Thank you for trying Sticky AMP!!

যানজটে বসে করবেন কী

লকডাউন আপাতত শিথিল। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে নারীরা বেরিয়েছেন শপিংয়ে, আর পুরুষেরা গরুর হাটে। সব মিলিয়ে শুক্রবারেও জ্যাম। এদিকে অনেকেই মনে করেন, কচ্ছপ আর ঢাকা শহরের দৌড় প্রতিযোগিতায় হেরে জ্যামেই বসে থাকবে আমাদের প্রিয় ঢাকা শহর। তার ভেতর দিয়ে নানান পণ্যের পসরা সাজিয়ে হেঁটে চলে যাবে ক্যানভাসাররা। বিক্রি হবে পানি, আইসক্রিম, হেডফোন, পেয়ারা, কোমর ব্যথার মলমসহ আরও নানা কিছু। ঢাকা শহরের জ্যামে গাড়ি আটকে থাকলেও চারপাশটা থাকে চলমান, ঘটনাবহুল। ঈদে বাড়ি যাওয়ার সময় সম্ভাবনা রয়েছে তীব্র যানজটে পরার। জেনে নেওয়া যাক, জ্যামে বসে আপনি কীভাবে বিরক্ত না হয়ে কাটাতে পারেন ‘কোয়ালিটি টাইম’।

যানজট

অনেকেরই নাকি জ্যামে ভালো ঘুম হয়। আবার গাড়ি চলতে শুরু করলে ঝাঁকুনিতে মাঝপথে ঘুমটা যায় ভেঙে। তাই কর্মস্থলে আসা–যাওয়ার মাঝে মানিব্যাগ আর ফোন সাবধানে রেখে ‘মিনি ঘুম’ দিয়ে দেন অনেকেই। তবে সাবধান, এটাই কিন্তু চোর আর মলম পার্টির মোক্ষম সময়! আপনার কিছু খোয়া গেলে কিন্তু বাসের হেলপার বা এই প্রতিবেদক কেউ-ই দায়ী থাকবেন না। তাই নাক ডেকে খানিক ঘুমিয়ে নেবেন কি না, সেই বিবেচনা একান্তই আপনার।

জ্যামে বসে যা কিছু করা সম্ভব, তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ফেসবুক খুলে বসা। কে কী করছে, এই ফাঁকে অনেকেই দেখে নেন। আবার সেই ফাঁকে জানলা দিয়ে বাজপাখির মতো একটা হাত ছোঁ মেরে আপনার মোবাইল কেড়ে নিয়ে মুহূর্তেই ভিড়ের মধ্যে মিলিয়ে যায়, এটিও ঢাকা শহরের একটি পরিচিত দৃশ্য। তাই কোথায় বসেছেন, কোন এলাকায় আছেন, সেই এলাকার পরিবেশ কেমন, এসব বিবেচনায় নিয়ে সতর্ক হয়ে তবেই ডুব দিন মোবাইলে।

ঈদে ঘরমুখো মানুষের তীব্র যানজট

জ্যামে বসে আপনার নোটপ্যাডে বাজারের লিস্ট বানিয়ে ফেলতে পারেন। স্মার্ট ম্যানেজারে দুদিনের শিডিউলও তৈরি করতে পারেন। চেক করতে পারেন মেইল। নিজেও প্রয়োজনীয় মেইল পাঠাতে পারেন। আর পারেন মেইলের উত্তর দিতেও। বদলে ফেলতে পারেন প্রোফাইল পিকচার বা কভার ফটো। ইনস্টাগ্রামেও দু–একটা ছবি পোস্ট করতে পারেন। ইদানীং জ্যামে বসে সিনেমা দেখা বা ইউটিউব চালানোও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

এবেলা ঢাকা শহরের জ্যাম নিয়ে একটা ছোট্ট মজার গল্প না বললেই না। ঘটনা হলো, বুড়িগঙ্গার এক জেলে অনেক দিন পর দারুণ সুন্দর একটা ইলিশ নিয়ে বাড়ি ফিরল। বউকে বলল ইলিশটা ভাজি করে দিতে। ইলিশটাকে বঁটির সামনে নিতেই কথা বলে উঠল সে। বলল, সে নাকি আলাদিনের জিন। তখন জেলেবউ বুদ্ধি বলল, ‘ঠিক আছে, তিনটা ইচ্ছা পূরণ করে দাও। তা না হলে তোমায় ভেজে খেয়ে ফেলব।’ ইলিশ তাতে রাজি। প্রথম ইচ্ছা, নদীপাড়ে একটা সুন্দর দোতলা বাড়ি। মুহূর্তের মধ্যে বাড়ি দাঁড়িয়ে গেল। দ্বিতীয় ইচ্ছা, একটা বড় সুন্দর মাছ ধরা নৌকা। সঙ্গে সঙ্গে তা–ও হলো। এবার জেলেবউ ভাবল, দুটো তো নিজেদের জন্য চাইল। তৃতীয় ইচ্ছাটা হোক ঢাকা শহরের মানুষের জন্য। বলল, ঢাকা শহরের জ্যাম দূর করে দাও। কিছুক্ষণ পর ইলিশ মাছটি মুখ কাঁচুমাচু করে বলল, ‘সরি ম্যাডাম, আমাকে ভাজি করে খেয়ে ফেলুন।’

যানজট

মোরাল অব দ্য স্টোরি, ঢাকা শহরের জ্যাম সহজে যাওয়ার নয়। তাই তো এই লেখা গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণে জেনে নিন, জ্যামে বসে আরও কী কী করতে পারেন আপনি। গান শোনা একটা কমন অপশন। যেখানে যে কাজে যাচ্ছেন, সে–বিষয়ক পড়াশোনাও করে ফেলতে পারেন। অনেকে তো সঙ্গে রাখেন বই। সেরে ফেলতে পারেন প্রয়োজনীয় ফোনালাপ। সে ক্ষেত্রে অবশ্য পাশের মানুষটি বিরক্ত হচ্ছে কি না খেয়াল রাখুন। জ্যামে অনেকে দেশ, কাল, রাজনীতির গল্প জুড়ে দেন। অংশ নিতে পারেন সেখানেও। এমনকি অফিসের কাজও এগিয়ে রাখতে পারেন। যেমন এই লেখাটি জ্যামে বসেই লেখা।