Thank you for trying Sticky AMP!!

এ যেন এক টুকরো স্বস্তি

বাণিজ্য মেলায় সুপারমমের স্টল থেকে সেবা নিচ্ছেন একজন। ছবি: অধুনা

বাণিজ্য মেলার রূপ সকালে এক রকম, দুপুরে আরেক রকম আর সন্ধ্যায় আরেক। সন্ধ্যার সময়টাতে বেশি ভালো লাগে। ঢোকার মুখ থেকে শুরু করে প্রতিটি প্যাভিলিয়নের আলোকসজ্জা ও সাজ সুন্দরভাবে ফুটে ওঠে তখন। প্রতিবছরই বাণিজ্য মেলায় যাই। হরেক রকমের অফার আর পসরা চোখে পড়ে। ব্যতিক্রম হয়নি এবারও।

১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ঘুরতে গেলাম। সারিবদ্ধ লাইনে টিকিট কেটে ঢুকে গেলাম। কোথাও দেখলাম অনেকে জটলা বেঁধে গল্প করছেন। প্রত্যেকে তাঁদের চাহিদামতো দোকানে ঢুকছেন, জিনিস দরদাম করছেন। কেউ কেউ আমার মতো ঘুরতেই এসেছেন। এ প্যাভিলিয়ন থেকে সে প্যাভিলিয়নে পা চলছে তাঁদের। ঘুরতে ঘুরতেই হঠাৎ একটি বিষয় খেয়াল করলাম, একদিকে চোখ আটকে গেল। যাঁদের সঙ্গে ছোট বাচ্চা আছে, বিশেষ করে ৪ বছর বয়সের নিচের শিশু সেই অভিভাবকেরা মেলার প্রবেশমুখ থেকে বাঁদিকের একটি স্টলে যাচ্ছেন। খানিকক্ষণ তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলাম বিষয়টি কী। টিভির স্টল, আসবাবের দোকান, পোশাক, তৈজসপত্র, যা–ই হোক না কেন সবাই যাচ্ছেন সুপারমমের স্টলে। পরিষ্কার করে বুঝতে সেখানে গেলাম, সেই স্টলের সামনে দেখা মিলল মিরপুরের বাসিন্দা সাদিয়া রহমানের। তিনি তাঁর দেড় বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে প্রথমবারের মতো বাণিজ্য মেলায় এসেছেন। প্রয়োজনীয় কেনাকাটা শেষ, কিন্তু মেয়েকে নির্দিষ্ট সময় পর পর বুকের দুধ খাওয়াতে হয়। তাঁর কাছ থেকে জানা গেল, অনেকক্ষণ ধরে একটু জায়গা খুঁজছেন মেয়েকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য। তাঁকে একজন দেখিয়ে দিয়েছেন সুপারমমের স্টল। বলেছেন, সেখানে সন্তানকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা আছে, এমনকি ডায়াপারও পরিবর্তন করা যাবে।

সেই কথামতো সাদিয়া রহমান সুপারমম ‘বেবি অ্যান্ড মাদার কেয়ার জোন’–এ আসেন। দেখতে পান, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের সুপারমম স্টলে বাচ্চাকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো, ডায়াপার পরিবর্তন এবং মা ও শিশুদের জন্য ফ্রি ডাক্তারি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

শুধু সাদিয়া রহমানের সমস্যাই নয়, মেলায় আসা মা ও শিশুদের এসব সমস্যার সমাধান দিচ্ছেন তাঁরা। সাদিয়া রহমান যখন বের হন, তাঁর চোখেমুখে স্বস্তি। মনে হলো, সুপারমম বাণিজ্য মেলায় মায়েদের কাছে এক টুকরো স্বস্তি।

বাণিজ্য মেলায় এভাবে সাজানো হয়েছে সুপারমমকে

 মেলায় সুপারমম

বাণিজ্য মেলায় ব্রেস্ট ফিডিং এবং ডায়াপার বদলানোর কোনো জায়গা থাকে না। শুধু বাণিজ্য মেলা নয়, দেশের জনবহুল এমন সব জায়গায় মায়েদের বুকের দুধ খাওয়ানো এবং ডায়াপার পরিবর্তন নিয়ে খুব ঝামেলায় পড়তে হয়। এসব জায়গায় মায়েরা কোনো সুবিধা পান না। তাই এমন জায়গায় মা বাচ্চাকে নিয়ে গেলে খুবই অস্থিরতার মধ্যে থাকেন। চার-পাঁচ বছর আগে এমনও দেখা গেছে, মেলার খোলা জায়গায় বুকের দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। ডায়াপার পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়েছে, তখনো খোলা জায়গায় করতে হয়েছে। এই অসুবিধা দেখে একটা সমাধান খোঁজার চেষ্টা করল সুপারমম। সেখান থেকে মূলত সুপারমম নিয়ে মেলায় আসার ভাবনা আসে। মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্র্যান্ড ম্যানেজার ফয়সাল বিন কামালের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘প্রথম এ চিন্তা করে সুপারমম মেলায় আসে ২০১৫ সালে। প্রথম বছরে খুবই ভালো সাড়া পাই। অনেকে আমাদের এ সার্ভিসের খুবই প্রশংসা করেছে। এ বছর পঞ্চমবারের মতো মেলায় আছি। বাচ্চাকে নিয়ে মা-বাবা মেলায় এলে এ দুটো বিষয় নিয়ে কোনো চিন্তা যেন করতে না হয়, সে সুবিধাটাই আমরা বাবা-মাকে করে দিচ্ছি।’

 বাণিজ্য মেলায় কী কী সেবা

এবার বাণিজ্য মেলায় তিনটি সেবা নিয়ে হাজির হয়েছে সুপারমম। তিনটিই ফ্রি সেবা। ১. ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার ২. ডায়াপার চেঞ্জিং কর্নার এবং ৩. মা ও শিশুদের জন্য ফ্রি ডাক্তারি পরামর্শ। এ সেবা মেলার প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে প্রত্যেক মাকে একটি করে সেনোরা স্যানিটারি ন্যাপকিন ও সুপারমম ডায়াপার বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে। এই স্টলে কেউ যদি ডায়াপার পরিবর্তন করতে আসে, তাহলে মায়ের ডায়াপার নিয়ে আসা লাগবে না।

বাণিজ্য মেলায় চলছে পরামর্শ সেবা

 সুপারমমের শুরু

২০০৯ সালের দিকে মা ও শিশুর যেকোনো তথ্য পরামর্শ ও সেবার জন্য একটা টোল ফ্রি নম্বর (০৮০০০৮৮৮০০০) চালু করে সুপারমম। এটা বর্তমানেও চালু রয়েছে। এ নম্বরে ফোন করে মা এবং তাঁর বাচ্চার যেকোনো স্বাস্থ্য–সংক্রান্ত পরামর্শ নিতে পারতেন। এতে খুব ভালো সাড়া পান তাঁরা। তখন অনেক পরিবার থেকে জানানো হয়, আপনারা যখন মা ও শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন, তাহলে কেন মা ও শিশুর জন্য প্রয়োজনে এমন পণ্য তৈরি করছেন না?

সুপারমম এমন একটা সমাধান নিয়ে আসে, যাতে বাবা-মায়ের কোনো চিন্তা না করতে হয়। সুপারমম ডায়াপার ব্যবহার করার পর বাচ্চা আরামে থাকবে আর বাচ্চা আরামে থাকলে মা–ও আরামে থাকেন। তাই সুপারমমের স্লোগান হলো ‘হ্যাপি বেবি, হ্যাপি মম’।

 যেমন সাড়া মিলছে

ফয়সাল বিন কামাল বলেন, ‘আমরা এখানে খুবই ভালো সাড়া পাচ্ছি। বাবা-মা মেলার মধ্যে আমাদের স্টলটি খুঁজে নিচ্ছেন। প্রয়োজনের জন্য একবার হলেও ঘুরে যাচ্ছেন।’

সত্যিই মনের মতো কেনাকাটার জন্য যাঁরা শিশুদের নিয়ে মেলায় আসেন, সবার একটি আস্থা ও স্বস্তির জায়গা যেন সুপারমম স্টল।