Thank you for trying Sticky AMP!!

ঘরে বসে ধ্যান

ধ্যানের আসন দেখিয়েছেন যোগব্যায়াম প্রশিক্ষক বাপ্পা শান্তনু। ছবি: অধুনা

ধ্যান বা মেডিটেশনের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো আমাদের সজাগ করে তোলা। একজন মানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশ হলো—শরীর, মন, আত্মা, বিবেক, বুদ্ধি প্রভৃতি। এই প্রতিটি সত্তা সম্পর্কে সচেতন করে মনকে নিয়ন্ত্রণের একটা কৌশল হলো—ধ্যান।

মন উত্তেজিত হয় চিন্তা দ্বারা। আর এই চিন্তার বার্তা আসে আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয় (চোখ, নাক, কান, ত্বক ও জিহ্বা)। বিজ্ঞানীদের গবেষণামতে, ২৪ ঘণ্টায় মানুষের কমপক্ষে ৬০ হাজার বা তারও বেশি চিন্তা আসে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে আমরা কোন চিন্তাকে গুরুত্ব দেব। করোনাভাইরাসের কারণে অনেকেই নানা রকম খবর দেখে হচ্ছেন আতঙ্কিত।

ধ্যানের মাধ্যমে মন ও চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করা শেখাটা জরুরি। এর ফলে বিভিন্ন মানসিক সমস্যা যেমন অত্যধিক মানসিক চাপ, বিষণ্নতা, ঘুম না হওয়া, ভয় পাওয়া, হঠাৎ রেগে যাওয়া, আত্মবিশ্বাসের অভাবসহ মোটামুটি সব ধরনের মানসিক অসুস্থতা দূর করতে পারি।

কীভাবে করবেন?

ধ্যানের বেশ কিছু পদ্ধতি আছে। চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে যে পদ্ধতিটি বিশেষ উপকারী, তা নিচে বর্ণনা করা হলো।

ধ্যানের জন্য অবশ্যই উপযুক্ত পরিবেশ খুঁজে বা তৈরি করে নিতে হবে। বাড়িতে ধ্যান করার সময় এমন স্থান নির্বাচন করুন যেখানে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা আছে। ঘরের পরিবেশ শুদ্ধ করার জন্য নিমের তেল বা শুধু শর্ষের তেল দিয়ে প্রদীপ জ্বালাতে পারেন। এবার সুখাসন বা পদ্মাসনের মতো যেকোনো আসনে বসে যান। যে আসনেই বসুন না কেন মেরুদণ্ড সোজা রাখবেন। এবার চোখ বন্ধ করুন। মুখমণ্ডলের ত্বকে কোনো ভাঁজ রাখবেন না, ঠিক ঘুমাতে যাওয়ার সময় যেমন থাকে, ঠিক তেমন রাখবেন। এখন আমাদের কাজ হলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের মাথায় যেসব চিন্তা আসে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করা। চিন্তা ইচ্ছা করে করবেন না বা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা একদমই করবেন না। শুধু আপনার চিন্তাগুলো পর্যবেক্ষণ করুন। এভাবে প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে ধ্যান করতে বসবেন এবং কমপক্ষে ১০ মিনিট ধ্যান করুন। ১৫-৩০ দিন পরই ফল পেতে শুরু করবেন। ভেতর থেকে প্রশান্তি জাগবে। এখানে ভ্রস্তিকা প্রাণায়ামের মাধ্যমে ধ্যান দেখানো হলো।

ভস্ত্রিকার সময় কল্পনা বা চিন্তা

যখন শ্বাস নেবেন তখন কল্পনা করবেন প্রকৃতির সব ভালো শক্তি আপনার নাক দিয়ে প্রবেশ করে মস্তিষ্ক, হাত, পা সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে। এমন চিন্তা করা মোটেও ভুল নয়, কারণ নাক দিয়ে আমরা যে অক্সিজেন নিচ্ছি এটা অবশ্যই প্রকৃতির ধনাত্মক শক্তি। একটা পছন্দের খাবারের ঘ্রাণ যেভাবে নেন, ভস্ত্রিকা প্রাণায়ামে শ্বাসটাও ঠিক সেভাবে ভক্তিভরে নেবেন। মনে রাখবেন খাদ্যের চেয়েও অক্সিজেনের গুরুত্ব বেশি।

উপকারিতা

কোষবিভাজন ক্ষমতা বাড়ে, ফলে কোষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়তে থাকে। ফুসফুস সম্বন্ধীয় সব রোগ দূর করে। স্থূল শরীর, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, কোষ্ঠকাঠিন্যে বিশেষ উপকারী। সর্দি-কাশি, অ্যালার্জি, শ্বাসরোগ ইত্যাদি কফজাতীয় রোগ দূর করে। থাইরয়েড, টনসিল ইত্যাদি গলার রোগ দূর হয়। শরীরে শক্তির স্ফুরণ হতে থাকে।