Thank you for trying Sticky AMP!!

ছুটিতে সন্তানের সঙ্গে কাটুক সময়

ছুটির সময় সন্তানদের নিয়ে প্রকৃতির কাছে যেতে পারেন। ছবি: অধুনা

এই যুগে স্বামী-স্ত্রী-সন্তান সবাই নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। গুণগত সময় (কোয়ালিটি টাইম) কাটানোও দুষ্কর হয়ে যায়। কিন্তু সুস্থ পারিবারিক সম্পর্ক রাখার জন্য সময় দিতে হবে পরস্পরকে। সে জন্য ছুটির এ সময়টা একসঙ্গে সুন্দরভাবে কাটানো যেতে পারে।

ছুটির সময়ে সন্তানেরা শুধু পড়াশোনা, ফেসবুক বা বন্ধুদের সঙ্গে সময় না কাটিয়ে পরিবারের সঙ্গে মিশে পারিবারিক বন্ধন আরও দৃঢ় করতে পারে। এতে সন্তানেরা পরিবারের প্রতি আরও দায়িত্বশীল হতে শিখবে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আনন্দে সময় কাটানো। সন্তানের সঙ্গে বাবা–মায়ের আনন্দের একটা সম্পর্ক থাকা উচিত। এই সময়টা ছুটির সময়। বছরের শেষে লম্বা ছুটি পাওয়া যায়। পড়াশোনার চাপও কম থাকে। সন্তানকে এখনই পড়াশোনার জন্য চাপাচাপি না করাই ভালো। লেখাপড়া ছাড়াও
বাবা–মায়ের সঙ্গে ভালো সময়
কাটানো যায়, সেটা সন্তানদের বুঝতে শেখাতে হবে।

একই সঙ্গে আগামী বছরের জন্য সন্তানকে মানসিক প্রস্তুতি নিতে বাবা–মায়ের সাহায্য করা উচিত। নতুন ক্লাস আবার অনেক সময় নতুন স্কুলেও অনেকে যায়। তাই স্কুল শুরুর আগের ছুটির এ সময়ে সন্তানকে মানসিক সমর্থন দেওয়া উচিত। এর মানে শুধু নতুন বছরের পাঠ্যবইয়ের পড়াশোনার প্রস্তুতিই না, অনেক কিছুরই প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এটা।

মানুষ প্রকৃতি থেকে সবচেয়ে বেশি শিখতে পারে। তাই সন্তানকে ছুটির এ সময়টা প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া উচিত। প্রকৃতির কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয় শেখা যায়। উন্নত মানসিকতা গড়তে এ বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে সন্তানকে সামাজিকভাবে গড়ে তোলার জন্য তার শিকড়কে চেনাতে হবে। ছুটির এ সময়টা পরিবারের আপনজনের কাছে নিয়ে যেতে পারেন। তাদের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ করে দিতে হবে।

সন্তান তার বাবা–মায়ের কাছে কী ধরনের প্রত্যাশা করবে বা করা উচিত—এটাও তাদের বোঝাতে হবে। একই সঙ্গে বাবা–মায়ের প্রতি সন্তানের আচরণ কেমন হবে, সেটাও বুঝিয়ে দিতে হবে।

ছুটির এ সময়টা সন্তানকে বাসার কাজে সহযোগিতা করা শেখাতে হবে। কারণ, এখনকার বেশির ভাগ শিশুই কাজের লোকের ওপর নির্ভর। আবার মা-বাবা অনেক বেশি আদর দিয়ে এটা বোঝান যে তাদের কাজ করার কোনো দরকার নেই। ফলে ছোটবেলা থেকেই তারা কোনো কাজ করা শেখে না। কাজ শিখলে শিশু যে শুধু আনন্দই পাবে তা নয়, এতে করে মা-বাবার সঙ্গে তার বোঝাপড়াও ভালো হবে।

ছুটির দিনগুলোতে মা যদি তাঁর কাজগুলো সন্তান বা সন্তানদের ভাগাভাগি করে দেন, তবে সন্তানও আত্মনির্ভরশীল হবে। এসব করার জন্য ছুটির দিনগুলোর চেয়ে মোক্ষম সময় আর কী হতে পারে!  

 অধ্যাপক ড. মেহেজাবিন হক, চেয়ারপারসন, এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়