Thank you for trying Sticky AMP!!

কঠিন পথে সাদিয়ার লড়াই

সাদিয়া আফরিন। ছবি: সংগৃহীত

সাদিয়া আফরিনের ছোটবেলা থেকেই ছবি আর সিনেমার সঙ্গে খুব ভাব। তাই শেষ পর্যন্ত তাঁর নামের আগে যোগ হয়েছে সিনেমাটোগ্রাফার। তবে পরিবারের সবার ইচ্ছা ছিল সাদিয়ার ‘ভালো’ কোনো চাকরি বা পিএইচডির মতো বড় বড় ডিগ্রি থাকবে তাঁর নামের পাশে। সমাজও কিন্তু সাদিয়ার এই সিনেমাটোগ্রাফার পেশাটাকে সহজে মেনে নিতে চায় না। তাই সুযোগ পেলেই চারপাশের মানুষজন কথা শুনিয়ে দেয়।

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক আর উচ্চমাধ্যমিকের পাট চুকিয়ে সাদিয়া নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ করেন। ২০১২ সালে ফটোগ্রাফি শেখার প্রতিষ্ঠান পাঠশালা থেকে একটা কোর্স করেন। সেই বছরই তিনি আর তাঁর এক বন্ধু মিলে চেকমেট নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। পরিবারের সবার ইচ্ছায় একটা বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ নেন। তারপর একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতেও কাজ করেন।

আড়াই বছর চাকরি করে সাদিয়া নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন জোগাড় করেন। তারপর ২০১৫ সালে চাকরি ছেড়ে দেন। চাকরির জমানো অর্থ বিনিয়োগ করেন নিজের প্রতিষ্ঠানে। সেইচেকমেটে এখন ২৫ জন চাকরি করছেন। তবে যাঁরা চাকরি করছেন, তাঁদের সবাই পুরুষ। অফিসে তিনিই একমাত্র নারী।

চলতি বছরে সাদিয়া পাঠশালা থেকেই সিনেমাটোগ্রাফির ওপর কোর্স করেন। ফেসবুকেই চেকেমেট ইভেন্টসের অনুসারী সংখ্যা প্রায় সাত লাখ। সাদিয়া চেকমেটের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেকমেট ইভেন্টের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সাদিয়া বললেন, চলতি বছরেই তিনি তাঁর দল নিয়ে ইফতার নিয়ে একটা প্রামাণ্যচিত্র বানাচ্ছিলেন। পুরান ঢাকার চকবাজারে কাজ। কিন্তু একজন নারী ক্যামেরা, ট্রাইপড নিয়ে ভিডিও করছেন, সেটাকে ভালো চোখে দেখেননি অনেকেই। সম্প্রতি আশুরার চিত্রধারণ করতে গিয়েও একই রকম অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন তিনি।

সাদিয়া বললেন, তিনি জানতেন এ পথে চলা এত সহজ হবে না। তিনি আশাও করেননি যে মানুষ তাঁর কাজকে সাদরে গ্রহণ করবে। সেই মানসিক প্রস্তুতি তাঁর শুরু থেকেই ছিল। তাই অবাক হননি বা বিরক্তিও প্রকাশ করেননি। শুধু নিজ গতিতে এগিয়ে চলেছেন বলেই আজ তিনি নারী উদ্যোক্তা হতে পেরেছেন।

সাদিয়া বললেন, ‘যে মেয়ে বা নারী এ পেশায় আসতে চান, তাঁদের অভিভাবকদের বলতে চাই, সিনেমাটোগ্রাফি খুবই টেকনিক্যাল একটা কাজ। এ জন্য প্রথমে সঠিক প্রস্তুতি আর প্রশিক্ষণ দরকার। অর্থের প্রয়োজন। সেই সহযোগিতা পরিবার থেকেই দেওয়া হোক। মেয়ের বিয়ের জন্য তো কত বাজেট থাকে। তার থেকেই নাহয় কিছুটা দিয়ে সাহায্য করল পরিবার।’