?

নুরেশা ইসলাম

উত্তর: মুসলিম আইনে দত্তক গ্রহণ করার কোনো বিধান নেই। মুসলিম আইনের বিধান বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য প্রযোজ্য। মুসলিম আইনে রক্তের সম্পর্কিত এবং বিয়ের মাধ্যমেই উত্তরাধিকার সৃষ্টি হয়, তা ছাড়া অন্য কোনোভাবে উত্তরাধিকার তৈরি হয় না। কাজেই আপনার পালক ভাইয়ের উত্তরাধিকারসূত্রে আপনার মা–বাবার সম্পত্তি পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

দানকে মুসলিম আইনে হেবা বলা হয়ে থাকে। কারও কাছ থেকে প্রতিদান বা বিনিময় ছাড়া কোনো কিছু নিঃশর্তে গ্রহণ করাকে দান বলা হয়। সম্পত্তি হস্তান্তর আইন ১৮৮২ (টিপিঅ্যাক্ট)–এর ১২২ ধারা অনুসারে সম্পত্তি দাতা কোনো ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সম্পত্তি হস্তান্তর করলে এবং গ্রহীতা বা গ্রহীতার পক্ষে কোনো ব্যক্তি ওই সম্পত্তি গ্রহণ করলে তাকে দান বলা হয়। দান বা হেবা বৈধ হতে হলে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়—

• দাতা কর্তৃক দানের ঘোষণা প্রদান।

• গ্রহীতা তাঁর পক্ষ থেকে দান গ্রহণ করা বা স্বীকার করা।

• দাতা কর্তৃক গ্রহীতাকে দানকৃত সম্পত্তির দখল প্রদান।

হেবা করার পদ্ধতি শুধু মুসলমানদের জন্য প্রযোজ্য। প্রতিটি হেবা দান দলিলের জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত নির্দিষ্ট ফি জমা দিতে হবে। ২০০৫ সালের আগস্ট মাস থেকে হেবা করা সম্পত্তির দলিল রেজিস্ট্রি করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আপনার বাবা যদি আপনার নামে হেবা দলিল সম্পাদন এবং রেজিস্ট্রি করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে আপনার পালক ভাইয়ের এ বিষয়ে কোনো বাধা দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি হুমকি দিলে এ বিষয়ে থানায় তাঁর নামে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন। তা ছাড়া জাল ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ করা যাবে। আপনার বা আপনার পিতা–মাতার সম্পত্তির ওপর তাঁর কোনো দাবি নেই।

পাঠকের প্রশ্ন, বিশেষজ্ঞের উত্তর

পাঠকের প্রশ্ন পাঠানো যাবে ই–মেইলে, ডাকে এবং প্র অধুনার ফেসবুক পেজের ইনবক্সে। ই–মেইল ঠিকানা: adhuna@prothomalo.com (সাবজেক্ট হিসেবে লিখুন ‘পাঠকের প্রশ্ন’)

ডাক ঠিকানা: প্র অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫। (খামের ওপর লিখুন ‘পাঠকের প্রশ্ন’) ফেসবুক পেজ: fb.com/Adhuna.PA