Thank you for trying Sticky AMP!!

আপনিও বইমেলায় খণ্ডকালীন কাজ করতে পারেন

নতুন-নতুন বই সম্পর্কে জানা, লেখক-পাঠকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা, আর মাস শেষে কিছু সম্মানী তো আছেই। সব মিলিয়ে বইমেলায় কাজ করাটা সত্যিই অনেক আনন্দের। বইমেলায় খণ্ডকালীন বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা এভাবেই বললেন স্বাগতা সাহা। তিনি বিগত বছরে বিভিন্ন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। সুযোগ পেলে এ বছরও বইমেলায় কাজ করতে চান। স্বাগতার মতো চাইলে আপনিও বইমেলায় খণ্ডকালীন বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতে পারেন।

প্রতিবছরের মতো এবারও আগামী মাস থেকে বাংলা একাডেমি আয়োজন করতে যাচ্ছে মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলার। এ মেলায় দেশি-বিদেশি পাঠকেরা ছুটে আসেন এই বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে।

মেলা চলাকালে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় সামাল দিতে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের কাছে তাদের বই বিক্রয় ও উপস্থাপন করার জন্য নিয়মিত কর্মীর পাশাপাশি অভিজ্ঞ ও অনভিজ্ঞ খণ্ডকালীন বিক্রয়কর্মী বা বিক্রয় সহযোগী নিয়োগ করে। মেলায় বিক্রয়কর্মীর পাশাপাশি কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ক্যাশিয়ার, জনসংযোগ কর্মকর্তা ইত্যাদি পদেও জনবল নিয়ে থাকে। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ করা হয়। বেশির ভাগই কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে নেওয়া হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বইমেলায় কাজের জন্য এরই মধ্যে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো সিভি সংগ্রহ করা শুরু করেছে। বেশির ভাগ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানই ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে লোক নিয়ে থাকে। তাই খোঁজখবর নিয়ে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আপনিও পেয়ে যেতে পারেন বইমেলায় খণ্ডকালীন এক মাসের চাকরি।

বইমেলার খণ্ডকালীন বিক্রয়কর্মী নিয়োগ–প্রক্রিয়ার নানা বিষয়ে কথা হলো প্রথমা প্রকাশনের উপব্যবস্থাপক মো. জাকির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসের এই বইমেলায় আমাদের বই পাঠকদের কাছে প্রদর্শন ও বিক্রয়ের জন্য আমরা এক মাসের জন্য বিক্রয় সহযোগী নিয়োগ করি। ইতিমধ্যে আমরা সিভি সংগ্রহ করা শুরু করেছি। সিভি যাচাই-বাছাই করে মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে এ বছরও প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন বিক্রয় সহযোগী নেওয়া হবে। অভিজ্ঞদের পাশাপাশি আমরা নতুনদেরও কাজ করার সুযোগ দিই।’

বইমেলায় বিক্রয়কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে তরুণেরাই বেশি অগ্রাধিকার পান। শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখা হয় সর্বনিম্ন এইচএসসি পাস। সংশ্লিষ্টরা জানান, মৌখিক পরীক্ষায় শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি সাধারণত আবেদনকারীর কাজ করার আগ্রহ, উপস্থিত বুদ্ধি, উপস্থাপনার কৌশল, যোগাযোগের দক্ষতা, স্মার্টনেস ইত্যাদি বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। মেলা চলাকালে ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারলে এই বইমেলা ছাড়াও সারা বছর বিভিন্ন বইমেলায় তাঁদের কাজের সুযোগ দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের দক্ষতা ও যোগ্যতা বিবেচনা করে স্থায়ীভাবেও নিয়োগ করা হয়।

বিদ্যাপ্রকাশের ব্যবস্থাপক মো. শাহজাহান বলেন, ‘আমরা যাঁদের পূর্বে বইমেলায় কাজের অভিজ্ঞতা থাকে এমন তরুণদেরই অগ্রাধিকার দিই। পাশাপাশি আমরা নতুনদেরও নিয়োগ করি। বইমেলায় খণ্ডকালীন বিক্রয়কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে এমনিতে পত্রপত্রিকায় তেমন একটা বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় না, তবে ব্যক্তিগত যোগাযোগ, প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোর মাধ্যমে বইমেলায় কাজের জন্য প্রার্থীদের কাছ থেকে সিভি চাওয়া হয়।’

বইমেলার কাজের ধরন অন্যান্য যেকোনো কাজের চেয়ে একটু আলাদা। প্রতিদিন বইমেলা শুরু হয় বেলা ৩টা থেকে, চলে রাত ৮টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। তবে ছুটির দিনগুলোতে মেলা বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে চলে রাত ৮টা পর্যন্ত। মেলা চলাকালে বিক্রয় সহযোগীদের পুরোটা সময়ই স্টলে থাকতে হয়। দোকানের বইগুলো ক্রেতার কাছে সুন্দরভাবে প্রদর্শন করতে হয়। সেই সঙ্গে পাঠক-ক্রেতাদের চাহিদা ও পছন্দের দিকে বাড়তি খেয়াল রাখতে হয়। সংশ্লিষ্ট প্রকাশনা সংস্থার বই, লেখক ও পাঠকদের সম্পর্কে বাড়তি জ্ঞান রাখতে হয়।

মেলায় খণ্ডকালীন ভিত্তিতে সুযোগ-সুবিধার ব্যাপারে কয়েকটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, মেলায় প্রত্যেক বিক্রয় সহযোগী প্রতিষ্ঠানভেদে এই এক মাসে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা সম্মানী হিসেবে আয় করতে পারেন। এ ছাড়া দুপুরের খাবার, সন্ধ্যার নাশতাসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে।