Thank you for trying Sticky AMP!!

দক্ষিণা হাওয়া

করোনার প্রকোপে বিশ্বের মানুষ যখন বোকা বনে আছে, মহাশয়ের মনে তখন প্রেম রক্তচাপ মাপার যন্ত্রের কাঁটার মতো ওঠা নামা করছে। শুনেছি, প্রেমে পড়ে মানুষ হয় বোকা। আমি বোকা তো ছিলামই, এবার কি তবে হাঁদারাম হওয়ার পালা!

যার সঙ্গে দেখা করতে যাব, তার বাড়ি খুলনার পাইকগাছা উপজেলায়। করোনাকালে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে সেখানে যাওয়া—সে তো রীতিমতো সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওই পার। এদিকে প্রতিবার পূজার সময়টা বাসায় থাকি। কিন্তু এবার? এ নিয়ে বাধল আরেক বিপত্তি।

অনেক বাধাবিপত্তি ঠেলে অষ্টমীর দিন সকালে ট্রেনে ওঠার পালা। আর সেই ভোররাত থেকে শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি। সাতসকালে বন্ধুকে সফরসঙ্গী করে ছুটলাম। মোহনগঞ্জ থেকে ময়মনসিংহ, সেখান থেকে খুলনার ট্রেন ধরতে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব স্টেশনে নামলাম। সেখানে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা বসে থেকে রাত সাড়ে নয়টায় চিত্রা এক্সপ্রেসে যমুনার ওপর দিয়ে একটানে চলে এলাম খুলনা স্টেশনে, তখন প্রায় ভোর।

স্টেশন থেকে নেমে আবার পাইকগাছার উদ্দেশে, সোনাডাঙ্গায় পৌঁছালাম। সাড়ে তিন ঘণ্টার মাজা ভেঙে যাওয়া অপূর্ব রাস্তা উপভোগ শেষে প্রায় ৮টা বেজে ২০ মিনিটে পা রাখলাম পাইকগাছা স্টেশনে।

ফোনে কথা বলে রাস্তা জেনে নিয়ে এগোতে থাকলাম ঠিক সোজা। আর এভাবে চার থেকে পাঁচ মিনিট হাঁটতেই রাস্তার এক পাশের গলির মাথায় তার সঙ্গে দেখা। নবমীর আমেজ তখন চারদিকে। সে সলজ্জিত ভঙ্গিতে মুচকি হেসে সামনে এসে কুশল বিনিময় করতে করতে এগিয়ে চলল আমাদের সঙ্গে।

কেন জানি না এই পুরো ২১ থেকে ২২ ঘণ্টার যাত্রার ধকল যেন একনিমেষেই কেটে গেল সেদিন। মনে হচ্ছিল, এমন জার্নি আরও কয়েকবার করে ফেলা যায় শুধু এই মুহূর্তটার জন্য। ঘড়িতে তখন প্রায় নয়টা, আমরা একসঙ্গে পূজার অঞ্জলি দিলাম, ঠিক যেমন আমরা ভেবে রেখেছিলাম, সেভাবে। সম্পর্কের শুরুটা এ রকমই ছিল।