Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনার সময় শিশুর হৃদ্রোগে সতর্কতা

ছোটদেরও হৃদ্‌রোগ হয়। আর যারা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত, তাদের করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকিও বেশি। এদিকে সতর্কতার অংশ হিসেবে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত শিশুদের এ সময় চিকিৎসার জন্য কিংবা নিয়মিত ফলোআপের জন্য চিকিৎসকের কাছে নেওয়াও যাচ্ছে না। কাজেই এই পরিস্থিতিতে ভালো থাকতে হলে কিছু বিষয়ে সতর্কতা দরকার।

করোনাভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামক। বারবার সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, অকারণে বাড়ির বাইরে না যাওয়া—এসব কিছু যেন শিশুরা ঠিকভাবে পালন করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিশুদের সময়মতো টিকা দিন। বাড়িতে তৈরি সুষম পুষ্টিকর খাবার দিন। যেকোনো বয়সী শিশুর জ্বর বা অন্য কোনো উপসর্গ দেখা দিলেই সতর্ক হতে হবে। শিশুদের করোনার সংক্রমণের পর কাওয়াসাকি ডিজিজ নামে নতুন একধরনের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। এর উপসর্গগুলো হলো:

• জ্বরের মাত্রা ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইট থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট

• হাত-পায়ে লাল দানা বা ছোপ ছোপ রক্ত জমাট বাঁধা

• হাতের বা পায়ের তালুর চামড়া উঠে যাওয়া

• শ্বাসকষ্ট

• বমি, পাতলা পায়খানা, পেটে ব্যথা

• ছোট শিশুদের শরীরের রঙ পরিবর্তন, অস্থিরতা

• গলার দুপাশে ছোট ছোট গুটির মতো দেখা যেতে পারে

কাওয়াসাকি ডিজিজে সারা শরীরের রক্তনালিতে প্রদাহের কারণে হৃদ্‌যন্ত্র, শ্বাসযন্ত্র, কিডনি, লিভার সবকিছুই খুব অল্প সময়ের মধ্যে অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে। হার্ট ফেইলিওর হয়ে শিশু মারাও যেতে পারে। তবে সময়মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হলে ও সঠিক চিকিৎসা পেলে এ সমস্যা সেরে যায়।

শিশুদের মধ্যে যাদের হৃদ্‌যন্ত্রে জন্মগত ছিদ্র আছে এবং ওষুধ সেবন করছে, তাদের বিষয়ে শিশু হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে টেলিমেডিসিনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। জরুরিভিত্তিতে বা চিকিৎসক দেখা করতে বললে দূরত্ব বজায় রেখে এবং সঠিকভাবে মাস্ক পরে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব। তবে শিশুর সঙ্গে দু–তিনজন হাসপাতালে না গিয়ে একজন সুস্থ ব্যক্তি গেলেই ভালো।

করোনার এ সময়ও অনেক হাসপাতালে সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করে শিশুদের হৃদ্‌রোগে ইমারজেন্সি ডিভাইস বসানো, বেলুন দিয়ে সংকুচিত ভালভ বা রক্তনালী প্রসারণ অথবা প্রয়োজনীয় ছিদ্র তৈরি করা অথবা অস্ত্রোপচারসহ যাবতীয় জরুরি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাই নবজাতক বা অন্য যেকোনো বয়সী শিশুর হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যায় অবহেলা করবেন না।

যেসব শিশুর হৃদ্‌যন্ত্রে কৃত্রিম শান্ট লাগানো আছে অথবা যারা ডাইউরেটিক খাচ্ছে, তাদের পানি শূন্যতা যেন না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। পাতলা পায়খানা বা বমি হলে অবশ্যই হাসপাতালে যেতে হবে।

লেখক: কনসালটেন্ট, পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি, এভারকেয়ার হসপিটাল, ঢাকা