Thank you for trying Sticky AMP!!

অপ্রতিরোধ্য মিলি নাইট

মিলি নাইট

বরফে স্কিইং করার দৃশ্য কল্পনা করুন তো। শুভ্র বরফের পাহাড় বেয়ে শোঁ শোঁ করে ছুটে চলা। একটু এদিক-সেদিক হলেই বরফের চাইয়ের ওপর সংঘর্ষের সম্ভাবনা। এমন পরিবেশে চোখ-কান খোলা না রেখে কি উপায় আছে? মিলি নাইট এমনই এক পরিবেশে এ বছরের বিশ্ব প্যারা আলপাইন স্কিইং চ্যাম্পিয়নশিপে স্কিইং ট্র্যাকে নেমেছিলেন। সবকিছুই দারুণ চলছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গতি বাড়িয়ে যাচ্ছিলেন ট্র্যাকের শেষ প্রান্তে। প্রতি ঘণ্টায় ১১৫ কিলোমিটার গতিতে ছুটে চলা মিলিকে থামায় কে? সবচেয়ে কম সময়ে ট্র্যাকে দৌড় শেষ করেন তিনি, দৌড়ে প্রথম! স্কিইংয়ের শেষ সীমানা পাড়ি দেওয়ার পরই বরফের চাইয়ের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় তাঁর। নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরে পড়ে তাঁর, দর্শকের আনন্দধ্বনি বিষাদে পরিণত হয়। বরফের নিচে আংশিক চাপা পড়েন তিনি। বেঁচে আছেন কি না, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যায় দর্শকেরা। সামান্য সময় পরই হাত তুলে দাঁড়ান মিলি, বরফ কি দমাতে পারে তাঁকে?

মিলির এই দুর্ঘটনা ক্রীড়া বিশ্বে আলোড়ন তৈরি করে। আর আলোড়ন তৈরি করবে না কেন? ব্লাইন্ড স্কিং দৌড়বিদ মিলি নাইট, যার দৃশ্যশক্তি মাত্র ৫ ভাগ, প্রায় দৃষ্টিশক্তিহীন এই নারী। ৫ বছর থেকে চোখে তেমন কিছুই দেখেন না। নিজের অদম্য ইচ্ছা আর মা-বাবার উৎসাহে দৃষ্টিশক্তির দুর্বলতা সত্ত্বেও স্কিইং শিখেছেন। ২০১২ সালে ১২ বছর বয়সে লন্ডনের প্যারা-অলিম্পিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার আগ্রহ তৈরি হয় তাঁর। মিলি সেই আগ্রহের জোরেই ২০১৪ সালের সোচি শীতকালীন প্যারা-অলিম্পিকে সর্বকনিষ্ঠ অলিম্পিয়ান হিসেবে অংশ নেন। অপ্রতিরোধ্য মিলি শুধু খেলেনই না, অদম্য মিলি মাত্র ৫ শতাংশ দৃষ্টিশক্তি নিয়েই ২০১৬ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ছেন। চোখের আলো না থাকা দমাতে পারেনি মিলির এগিয়ে চলা।

বিবিসি অবলম্বনে জাহিদ হোসাইন খান