Thank you for trying Sticky AMP!!

আলো ছড়ানো একটি পাঠাগার

পটিয়া গণপাঠাগারে প্রতিদিন পড়তে আসে ​বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। পাঠকদের একটি বড় অংশই পটিয়ার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পাঠকদের পদচারণে মুখর থাকে এই পাঠাগার। ছবিটি গত ২৮ সেপ্টেম্বর তোলা l প্রথম আলো

২৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার। বেলা দেড়টা। পটিয়া ডাকবাংলোর মোড়ে অবস্থিত গণপাঠাগারের বিভিন্ন আলমারিতে বই সাজানো রয়েছে। তবে পাঠকক্ষে একজন গ্রন্থাগারিক ছাড়া কোনো পাঠক ছিল না। কিন্তু এই অবস্থা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। কয়েক মিনিটের মধ্যে দেখা গেল একদল শিক্ষার্থী প্রবেশ করছে পাঠাগারে। তাদের পরপরই এল অন্য শ্রেণি-পেশার পাঠকেরাও।

সাহিত্য, ইতিহাস, জীবনীগ্রন্থ, বিশ্বকোষসহ নানা বইয়ে সমৃদ্ধ পটিয়ার এই গণপাঠাগার এভাবেই নিভৃতে আলো ছড়াচ্ছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নানা বয়সী পাঠকদের পদচারণে মুখর থাকে পাঠাগারের পাঠকক্ষ।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ঘেঁষে পটিয়া শিশুপার্কের এক কোণে গণপাঠাগারটির অবস্থান। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চলছে এই পাঠাগারের কার্যক্রম। একতলাবিশিষ্ট এই পাঠাগারে রয়েছে একটি পাঠকক্ষ ও একটি কার্যালয়। পাঠাগারের সহকারী গ্রন্থাগারিক আবদুল হক বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিকের দায়িত্ব পালন করছেন।

ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক আবদুল হক জানান, ১৯৭৭ সালে ডাকবাংলোর দক্ষিণ কোণে টিনের ছাউনিযুক্ত ভবনে এই পাঠাগারের কার্যক্রম শুরু হয়। ওই ভবনের পাশেই ১৯৯২ সালে পাঠাগারের একতলা পাকা ভবন নির্মাণ করে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। ৬০ ফুট দীর্ঘ ও ৩২ ফুট প্রস্থের ভবনটিতে একটি পাঠকক্ষ ও একটি কার্যালয় রয়েছে। পত্রিকা ও সাময়িকী ছাড়াও এই পাঠাগারে ১৪টি আলমারিতে ৩ হাজার ৩০০টি বই রয়েছে। মূল পাঠকক্ষে একসঙ্গে ৩০-৩৫ জন পাঠকের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া পাঠাগারের কার্যালয়েও বসে বই পড়া যায়।

আবদুল হক আরও জানান, পাঠাগার থেকে পাঠকদের সদস্যপদ দেওয়ার বিধান রাখা হয়নি। বই বাড়িতে নিয়ে যাওয়া যায় না। সবাই এখানে এসেই বই ও পত্রিকা পড়েন। প্রচুর পাঠ্যবই ও রেফারেন্স থাকায় প্রচুর শিক্ষার্থী আসে এখানে।

গত মঙ্গলবার পাঠাগারে গেলে কথা হয় নানা বয়সী পাঠকের সঙ্গে। পটিয়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আবিদ হোসেনও এসেছিল পাঠাগারে পড়াশোনা করতে। সে বলে, এখানে নিয়মিতই আসা হয়। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি প্রচুর গল্পের বই আছে এখানে। এসব বই পড়ে খুব ভালো সময় কাটে। একই কথা বলল এ এস রাহাত আলী উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র আবেদুজ্জামান ও মোহাম্মদ রাতুল।

 এই পাঠাগারের নিয়মিত পাঠক বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, গাছগাছালি শোভিত পাঠাগারের নিরিবিলি পরিবেশ খুব ভালো লাগে তাঁর। এই পরিবেশে বইয়ের গভীরে ডুবে যাওয়া সহজ।

 পাঠাগারে দুটি জাতীয় এবং একটি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকা রাখা হয়। পাঠাগারের সংগ্রহে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শামসুর রহমান, শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সার, এম আর আক্তার মুকুলসহ অনেক অনেক খ্যাতনামা সাহিত্যিকের বই। রয়েছে মাধ্যমিক থেকে স্নাতক শ্রেণির পাঠ্যবই।

ভারপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক আবদুল হক বলেন, প্রতিদিন গড়ে কয়েক শ পাঠকের সমাগম হয় পাঠাগারে। পাঠাগারটি নিয়মিত খোলা থাকে। তবে একজন লোক দিয়ে পাঠাগারের কার্যক্রম চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁকে।