Thank you for trying Sticky AMP!!

তুমি এটা কেন করছ না?

নিজর স্বপ্নের বাস্তবায়ন সন্তানের ওপর না চাপানোই ভালো। ছবি: অধুনা

ছেলে চিকিৎসক হবে—অনেক বছর ধরেই এ স্বপ্ন দেখেন আরিফা ইসলাম (ছদ্মনাম)। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পরে ছেলে ইশতিয়াক ইসলাম (ছদ্মনাম) একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে পড়তে চায়। ছেলে জেদ করেই মা-বাবার কথার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ইশতিয়াকের একগুঁয়ে আচরণে খুব কষ্ট পান মা-বাবা দুজনই। মা-বাবারা সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তা করেন, যা স্বাভাবিক বটে। কিন্তু সন্তান কী হবে, কী না হবে—সেই চিন্তার ওপর অভিভাবকেরা নিজেদের স্বপ্নও অনেকটা চাপিয়ে দেন। তাঁদের স্বপ্ন সন্তানের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে চান।

স্বপ্ন পূরণের চেষ্টায় সন্তানের ওপর যথেষ্টই চাপ দেওয়া হয়। সেই চাপ কখন যে সন্তানদের মানসিক চাপে ফেলে, তা নিয়ে অভিভাবকেরা তেমন চিন্তা করেন না। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোসোশ্যাল কাউন্সেলর কাজী রুমানা বলেন, সন্তান কোন বিষয়ে পেশা গড়বেন, তা নিয়ে তাঁদের চাপ দেওয়া উচিত নয়। হয়তো এখন ভাবছেন, আপনার সন্তান চিকিৎসক হবে, অথচ যখন ১০ বা ১৫ বছর পরে ক্যারিয়ার শুরু করবে, তখনকার বাস্তবতায় অন্য পেশার গুরুত্বও বেড়ে যেতে পারে। সন্তানকেই তার সিদ্ধান্ত নিতে সময় দেওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে মা-বাবার দায়িত্ব হচ্ছে সন্তানকে সব বিষয়ে ধারণা দিয়ে তার ইতিবাচক মনন তৈরি করে দেওয়া। সন্তানকে পথ খুঁজে দেওয়ার চেয়ে পথ কীভাবে খুঁজতে হয়, সেদিকেই আমাদের মা-বাবাকে সচেতন হতে হবে।

ভবিষ্যতের বাস্তবতা ভাবুন

সন্তানের পেশা বেছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কখনো নেবেন না। সহজ অঙ্কে, ভবিষ্যতে কোন বাস্তবতা, তা আমরা জানি না। সব সময় সন্তানের জন্য ভবিষ্যৎ বাস্তবতার কথা বিবেচনা করুন। এখন আপনি হয়তো ভাবছেন, সন্তানকে কম্পিউটার প্রকৌশলী বানাবেন, অথচ আপনার সন্তান যখন পড়াশোনা শেষ করে পেশাজীবনে পা রাখবেন, তখন হয়তো আপনার সিদ্ধান্ত সঠিক মনে হবে না।

সন্তানের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে মন দিন

সন্তানকে বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে উৎসাহ দিন। বাড়িতে বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবেশ তৈরি জন্য বই, গাণিতিক বিভিন্ন পাজল, সুডোকু বা রুবিকস কিউবের প্রতি সন্তানকে আগ্রহী করে তুলুন।

সৃজনশীলতা বিকাশে মন দিন

সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকা, গান শেখাসহ বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে যুক্ত করুন। ভালো ক্যারিয়ারের চেয়ে ভালো মানুষ হওয়ার জন্য সামাজিক বিভিন্ন কাজে যুক্ত করুন।

সন্তানকে পথের সন্ধান দিন

সন্তানকে কী হতে হবে—তার দিকে চাপ না দিয়ে পথের সন্ধান দিন। পথ খুঁজে বের করার কৌশল বের করুন। একুশ শতকের এই সময়ে এসে বিভিন্ন উদ্ভাবনী পেশা খোঁজার স্বাধীনতা তাকে দিন।

পড়াশোনায় চাপ দেবেন না

আপনার স্বপ্নপূরণের জন্য সন্তানকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করবেন না কখনই। নিজ স্বপ্নপূরণের জন্য তার ওপর পড়াশোনার চাপ তৈরি করবেন না। সব সময় বই নিয়ে বসে থাকা, কিংবা সব সময় পড়া পড়া করবেন না।

অন্যকে অনুকরণে নিরুৎসাহিত করুন

‘অমুকের সন্তান চিকিৎসক, তুমি তো কিছু হতে পারছ না’—এমন বেসুরে সন্তানকে আমরা অনেক সময়ই কটুকথা শোনাই। সন্তানকে অবজ্ঞা করে কখনই কিছু বলবেন না। এতে ছোট বয়সে তার মনে আপনার সম্পর্কে খারাপ ধারণা তৈরি হতে পারে। সন্তানকে সব বিষয়েরই ভালো-মন্দ সম্পর্কে অবহিত করুন।