Thank you for trying Sticky AMP!!

মার্কিন প্রেসিডেন্টের বেতন কত

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি ন্যান্সি রিগান একবার বলেছিলেন, ‘প্রেসিডেন্টরা কখনো ছুটি পান না। তাঁদের চোখের সামনে কেবল দৃশ্যপটের বদল হয়।’

জো বাইডেন

সব কিছু ঠিক থাকলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন জো বাইডেন। তাতে করে কতখানি ‘দৃশ্যপটের বদল’ হবে, সেটা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু নতুন এই ‘চাকরিতে’ যোগ দিয়ে কী কী সুযোগ–সুবিধা ভোগ করবেন জো বাইডেন? হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা হিসেবে মোটা অংকের বেতন পাবেন। দিন–রাত ২৪ ঘণ্টা তাঁর সঙ্গে থাকবেন নিরাপত্তারক্ষী, উপদেষ্টা, চিকিৎসক। কিন্তু এ কথা সত্য—এই চাকরিতে ছুটি নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ৫ প্রেসিডেন্ট এক ফ্রেমে—বাঁ থেকে জর্জ ডব্লিউ বুশ সিনিয়র, বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ, বিল ক্লিনটন ও জিমি কার্টার

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, দায়িত্বে থাকাকালীন প্রেসিডেন্টদের একটি নির্দিষ্ট অংকের বেতন দেওয়ার নিয়ম আছে। ইউএস কোডের অনুচ্ছেদ ৩ বলছে, একজন প্রেসিডেন্ট বছরে বেতন হিসেবে ৪ লাখ ডলার (অর্থাৎ মাসে ২৮ লাখ টাকার বেশি) পাবেন। এ ছাড়া প্রতি বছর আনুষঙ্গিক ব্যায় হিসেবে ৫০ হাজার ডলার (৪২ লাখ টাকার বেশি), বেড়ানোর জন্য ১ লাখ ডলার (প্রায় ৮৫ লাখ টাকা) এবং বিনোদন ভাতা হিসেবে বছরে ১৯ হাজার মার্কিন ডলার (১৬ লাখ টাকার বেশি) পান একজন প্রেসিডেন্ট। দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরও মার্কিন প্রেসিডেন্টরা সরকারি তহবিল থেকে নির্দিষ্ট অংকের বেতন পান। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যবিমার মতো কিছু সুবিধা অব্যাহত থাকে। তবে প্রেসিডেন্ট ও তাঁর পরিবারের সাজসজ্জার জন্য আলাদা করে কোনো অর্থ বরাদ্দ থাকে না। কোনো ডিজাইনার যদি পোশাক উপহার দিতে চান, সাধারণত তা গ্রহণ করার নিয়ম নেই। প্রেসিডেন্ট যদি উপহার গ্রহণ করেনও, একবার পরার পরই সেটি জাতীয় সংগ্রহশালায় জমা দিয়ে দিতে হয়।

হোয়াইট হাউসের এক্সিকিউটিভ রেসিডেন্সে হ্যালোউইন উদ্‌যাপন

নিয়ম অনুযায়ী, হোয়াইট হাউসের নতুন বাসিন্দা হিসেবে বাড়িটি নতুন করে সাজানোর জন্য এক লাখ ডলার (প্রায় ৮৫ লাখ টাকা) পাবেন জো বাইডেন। তবে প্রচলিত আছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সরকারি তহবিল থেকে এই টাকা নেননি। নিজস্ব তহবিল থেকেই তিনি হোয়াইট হাউস নতুন করে সাজিয়েছিলেন। খরচ করেছিলেন প্রায় ১৫ লাখ ডলার। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের সাজসজ্জা, আসবাবপত্র কেনাকাটা, ইত্যাদি বাবদ খরচ করেছিলেন প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ ডলার। তবে তিনি এই টাকা সরকারি তহবিল থেকে নিয়েছিলেন কি না, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

Also Read: হোয়াইট হাউসের ভেতরটা কেমন?

মার্কিন প্রেসিডেন্টদের জীবনযাপন সম্পর্কে জেনে নিন আরও কিছু তথ্য

১৭৯১ সালে হোয়াইট হাউসের জন্য জায়গাটি পছন্দ করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন
  • গত ১৫ বছর ধরে হোয়াইট হাউসের প্রধান শেফের দায়িত্বে আছেন ফিলিপিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন নারী ক্রিস্টেটা কমারফোর্ড। প্রেসিডেন্টের পরিবারের প্রতিদিনের খাবারের পরিকল্পনা তিনিই করেন। এ ছাড়া শুধু পেস্ট্রি তৈরির জন্য আলাদা একজন শেফ আছেন। তাঁর নাম সুসান মরিসন।

  • হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্টের পরিবার ছাড়াও গৃহকর্মী, রান্নায় সহায়তাকারী, প্লাম্বার, মালিসহ প্রায় ১০০ জন থাকেন। শুধু বাড়িটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্যই বছরে খরচ হয় ৪০ লাখ ডলার।

  • হোয়াইট হাউসে সিনেমা দেখার জন্য ৫১ আসনবিশিষ্ট একটি ছোটখাটো হোম থিয়েটার আছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর এই হোম থিয়েটারে প্রথম যে সিনেমাটি দেখা হয়েছিল, তার নাম ফাইন্ডিং ডোরি। এটি একটি অ্যানিমেশন সিনেমা।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাড়ি ‘দ্য বিস্ট’
  • প্রেসিডেন্টের সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য তৈরি থাকে একটি বোয়িং ৭৪৭–২০০বি উড়োজাহাজ। সেটির ভেতরে প্রায় ৪ হাজার বর্গফুট জায়গা আছে। আছে চিকিৎসাকক্ষ, প্রেসিডেন্টের জন্য নিরিবিলি সময় কাটানোর জায়গা, সেই সঙ্গে অন্তত ১০০ জন খাওয়ানোর ব্যবস্থা। সিএনএন–এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, উড়োজাহাজটি এক ঘণ্টার জন্য ব্যবহার করলে খরচ হয় প্রায় ২ লাখ ডলার।

  • বর্তমান প্রেসিডেন্ট যে গাড়ি ব্যবহার করেন, সেটিকে বলা হয় ‘দ্য বিস্ট’। বুলেট ও বোমারোধী এই গাড়ি সর্বক্ষণ গোয়েন্দা সংস্থার নজরে থাকে। গাড়িটির ওজন একটি ট্যাংকের সমান।

  • পেনশন হিসেবে একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট যা পান, সেটিও কম নয়। ২০১৬ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ বাৎসরিক পেনশন হিসেবে পেয়েছিলেন ২ লাখ ৫ হাজার ৭০০ ডলার (প্রায় ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা)। ২০১৭ সালে বারাক ওবামা পেয়েছিলেন ২ লাখ ৭ হাজার ৮০০ ডলার (প্রায় ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা)।

সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার

Also Read: মার্কিন প্রেসিডেন্টদের যত গাড়ি