Thank you for trying Sticky AMP!!

আনা ফ্রাঙ্কের শহরে গণহত্যার প্রথম স্মৃতিসৌধ

আমস্টারডামে আনা ফ্রাঙ্ক জাদুঘরে তার লেখা ডায়েরির পাতা দেখছেন এক দর্শনার্থী। ছবি: রয়টার্স

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অমানবিক বর্বরতার মধ্যে মানুষের টিকে থাকার লড়াইয়ের যেসব ছবি সারা দুনিয়ার মানুষের মনে গেঁথে আছে, তার মধ্যে অন্যতম আমস্টারডামে বসে লেখা আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি। সংখ্যার অনুপাতেও পশ্চিম ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইহুদিদের দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে নেদারল্যান্ডসেই। কিন্তু দুনিয়ার ভয়ংকরতম হত্যাযজ্ঞগুলোর অন্যতম এই ইহুদিনিধনের নিমিত্তে পরিচালিত নির্মম গণহত্যায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দেশটিতে কোনো স্মৃতিসৌধ ছিল না। তবে, সম্প্রতি দেশটিতে নািস বাহিনীর বর্বরতার শিকার লক্ষাধিক মানুষের স্মরণে এ ধরনের প্রথম স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
‘হলোকাস্ট নেমস মনুমেন্ট’ বা ‘হলোকাস্ট নামফলক’ নামের এ স্মৃতিসৌধ নির্মিত হবে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামেই। এ শহরেই জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এখানে লুকিয়ে থেকেই ডায়েরি লিখেছিল জার্মান বংশোদ্ভূত ইহুদি কিশোরী আনা ফ্রাঙ্ক। ইহুদি আমেরিকান স্থপতি ডেনিয়েলে লিবেসকিন্ড এ স্মৃতিসৌধটির নকশা করছেন। নেদারল্যান্ডসে নািস বাহিনীর দখলদারির সময়ে বন্দিশিবিরগুলোতে পাঠিয়ে দেওয়া এবং শেষ পর্যন্ত হত্যাযজ্ঞের শিকার হওয়া এক লাখ দুই হাজার ইহুদির নাম খচিত থাকবে এ সৌধটিতে। ২০১৫ সালের মধ্যে এর নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন আমস্টারডামের নগর কর্তৃপক্ষ।

‘ডাচ অশভিত্স কমিটি’র চেয়ারম্যান জ্যাক গ্রিশাভের জানান, সংখ্যানুপাতের হিসাবে পশ্চিম ইউরোপের মধ্যে নেদারল্যান্ডস থেকেই সবচেয়ে বেশি ইহুদিকে দেশান্তরে বাধ্য করা হয়েছিল। কিন্তু এখানে তাঁদের সম্মানার্থে কোনো সৌধ নেই। তিনি বলেন, ‘তাঁদের নাম বাতাসে মিলিয়ে গেছে। এখন ওই পরিবারগুলোর জন্য একটা জায়গা হবে, যেখানে গিয়ে তাঁরা একটা নাম খুঁজে পাবেন, সেটা স্পর্শ করতে পারবেন।’

ডাচ অশভিত্স কমিটি জানিয়েছে, ইউরোপের অন্যান্য শহরের স্মৃতি সৌধগুলোর মতোই আমস্টারডামের হলোকাস্ট নামফলকেও ইহুদিদের সঙ্গে নািস বন্দিশিবিরগুলোতে পাঠিয়ে দেওয়া রোমা ও স্নিতি জনগোষ্ঠীর মানুষদের নামও খচিত থাকবে।

নেদারল্যান্ডস থেকে দেশান্তরে বাধ্য হওয়া হাজারো পরিবারের মধ্যে ছিল আনা ফ্রাঙ্কের পরিবারও। ১৯৪২ সালের জুন থেকে ১৯৪৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত আমস্টারডামের একটা খালপাড়ের বাড়িতে লুকিয়ে থেকে ডায়েরিতে নািস-নিপীড়ন আর নিজেদের বন্দিদশার অভিজ্ঞতার কথা লিখে রেখেছিল ওই কিশোরী। ধরা পড়ার পর অন্যদের সঙ্গে আনা ফ্রাঙ্ককে পাঠিয়ে দেওয়া হয় জার্মানির একটি বন্দিশিবিরে। সেখানেই মাত্র ১৫ বছর বয়সে মারা যায় আনা।