Thank you for trying Sticky AMP!!

গ্যাসের চুলা ব্যবহারে সতর্কতা

অলংকরণ: শামীম আহমেদ

গ্যাসের চুলার আগুনে দগ্ধ হওয়ার ঘটনা মাঝে মাঝেই খবরের শিরোনাম হয়। অসতর্কতার কারণে মূলত এমন দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। অসাবধানতাবশত এমন ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে একটু বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে।

এ বিষয় কথা হয় ঢাকার গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সম্পদ ব্যবস্থাপনা অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপক রিনাত ফৌজিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, সবার আগের কাজটি হলো গ্যাসের চুলা ব্যবহারের পর ভালোভাবে বন্ধ করা। খুবই সতর্কতার সঙ্গে বিষয়টা করতে হবে। ব্যবহারের পর চুলাটি বন্ধ করার সময় আরও বেশি যত্নবান হতে হবে। অনেকেই গ্যাসের চুলা বন্ধ করার সময় একটু আলসেমি করে থাকি। এ আলসেমিটা কোনোভাবেই করা যাবে না। গ্যাসের চুলার সামনে একটা নব থাকে আর পেছনে একটা চাবি থাকে। আমরা বেশির ভাগ সময় সামনের নবটা বন্ধ করেই রেখে দিই। পেছনের চাবিটা আর বন্ধ করি না। সামনের নব বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে পেছনের চাবিটাও বন্ধ করতে হবে। খোলার সময়ও একইভাবে আগে চাবিটা ঘুরিয়ে খুলব, এরপর নব খুলে তারপর আগুন জ্বালাব। এটাই হলো প্রথম এবং বড় কাজ গ্যাসের চুলা জ্বালানোর জন্য।

দেশলাইয়ের কাঠি রেডি করে তারপর গ্যাসের চুলা চালু করতে হবে। প্রথমে চুলাটা খুব বেশি জোরে চালু না করাই ভালো। এতে একসঙ্গে অনেক বেশি আগুন জ্বলে উঠতে পারে। প্রথমে দেশলাইয়ের কাঠি দিয়ে চুলাটা জ্বালিয়ে তারপর আস্তে আস্তে গ্যাসের পরিমাণটা বাড়াতে হবে। চুলা চালু করার পর দেশলাইয়ের কাঠি যেন খোঁজাখুঁজি না করতে হয়। চুলা চালু করার পর দেশলাই খুঁজলে অনেকটুকু গ্যাস বের হয়ে যেতে পারে। এতে যে সময়টুকু গ্যাস বের হবে তার ফলে দেশলাইয়ের কাঠি দিয়ে চুলায় আগুন ধরালে সমস্যা হতে পারে। বাইরে বের হওয়া; বাতাসে মিশে যাওয়া গ্যাসে আগুন লেগে যেতে পারে। তাই দেশলাইয়ের কাঠি হাতের কাছে আছে এটা নিশ্চিত হয়ে তারপর গ্যাসের চুলা খোলা উচিত। অনেক কারণেই চুলা বা গ্যাসের লাইন থেকে গ্যাস লিক হতে পারে। এ ক্ষেত্রে গ্যাস লিক হয়ে বের হলে রান্নাঘর থেকে গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যাবে। যদি মনে হয় গ্যাস লিক হচ্ছে, তাহলে নিজে ঠিক করতে না গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে মিস্ত্রিকে খবর দিতে হবে। একই সঙ্গে গ্যাসের চুলার চাবি বা নব ভালোভাবে বন্ধ করে ফেলতে হবে। অনেকেই আছে এমন পরিস্থিতিতে নিজেই চুলা ঠিক করতে যায়। আবার আঙুল দিয়ে দেখে কোথায় লিক আছে বা দেশলাইয়ের কাঠি জ্বালিয়ে দেখার চেষ্টা করে। লিক বা গ্যাসের চুলার কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিজে মিস্ত্রি না সেজে আসল মিস্ত্রিকেই খবর দেওয়া উচিত। এরপর মিস্ত্রি এসে যা করার তারাই করবে।

গ্যাসের চুলা পরিষ্কার করার বিষয়ে বলতে গিয়ে অধ্যাপক রিনাত ফৌজিয়া বলেন, বেশি দিন ব্যবহার করার ফলে অনেক সময় চুলায় ময়লা জমে যায়। চুলা পরিষ্কার করতে গেলে সতর্ক সহকারে করা উচিত। চুলার মাঝে চাকতির মতো একটা অংশ আছে। এটা ময়লা হয়ে গেলে ধুয়েমুছে পরিষ্কার করে রাখতে হয়। যদি চুলার মধ্যে ময়লা বা ডাস্ট জমা হয়, তাহলে চুলার আগুনের রংটা দেখলেই বুঝতে পারবেন। গ্যাসের চুলায় সাধারণত নীল রঙের আগুন বের হয়। ওই গোল চাকতির মতো অংশে যদি আটা-ময়দা বা অন্য কিছু জমে যায় তাহলে চুলার আগুনের রং লালচে হয়ে যায়। তাহলে বুঝতে হবে গোল অংশে ময়লা বা ডাস্ট জমেছে। এটা হলে চাকতির মতো ওই অংশটা খুলে সুন্দরভাবে পরিষ্কার করতে হবে। চাইলে চাকতিটাকে পানি দিয়ে ধুয়েও পরিষ্কার করা যায়। ময়লা জমে গ্যাসের চুলায় লাল আগুন বের হলে কিন্তু হাঁড়ির তলায় কালি পড়ে। নীল আগুন বের হলে হাঁড়িতে কিন্তু একটুও কালি পড়বে না।

রান্নাঘরে সব সময় অন্তত একটি জানালা খুলে রাখতে হবে। যত তাড়াই থাকুক না কেন, সকালে চুলায় আগুন জ্বালানোর আগে ঘরের দরজা জানালা খুলে দিয়ে বাতাস চলাচল করতে দিতে হবে। অনেক সময় গ্যাসভর্তি হয়ে থাকে ঘর, তখন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আর সিনথেটিক পোশাক পরে বিশেষ করে ওড়না বা শাড়ির আঁচল কোমরে পেঁচিয়ে রাখতে হবে। অসাবধানতা থেকে ঘটে দুর্ঘটনা।

শীতকাল বা বর্ষাকালে কেউ কেউ রান্নাঘরে কাপড় শুকায়, যা করা উচিত নয়। আর চুলার কাছে তেলজাতীয় দ্রব্য রাখা যাবে না।