Thank you for trying Sticky AMP!!

ছবির অভি

কুতুবুল ইসলাম

বন্ধুমহলে পরিচিত অভির আরেক পরিচয় যে ক্যানভাসের কোনায় লেখা কুতুবুল ইসলাম, তা অনেকেই জানে না। অন্তর্মুখী এই শিল্পী তাঁর কাজের জন্য বন্ধুদের কাছ থেকে ‘অন্য রকম দৃষ্টি’ এড়িয়েই চলতে চান। এটা স্রোতের বিপরীতে যাওয়ার প্রচেষ্টা কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে হেসে অভি বলেন, আসলে শিল্পীরা স্রোতের উৎসুক দর্শকমাত্র।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে সবে সম্মান উত্তীর্ণ হয়েছেন এই তরুণ শিল্পী। কিন্তু এরই মধ্যে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। বিনয়ী অভি অবশ্য ‘নাম ছড়ানো’ নিয়ে খুব একটা আগ্রহী নন। নিজের আনন্দের জন্য কাজ করতেই ভালোবাসেন তিনি।

মাসব্যাপী এশিয়ান আর্ট বিয়েনাল ২০১৮–তে প্রদর্শিত অভির মিনিয়েচার আর্ট আকৃতির ক্ষুদ্রতা ছাপিয়ে নজর কেড়েছিল অনেক শিল্প উৎসুকের। একই বছর অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশন আয়োজিত স্টুডেন্ট আর্ট প্রজেক্ট, বৃহত্তে প্রদর্শিত হয় অভির সাইট স্পেসিফিক আর্টের আলোকচিত্র। এই বিশেষ শিল্পের জন্য অভি ক্যানভাস হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন কক্সবাজারের ফাসিয়াখালী, লামাতে অবস্থিত আস্ত একটি পাহাড়। এ ছাড়া গত কয়েক বছর নিয়মিতই ওয়ার্কশপ এবং প্রদর্শনী নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন তিনি। তাঁর মতে, এই সব অংশগ্রহণ কেবল একজন দর্শকের মতো সমাজটাকে দেখার একটি প্রচেষ্টা। কোনো পুরস্কারের আশায় কাজে আগ্রহ দেখাতে রাজি নন তিনি।

ক্যাম্পাসের আড্ডায় হোক বা ডিপার্টমেন্টের কোনো আয়োজনে, যত কাজই থাক, সব ঝেড়ে ফেলে হাজির হয়ে যেতে কখনোই দেরি হয় না এই পরিচিত মুখটির। কখনো দেখা যায় আড্ডার ফাঁকে তাঁর স্মার্টফোনের স্ক্রিনে এঁকে ফেলেছেন বন্ধুদেরই কারও ক্যারিকেচার। ছোটবেলা থেকেই খেলার ছলে নানা রকম অদ্ভুত খেলনা উদ্ভাবন করে ফেলতেন, যা এখন ‘মিক্সড মিডিয়া ইনস্টলেশন আর্ট’ হিসেবে পরিচিত।

ভাস্কর্যশিল্পে অভির আগ্রহ থেকে এই পথচলা শুরু হলেও ডিজিটাল আর্ট এবং অ্যানিমেশন নিয়ে কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চান সামনের দিনগুলোতে। শিক্ষাজীবন নিয়ে সামনে আর কোনো লক্ষ্য আছে কি না? বললেন, ‘আমি আসলে আরও শিখতে চাই। সবকিছু আবার শুরু থেকে শেখার সুযোগ পেলেও হাতছাড়া করব না।’

অভিকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন স্টুডেন্ট আর্ট প্রজেক্ট, বৃহত্তের কিউরেটর বিশ্বজিৎ গোস্বামী। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত ইন্টারনেটে নতুন ধারার শিল্পকর্মের দিকে চোখ রাখেন তিনি। বয়সে একেবারেই তরুণ, কম বয়সীদের কাজ তাঁকে আকৃষ্ট করে। বলছিলেন, ‘আমাদের দেশের তরুণেরা আরেকটু সাহায্য ও সহমর্মিতা পেলে আন্তর্জাতিক মানের শিল্প আসরগুলাতে হইচই ফেলে দিতে পারত।’