Thank you for trying Sticky AMP!!

খুব আপন কিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে

>

হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলাসহ দেশের সাম্প্রতিক জঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে ভাবেন তরুণেরাও। দেশ–বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া এমন কয়েকজন তরুণ লিখেছেন তাঁদের ভাবনা

গত বছরের জুলাই মাস। সামার ক্লাস চলছে। আমার শিক্ষক অধ্যাপক রবার্ট ক্লাস শেষে অপেক্ষা করতে বললেন। ঘটনা কী? কোনো অ্যাসাইনমেন্ট বাকি পড়ল নাকি? লেকচারে মনোযোগ হারিয়ে সেটাই ভাবতে থাকলাম। ওই সেমিস্টারে আমি আবার তাঁর সহকারী হিসিবেও কাজ করছিলাম। ভাবলাম, হয়তো কোনো কাজ বুঝিয়ে দেবেন। ক্লাস শেষে গম্ভীর মুখে বললেন, ‘আর ইউ ফিলিং অলরাইট?’

প্রশ্নের ধরনে একটু অবাক হলাম। আমার প্রশ্নবোধক অভিব্যক্তি দেখে তিনি কম্পিউটারের মনিটর ঘুরিয়ে আমার দিকে রাখলেন। ‘ক্যাফে অ্যাটাক ইন ঢাকা, আননোন নম্বর অব হস্টেজ।’ আমার মনে হলো, কেউ আমার হৃৎপিণ্ড হাতে নিয়ে শূন্যে ছুড়ে দিয়েছে। অধ্যাপক কিছু বলে যাচ্ছেন, কিন্তু আমি নিজের অস্বস্তি অনুভূতি আর প্রিয়জনদের মুখ ছাড়া কিছুই ভাবতে পারছি না।

দেশের সবার নম্বরে ফোন করে যাচ্ছি। ক্লাস, প্র্যাকটিস ফ্লাইটের শিডিউল ভুলে বাসায় ফিরে গেলাম। দেশের টিভি চ্যানেলগুলো ঘুরছি, খবর দেখছি। সময় যাচ্ছে আর দুশ্চিন্তায় দম বন্ধ লাগছিল। ধীরে ধীরে ঘটনার ভয়াবহতা গণমাধ্যমে জানলাম। তখন শুধু মনে হচ্ছিল, খুব আপন কিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আমেরিকান বন্ধুদের নিয়ে দেশের গ্রামীণ জীবনযাপন দেখতে যাওয়ার কথা ছিল। সবার পরিবার থেকে মানা করে দেওয়া হলো।

এক বছর পেরিয়ে গেল। বিচ্ছিন্ন কিছু ভাবনা মাঝেমধ্যে মনে আসে। ফারাজের মতো বন্ধুত্ব ও জীবনবোধ আমাদের কজনের আছে? অসময়ে কেড়ে নেওয়া জীবনগুলোর পরিবারের মানুষ গলায় আটকে থাকা কান্না সামলে কখনো কি শান্ত হতে পারবে? কিংবা হাতের মুঠোয় পৃথিবীর সব তথ্যে ভরা লাইব্রেরি হাতড়ে বেড়ানোর সুযোগ পেয়ে আমরা পথভ্রষ্ট হচ্ছি কেন?

লেখক: শিক্ষার্থী, এমব্রি-রিডেল অ্যারোনটিক্যাল ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র