Thank you for trying Sticky AMP!!

চারে পা দিয়ে শৈশবেই চেরাগি আর্ট শো

দুই দিনব্যাপী চেরাগি আর্ট শোর আয়োজনে স্থান পাওয়া একটি স্থাপনাকর্ম

প্রায় ১০০ বছর আগে ১৯১৭ সালে ফরাসি শিল্পী মার্শেল দ্যুশাম্প একটি ইউরেনাল বা প্রস্রাবাধারকে শিল্প প্রদর্শনীতে হাজির করেছিলেন। এরপর থেকে কোনটি শিল্পকর্ম আর কোনটি নয়, এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিতর্ক প্রবলভাবেই চলছে। এতে প্রচলিত শিল্পের ধারণার প্রসার ঘটেছে। তৈরি হয়েছে স্থাপনা শিল্প, ভিডিও আর্ট, পারফরম্যান্স আর সাইট স্পেসিফিক বা স্থান সুনির্দিস্ট শিল্পকর্ম।
যোগ আর্ট স্পেস চার বছর আগে চট্টগ্রামের চেরাগি পাহাড়ের গলিতে সাইট স্পেসিফিক শিল্প প্রদর্শনী করেছিল সেই নবতর ধারণা মাথায় নিয়েই। লেখক, কবি, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাংবাদিকদের আড্ডাস্থল বলেই হয়তো মোমিন রোড এলাকার এই সরু গলিটি বেছে নেওয়া। ১৮ ডিসেম্বর ওই স্থানেই হয়ে গেল দুই দিনের পাবলিক আর্ট প্রদর্শনী। তবে পরপর চারবার এমন আয়োজনের পরও দর্শকদের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া কোথায়? এবারের আসরে অংশ নেওয়া শিল্পীদের কাজের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন না তুলেও বলা যায় শিল্পভাবনা বা দর্শন বিষয়ে সংলাপ সৃষ্টিতে ব্যর্থই হয়েছেন তাঁরা।
অথচ গত কয়েকবারের তুলনায় এবারের শিল্পীর তালিকা ছিল সমৃদ্ধ। যোগ দিয়েছেন ওয়াকিলুর রহমানের মতো খ্যাতিমান শিল্পীও। তবু কারও ছিটানো জলই যেন দর্শকের গায়ে লাগল না। হাঁসের মতো সেই জল ঝরে গেছে জামালখান আর চেরাগি পাহাড়ের মোড়েই। দর্শকেরা পারফরম্যান্স, গ্রাফিতি, স্থাপনা শিল্প ভিডিও আর্ট সবই দেখেছেন। তবে এসব নিয়ে তেমন বাতচিত-আলাপ ছিল না কারও মুখেই।
কেন এমন হলো? ভালো কাজ তো ছিলই প্রদর্শনীতে। শিল্পী রিপন সাহার ভিডিও আর্ট দেখে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়েই থাকতে হয়। লেওনার্দো দা ভিঞ্চির লাস্ট সাফার ছবির বিনির্মাণ করে ভিডিও আর্ট করেছেন তিনি। তাতে সাম্প্রতিক দুনিয়ার রাজনীতি, সাম্রাজ্যবাদী কূটচাল সবই এসেছে। বলা যায় বই বিপণিকেন্দ্র বাতিঘরে করা ওয়াকিলুর রহমানের স্থাপনা কর্মের কথাও। কিন্তু পাবলিক আর্টের যে প্রথম শর্ত অর্থাৎ দেখনদারির বিষয়, সেটাই ছিল না প্রদর্শনীতে।
ক্যালিফোর্নিয়ার রবার্ট আরউইন সাইট স্পেসিফিক আর্ট শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন। এরপর সত্তরের দশক থেকে িবশ্বের বিভিন্ন শহরে পাবলিক আর্ট বা সাইট স্পেসিফিক আর্ট হয়ে আসছে। নিউইয়র্কের টাইম স্কয়ারের সাবওয়েতে, জার্মানির কোলনে কিংবা আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে এ ধরনের প্রদর্শনী দর্শকের ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। কিন্তু সেসব প্রদর্শনীর সব চেয়ে লক্ষণীয় দিকটি হলো দর্শককে ধাক্কা দেওয়া। তেমন দর্শনীয় আয়োজন যোগের প্রদর্শনীতে ছিল কী?
‘আনফোল্ড’ বা ‘উন্মোচন’ শিরোনামের এই প্রদর্শনীর কিউরেটর ছিলেন শিল্পী জিহান করিম। প্রদর্শনীতে ২৫ জন শিল্পীর ২৩টি শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। আয়োজনে ‘চেরাগি পথের হাট’ সংগীত দল প্রদর্শনীর ফাঁকে ফাঁকে দর্শকদের শুনিয়েছে গান।