Thank you for trying Sticky AMP!!

ঘরে বসে বুদ্ধির খেলা

খেলাচ্ছলে শিশুর বুদ্ধির বিকাশ হোক। ছবি: অধুনা

সব শিশুই খেলতে ভালোবাসে। প্রতিদিন একই রকম খেলা ও খেলনা নয়, নিত্যনতুন খেলনায় শিশুদের আগ্রহ প্রবল। নানান রং, মাপ ও আকৃতির খেলনা শিশু লুফে নেয় সহজে। কিন্তু সব ধরনের খেলনার মাধ্যমে শিশুর বুদ্ধির বা মস্তিষ্কের বিকাশ হয় না। তাই শিশুর মেধার ভিত মজবুত করতে খেলাধুলার মধ্য দিয়ে একটু একটু করে বুদ্ধিমান ও মেধাবী করে তুলতে হবে। আর সেটি করতে কিছু বিশেষ ধরনের খেলনা শিশুর সামনে উপস্থাপন করতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের পাজল, রুবিকস কিউব, অঙ্কের খেলা, লেগো, শব্দ তৈরি, এলোমেলো বর্ণ সাজিয়ে লেখা, লুকানো জিনিস খুঁজে বের করা, শব্দজটসহ বেশ কিছু খেলা শিশুদের বুদ্ধি বৃদ্ধি ও বিনোদন উভয়েরই জোগান দেবে। একা একা নয়, বরং পরিবারের অন্য সদস্যদের অংশগ্রহণে খেলাগুলো হয়ে ওঠে শিশুদের জন্য আরও বেশি আনন্দদায়ক। শিশুর বয়সের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ পাজল বা অন্য খেলা বেছে নিতে হবে। পাজল গেম শিশুর স্মৃতিশক্তি প্রখর করতে দারুণভাবে সহায়তা করে। কোনো একটি সংখ্যা, শব্দ অথবা সংকেত মনে রেখে তারপরের ধাপ শুরু করা, রং মনে রাখা, গেমের কোনো একটা অংশ মনে রাখা ইত্যাদির মাধ্যমে শিশু মনে রাখার ক্ষমতা অর্জন করে ফলে শিশুর স্মৃতিশক্তি প্রখর হতে থাকে। 

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু মনোবিজ্ঞানী মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘বুদ্ধিবৃত্তিক খেলার মাধ্যমে শিশুর সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ায়। মানসিক চাপ (স্ট্রেস) কমায়, মনোযোগ বাড়ায়, মস্তিষ্কের নিউরনের সংযোগ বাড়ায়। যার ফলে যেকোনো বিষয় শুনে মনে রাখার দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তা বাড়ে। শিশুকে নিয়ে খেলতে খেলতে এভাবে তার বুদ্ধি বাড়াতে পারেন।’

যেভাবে শুরু
এটা একই সঙ্গে খেলার পাশাপাশি শিশুকে পরবর্তী জীবনে ধৈর্যশীল হতে সাহায্য করে। তবে তিন বছর থেকে শিশুকে পাজল মেলাতে দিতে পারেন। খোরশেদ আলমের পরামর্শ হলো—

সাধারণত তিন থেকে চার টুকরা পাজল দিয়ে তিন বছর বয়সী শিশুদের থেকে এমন ধরনের খেলার অভ্যাস শুরু হতে পারে। চার বছর বয়স হলে ২০ থেকে ৩০ টুকরার পাজল মেলাতে দেওয়া যেতে পারে। তবে চার বছরের শিশুদের জন্য যে পাজল তার প্রতিটি খণ্ডের মাপ কমপক্ষে চার সেন্টিমিটার হতে হবে। বিভিন্ন মাপ ও রঙের ভিন্নতার কারণে শিশু যেমন সেসব দিয়ে খেলতে, বাড়িঘরসহ নানান আকৃতির জিনিসপত্র বানাতে আগ্রহী হয়, তেমনি দ্রুত রং ও আকৃতির নাম জানতে পারে। এ ধরনের খেলায় চাইলেই যখন–তখন সমাধান করা যায় না, বরং ধৈর্য ধরে প্রতিটি ধাপ এগোতে হয় এবং সবশেষে জয়ের দেখা মেলে। এখান থেকেই একটি শিশুর ধৈর্য চর্চা শুরু হয় এবং পরবর্তী সময়ে সে যে পেশাতেই যাক না কেন, এ ধৈর্য তার কাজে লাগবে। মোবাইল, টিভি, ট্যাবসহ সব ধরনের গেজেটের প্রতি আসক্তি কমাতে এ ধরনের পাজল গেমস খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

এবার শিশুর বুদ্ধিকে শাণিত করবে এমন ধরনের বিভিন্ন খেলনা কিনে দিন। তাতে যেমন তার মস্তিষ্ক পরিণত হবে, আবার সেই সঙ্গে শিশু খেলবেও খুব মজায়। আর যদি এমন খেলনা কিনে দিতে দু-চার দিন দেরি হয়, তবে নানান ধরনের ধাঁধা জিজ্ঞেস করেও ব্যস্ত রাখা যায় শিশুকে। না হলে ঘরের কিছু জিনিস উল্টেপাল্টে রেখে শিশুকে খুঁজে বের করে গুছিয়ে রাখতে বললেও হতে পারে ঘরে বসেই বুদ্ধি বাড়ানোর খেলা।