Thank you for trying Sticky AMP!!

অপরাজেয়

>

সৈয়দ শামসুল হক। ছবি: প্রথম আলো

বাংলা সাহিত্যের সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। কাব্য, গদ্য, নাটক, গল্প-উপন্যাস, চিত্রনাট্য, গান—লেখালেখির সব শাখায় শক্তিশালী লেখনী তাঁর। বাবা সৈয়দ শামসুল হককে নিয়ে লিখেছেন তাঁর ছেলে দ্বিতীয় সৈয়দ–হক এটি এবারের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন।

দ্বিতীয় সৈয়দ–হক। ছবি: খালেদ সরকার

পাশাপাশি সৈয়দ শামসুল হকের লেখা মঞ্চনাটক, চিত্রনাট্য ও গানে কাজ করার অনুভূতি লিখেছেন ফেরদৌসী মজুমদার, কবরী এন্ড্রু কিশোর

জীবনে এমন একটি সময় ছিল, যখন নিজেকে আসলেই ভাবতাম অপরাজেয়। অনুভূতিটি আমার সঙ্গে বড়জোর ১০ বছর বয়স পর্যন্ত ছিল। তারপর থেকে বুঝতে পা​ির যে পরাজয় বলে একটি জিনিস আছে। খেলায় হারজিত আছে, পরীক্ষায় ফেল করা আছে, এমনকি আমাদের গুলশানের বাড়ির পেয়ারাগাছের মাথায় পেয়ারাটি পাড়তে গিয়ে পা ফসকে পড়ে যাওয়াটাও একধরনের পরাজয়। যখন পরবর্তী সময়ে ও-লেভেল পাস করে নটর ডেম কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ার জন্য ভর্তি হই, তখন দেখি জীবনের সবচেয়ে কঠিন এবং একই সঙ্গে মধুর পরাজয় ওত পেতে অপেক্ষায় রয়েছে সুন্দরী একটি বান্ধবী খুঁজে পাওয়াতে।

কিন্তু ১০ বছর বয়সে আমার জন্য কোনো সুন্দরী ভবিষ্যতে ওত পেতে আছে কি নেই, খুব একটি ভাবার সময় আমার ছিল না। শূন্য থেকে অন্ততপক্ষে ১০ পর্যন্ত ছিল আমার জন্য সোনালি বিজয়ের দীর্ঘ একটি টানা সময়। গ্যাদা বাচ্চা থাকতে আমাদের প্রথম বিজয়ের স্বাদ আসে যখন আমরা যেখানে-সেখানে আমাদের কাজ করে ফেলতে পারি এবং আমাদের বাবা-মায়েরা তখন সেটিকে সাফ করতে বাধ্য হন। তারপর যখন যা ইচ্ছা খেতে পাওয়া। শুধু চাইলেই হয়। ভোররাতে লুচি দিয়ে আলুর দম? ‘কোনো সমস্যা নেই, অবশ্যই খাবে’। এক ক্লান্ত বাবা বলে ওঠেন আমাদের এবং উৎসাহের সঙ্গে আমাদের জন্য খাবার প্রস্তুত করার কাজে লেগে যান। তারপর স্কুলে গিয়ে সামান্য একটু ছবি আঁকাআঁকি, খেলাধুলা করার পর বিকেলে বাসায় এসে ইচ্ছা করলেই কার্টুন দেখা, অথবা বই পড়া, কিংবা পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে হইহই-রইরই করা। এগুলো সব একধরনের জয়। এবং এটিই হলো জয় কথাটির মূল অর্থ, আমাদের কাছে মনের ইচ্ছাটিকে পূরণ করতে পারা।

লন্ডনে থাকাকালে একবার সাত বছর বয়সে দ্য রেস্কুয়ারস নামে একটি কার্টুন দেখেছিলাম। সেটি আমার ওপর খুব প্রভাব ফেলেছিল। সেখানে দুটি ইঁদুর, একটি আলবাট্রস পাখির পিঠে চড়ে এদিক-ওদিক যায়; পাখিটি তাদের কাছে একটি প্লেনের মতো। দেখে আমার খুব ইচ্ছা করতে থাকে, আমিও সেই পাখিটির মতো আকাশে উড়ব, হয়তোবা পিঠে দু-একটি ইঁদুরকে চড়িয়ে নিয়ে। তাই উৎসাহের সঙ্গে কল্পনাটিকে বাস্তবতায় পরিণত করার কাজে লেগে যাই। রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পাওয়া একটি পুরোনো কার্টন জোগাড় করে সেটি থেকে কেটে অপরিস্ফুট দুটি ডানা আগে বের করি। তারপর সেগুলোর সঙ্গে হাত বাঁধার ব্যবস্থা করি—উড়তে গেলে তো আর ডানা খুলে পড়লে চলবে না, তাই। শেষমেশ একসময় আমাদের বাসার দোতলায় ছোট ঘরটির মধ্যে বিকেলের পর বিকেল পেটের ওপর উপুড় হয়ে হাতে ডানা বেঁধে চেষ্টা করি আলবাট্রসের মতো উড়তে। বলা বাহুল্য, আমার সেই উদ্যোগটিতে আমি তখন সফল হইনি। কিন্তু এ কথা এখানে বলার কারণটি হচ্ছে যে আমি তখন, আমার সাত বছর বয়সের মনে, পরাজয় মানিনি। উড়তে পারিনি তো কী হয়েছে? চেষ্টা করায় প্রচুর আনন্দ তো পেয়েছি। নিজের কল্পনার রাজ্যে তো কিছুক্ষণ আপন মনে ঘুরে বেড়াতে পেরেছি। এটিই তো বড় কথা। তা ছাড়া সামনের বার যদি কেউ আমাকে বলে একটি কাগজের কার্টন কেটে দুটি ডানা বানাতে যা দিয়ে আকাশে ওড়া বিন্দুমাত্র সম্ভব হবে না, আমি মুহূর্তের মধ্যে তা তৈরি করে দিতে পারব। এখানে তো কত ধরনের ছোট-বড় জয় রয়েছে। পরাজয় আবার কিসের?

কিছুদিন আগেই একজনকে বলছিলাম আমার ছোটবেলায় মৃত্যুর প্রতি অনুভূতির কথা। সমকাল-এর ফিচার সম্পাদক, নিজেও একজন সাহিত্যিক, মাহবুব আজিজকে। দেখি, তিনি ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালের ছয়তলায় এসে হাজির হয়েছেন বাবার সঙ্গে দেখা করতে। তাঁর সঙ্গে দেখা হলে আমার যা হয়, বেশির ভাগ আলাপই আমাদের মধ্যে হয় সাহিত্য নিয়ে। সেখানে কথায় কথায় ওঠে একটি বাচ্চার চোখে মৃত্যুকে অনুভব করার প্রসঙ্গ। এত দিন আমি যেটিকে অতি স্বাভাবিকভাবে ধরে নিয়েছিলাম, সব বাচ্চারই এমন হয় মনে করে, তিনি শুনে একটু অবাকই হন। এমনও হতে পারে, যাঁরা পরবর্তী জীবনে লেখালেখি করেন, তাঁরা মানুষের অস্তিত্ব নিয়ে ছোটকাল থেকে একটু বেশিই মাথা ঘামিয়ে থাকেন। অন্ততপক্ষে আমার ক্ষেত্রে মনে হয় তা-ই ছিল।

হাসপাতালে বাবার কেবিনের বাইরে বসে আমরা এসব আলাপ করছি। আমরা দুজনে নিজেরাও নিজ নিজ সন্তানের বাবা, তাই এমন একটি পরিবেশে, এমন এক পরিস্থিতিতে আমরা কথা বলি বাচ্চাদের মৃত্যুবোধ নিয়ে

চিরতরুণ সৈয়দ শামসুল হক। ছবি: প্রথম আলো

১০ বছর বয়সে, আমরা সদ্য উঠেছি আমাদের গুলশানের বাসায়। এখনকার মতো সেই বিশাল বাসাটি তখনো তোলা হয়নি, তার বদলে ছিল বিশাল একটি মাঠ। তার এক কোণে থাকার দুটি ঘর। এক বিঘা জমির ওপর আমাদের বাসা, কিন্তু সেই বয়সে আমার কাছে সেটিকে মনে হতো যেন ছোটখাটো একটি গ্রাম। আর সেই গ্রামের বাসিন্দা আমার কাছে ছিল মানুষজন ছাড়া চারখানা ছাগল, দুটি হাঁস, চারটি মুরগি আর বড় আকারের একখানা মোরগ, তার ওপরেও দুটি চীনা মুরগি, একটি বেজি এবং একটি চৌবাচ্চাভর্তি তেলাপিয়া মাছ। সবই আমার রাখা। প্রত্যেকেরই নাম দিয়েছিলাম। থেকে থেকে এদের মধ্যে দু-একটি প্রাণী মারাও যায়। কখনোবা প্রাকৃতিক কারণে, কখনোবা অঘটনে। যেমন গাড়ির চাকার তলায় পড়ে একসময় বেজিটা গেল পিষে। আরেকবার আকাশ থেকে মস্ত বড় ​িশল পড়াতে আমার সবচেয়ে প্রিয় মুরগি মারা গেল। এভাবেই ছিল আমার মৃত্যুর সঙ্গে প্রথম পরিচয়।
কিন্তু চোখে দেখলেই যে এমন একটি বিমূর্ত জিনিসকে চেনা যায়, তা তো নয়। তাই মনে পড়ে যে তখন আমি প্রায়ই ভাবতাম এই মৃত্যু ব্যাপারটি আসলেই কী। কী যে একটি রহস্য! ভাবি, আমি তো এখানেই আছি। এই ‘আছি’ অবস্থা থেকে আমি আবার ‘নাই’ হয়ে যেতে পারি কীভাবে? দেকার্ত বলেছেন, ‘আই থিংক, দেয়ার​েফার আই অ্যাম,’। এমন ধরনের গভীর চিন্তাভাবনা তো আমার পক্ষে তখন সম্ভব ছিল না। কিন্তু মনে হয় যেন সেই ধরনেরই একটি ধাঁধার সম্মুখে আমি এসে পড়লাম। বিহ্বল হয়ে এ কথা নিয়ে চিন্তা করি দিনের পর দিন। একবার ভাবি, তাহলে বোধ হয় মৃত্যু অন্য মানুষের, অন্য জীবজন্তুর হয়, আমার নিশ্চয়ই এই জিনিসটি হবে না। হতে পারে না কারণ—আরে! আমি তো এখানেই আছি! এ কথা অনুমান করার পর আমার ভেতরে সবার প্রতি খুব করুণা জাগে। মায়া লাগে তাদের দেখে। কেননা, একদিন তো তারা আর থাকবে না। অথচ আমি থেকে যাব। সেই সঙ্গে একটু ভয়ও হতে থাকে। চারদিকে সবাই, সবকিছু যদি একে একে মরে যায়, তাহলে তো এককালে কেউই আর থাকবে না; সম্পূর্ণ একা হয়ে যাব আমি।

বাবা, মা ও বোনের সঙ্গে দ্বিতীয় সৈয়দ–হক


একবার যখন মনের মধ্যে নিজেকে একা হয়ে যাওয়ার দৃশ্যটি গেঁথে যায়, সেই থেকেই মনে হয় আমার নিজেকে পরাজিত বোধ করার প্রথম স্বাদ। মৃত্যু সম্পর্কে এমন একটি ধারণা ১০ বছরের পর খুব বেশি দিন ধরে রাখাটি একটু গর্দভের মতো দেখায়, কিন্তু মনে হয় সেই সময়ের মধ্যেই ব্যাপারটি আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। খুব সম্ভব বাবারই কাছ থেকে মৃত্যুর আসল ব্যাখ্যা পেয়ে যাই; তিনি আমার কাছ থেকে এসব ধরনের প্রশ্ন শুনে অভ্যস্ত অনেক দিন থেকে। ও, আচ্ছা। তাহলে আমারও একদিন মরে যেতে হবে। কিন্তু সেটিকে এই পৃথিবী ‘ছেড়ে দেওয়া’ আবার কেন বলে? মৃতদেহকে তো মাটির নিচে পুঁতে দেওয়া হয়, স্পেসশি​েপ করে তো আর মহাশূন্যে পাঠানো হয় না! একটি প্রশ্নের উত্তরে তার জায়গায় আরও দশটি প্রশ্ন জাগে আমার মনে। একটি চঞ্চল মনের বাচ্চার কাছ থেকে তো এটিই আশা করা যায়। কিন্তু এর মধ্যে আমার মনের শব্দতালিকায় পরাজয় কথাটি যোগ হয়। এবং তা যোগ হয় এ কথা ভেবে যে জীবন এমন একটি খেলা, যেটিতে আমাদের সবাইকেই একদিন পরাজয় স্বীকার করতে হবে।
কিন্তু তাহলে আমার সেই আলবাট্রসের ডানার কথাটি এখানে কীভাবে খাপ খায়? আমি তো সেই একই মানুষ, যে ছোটবেলায় কাগজের কার্টন কেটে ডানা বানিয়ে উড়ে যেতে বিফল হওয়ায় সেটিকে তবু একটি অতি মূল্যবান কৃতিত্ব বলে মনে করেছিলাম। কত কিছু শিখেছিলাম, শিক্ষা অর্জনেই কতখানি আনন্দ পেয়েছিলাম, শেষ পর্যন্ত আকাশে ডানা মেলে উড়তে পারিনি তো তাতে এমন কী হলো? ইউনাইটেড হাসপাতালের বেঞ্চিতে বসে মাহবুব আজিজকে আমি এত বিস্তারিতভাবে কিছুই বলি না, এত গভীরে, কিন্তু আমাদের সেই আলাপের মধ্য দিয়ে এই লেখাটির উৎসাহ পাই। ভাবি, যেই মুহূর্তে আমি মেনে নেব যে কাগজের তৈরি ডানা দিয়ে আমি উড়তে পারব না, ঠিক সেই মুহূর্তেই আমি সেটিকে বানানোর আনন্দ, সেটিকে নিয়ে খেলা করার আনন্দ, সেটিকে নিয়ে কল্পনা করার আনন্দ আসলেই উপলব্ধি করতে পারব। এবং একটু বুদ্ধি খাটালেই এই ধারণাটিকে আমরা দূরদর্শন করে সমগ্র জীবনটিকে দেখতে পাই। জীবনের উদ্দেশ্য কখনোই মরণ হতে পারে না, যদিও সেটি তার সর্বশেষ গন্তব্যস্থান। জীবনের খেলাটিকে কীভাবে খেলি, কীভাবে সেটিকে গঠন করি, তার থেকে কী শিক্ষা পাই, এসবই না জীবনের উদ্দেশ্য। এ কথা ভেবে, ৬০৪ নম্বর কেবিনের দিকে মুখ ফিরিয়ে বাবার কথা চিন্তা করে অতটা খারাপ আর লাগে না।

কিন্তু এ কথার অর্থ এই নয় যে আমরা জীবনে কখনো পরাজিত হব না। এর মানে নয় যে হেরে যাওয়াটি লজ্জা পাওয়ার কিছু; লু​েকাবার কিছু। জীবিত অবস্থাতেই আমার ব্যক্তিগত জীবনে মৃত্যু ঘটেছে একবার নয়, বহুবার। একেক সময় ভেবেছি যে আমি কিছুতেই আর উঠে দাঁড়াতে পারব না। অথচ দাঁড়িয়েছি। লোকের শত বিশ্বাস এবং ভ্রান্ত ধারণা সত্ত্বেও আমি উঠে দাঁড়িয়েছি বারের পর বার। এবং প্রতিটিবার, প্রতিটি পতন থেকে ওঠার সময় আমি পেয়েছি নতুন কোনো এক শিক্ষা। অস্তিত্বের গভীরতম গহ্বর থেকে নিজেকে টেনে বের করে কতবার মুখ তুলে চেয়েছি ঝলমলে সূর্যের দিকে, আর উল্লাসে আমার বুক ফেটে যেতে চেয়েছে এই ভেবে যে আমি এখনো বেঁচে আছি! এই বেঁচে ওঠাটাই আমার জয়। মরণ হতে পারে, হোক না আমার কাছে অনিবার্য, কিন্তু জীবনে যে আমি অপরাজেয়।

তাই, জীবনযাত্রাটি যেন নিজেকে আবিষ্কার ও পুনরাবিষ্কার করার সময়। বাচ্চাদের মতো হাঁটতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার সময়, আবারও হাসিমুখে উঠে দাঁড়ানোর। বাবা একটি কথা আজীবন আমাকে বলে গেছেন বিপর্যয়ের মুখে, ‘দিস, টু, শ্যাল পাস,’ অর্থাৎ ‘এটাও কেটে যাবে।’ কোনো কিছুই স্থায়ী নয়—না সুখ, না দুঃখ, না বেদনা, না কষ্ট, না আনন্দ। ক্ষণিকের মধ্যে এগুলো স্রোতের মতো আসে এবং চলে যায় আমাদের জীবনে এক এক করে। এই একই কথা আমি বাবাকে স্মরণ করিয়ে দিই সেদিন ইউনাইটেড হাসপাতালে তাঁর বিছানার গোড়ায় দাঁড়িয়ে। একটি পরিপূরণ জীবন যেন শিশুর মতো হাসতে হাসতে উঠে বসার পালা, ‘আমাকে তোরা কতবার ফেলবি, ফেল’ বলে। মরণে তো আমাদের পরাজয় নয়, পরাজয় আমাদের বেঁচে থাকতে মাথা নিচু করে হার মেনে নেওয়াতে। এককালে বাবা তাঁর ছেলেকে যে শিক্ষা প্রদান করেন, সেই একই শিক্ষা ছেলেটি আবার বাবাকে মনে করিয়ে দেয়। এটিই জীবনের অফুরন্ত বৃত্ত। তাই, ফিরে যায় আবার ‘জয়’ শব্দটির প্রকৃত অর্থে মনের ইচ্ছাটিকে পূরণ করা। এবং মনে রাখি যে বাঙালি চিত্তে ‘জয়’ কথাটি কত নিখুঁতভাবে বোনা রয়েছে। জয় আমাদের রক্তে। একাত্তরের অসংখ্য যোদ্ধা এবং মা ও সন্তানের ভেসে যাওয়া রক্তে লেখা সেই কথা। আমরা এত সহজে হার মানি না। আমরা অপরাজেয়।

* দ্বিতীয় সৈয়দ হকের মেঘ ও বাবার কিছু কথা বইবের হবে আগামী একুশে ফেব্রুয়ারি বইমেলা ২০১৭–তে।