Thank you for trying Sticky AMP!!

টেকফেস্টে বাংলাদেশের হাসি

বাঁ থেকে আসিফ, মুবাশ্বির, মারিয়া ও তানজিলা

দলটি তাদের প্রকল্পের নাম দিয়েছিল ‘অরুণ আল্ট্রা’। সহজ করে তারা বলছে ‘সোলার বেলুন’। বেলুন যেমন আকাশে ওড়ে, হাওয়ায় ভাসে, এই বেলুনও তেমনই। তবে এর সঙ্গে থাকবে আস্ত এক ‘হিলিয়াম চেম্বার’, যেটা সোলার প্যানেলের মতো কাজ করবে। আমাদের দেশের ফসলি জমিগুলোতে শ্যালো মেশিন চালানোর কাজে আসবে এই প্রকল্প। এমন ভাবনা উপস্থাপন করে ভারতের আইআইটি মুম্বাইতে আয়োজিত ‘টেকফেস্ট ২০১৭’ প্রতিযোগিতা থেকে রৌপ্যপদক নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দল ‘আত্ম উন্মেষ’।

টেকফেস্টকে বলা হয় এশিয়ার সবচেয়ে বড় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিযোগিতা। প্রতিবছর মুম্বাই শহর থেকে ১৩ কিমি দূরে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) ক্যাম্পাসে বসে এই আসর। প্রায় ৩০ ধরনের প্রতিযোগিতা, সঙ্গে কর্মশালা, প্রদর্শনী আর বিশ্বমানের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মিলনমেলা—এসবই আয়োজনের প্রাণ। গত ২৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হলো এই উৎসব। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি), তেহরান ইউনিভার্সিটি, ভারতের সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি দেশের হাজারখানেক তরুণের অংশগ্রহণ ছিল এবারের আয়োজনে।

বাংলাদেশ থেকে অংশ নেওয়া ‘আত্ম উন্মেষ’ দল অংশ নিয়েছিল ‘ইন্টারন্যাশনাল সাসটেইনেবিলিটি চ্যালেঞ্জ’ (আইএসসি) নামক প্রতিযোগিতায়। দলের সদস্যরা হলেন আসিফ ইমরুল, মারিয়া রফিক, মুবাশ্বির তাহমীদ ও তানজিলা হক। আসিফ ও মারিয়া পুরকৌশল বিভাগের, মুবাশ্বির নেভাল আর্কিটেকচার ও মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ও তানজিলা পড়ছেন স্থাপত্য বিভাগে।

দেশে ফেরার পর কথা হলো দলের সদস্যদের সঙ্গে। আসিফ জানালেন তাঁদের প্রকল্পের বিস্তারিত। ‘আইএসসি চ্যালেঞ্জের মূল শর্ত ছিল তিনটি। নবায়নযোগ্য শক্তির অভিনব ব্যবহার দেখাতে হবে, সাশ্রয়ী মূল্যের হতে হবে এবং হতে হবে কৃষিবান্ধব’। এই তিনটি শর্তের কথা মাথায় রেখেই তাঁরা তৈরি করেন সোলার প্যানেল।

টেকফেস্টে অংশ নিতে যাওয়ার রাস্তাটা সহজ ছিল না, জানা গেল চার তরুণের কাছ থেকে। মারিয়া বলছিলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে এবার আমরা মোট ৯টি দল অংশ নিয়েছিলাম। বাংলাদেশের প্রকৌশলের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘এসাব’–এর আয়োজনে বুয়েটে বসেছিল দেশের রোবটেক নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের সর্বোচ্চ আয়োজন—ন্যাশনাল রোবটেক ফেস্ট ২০১৭। এই প্রতিযোগিতা থেকে নির্বাচিত দলগুলোই টেকফেস্টে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছিল।’

একটু ভিন্ন ধরনের প্রকল্প বলেই বোধ হয়, বিচারকদের সামনে হাজারটা প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছিল আত্ম উন্মেষের সদস্যদের। তবে হ্যাঁ, দিন শেষে ৩০ ডিসেম্বর যখন আইআইটির বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ভবনে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হলো, রৌপ্যপদক পেয়ে সেই কষ্ট যেন নিমেষেই ভুলে গিয়েছেন তাঁরা। জানিয়ে রাখি, প্রতিযোগিতার আরও দুটি পর্বে পুরস্কার জিতেছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের দল। ‘ডিজিটাইজ’ পর্বে চতুর্থ স্থান পেয়েছে বুয়েটের আরেকটি দল ‘শিরাবিন্যাস’। ‘ক্রেন ও ম্যানিয়া’ নামের একটি পর্বে চতুর্থ হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) শিক্ষার্থীদের দল ‘ডিসিপশনস’।