Thank you for trying Sticky AMP!!

দল বেঁধে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাই

এই মেয়েরা প্রতিদিন সাইকেলে চড়ে স্কুলে যায় l ছবি: প্রথম আলো

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কোনো বিদ্যালয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায় না। গত মাসে বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে দাঁড়াতেই সাইকেলে চড়ে দলে দলে মেয়েদের স্কুলে আসতে দেখা গেল। সংরক্ষিত স্থান না থাকায় স্কুল মাঠের এক পাশে খোলা জায়গায় সারি বেঁধে রাখছে দুই চাকার বাহনগুলো। একটি-দুটি নয়, এক শর মতো।

সাইকেল কীভাবে এখানকার ছাত্রীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠল? প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার মান ভালো হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে ছেলেমেয়েরা এখানে ভর্তি হচ্ছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩০০। এর মধ্যে ১৪৩ জন মেয়ে। তিনি বলেন, ‘সাইকেলে আসা ওদের জন্য সহজ। আমরাও সাইকেলে আসতে ওদের উৎসাহিত করি। কারণ, একসঙ্গে দল বেঁধে এলে নিরাপত্তা নিয়ে ভয় থাকে না। ছাত্রীদের আসা-যাওয়ার পথে কেউ আজেবাজে কথা কিংবা কটূক্তি করলে শক্ত হাতে সামাজিকভাবে তা নিরসন করা হয়। মেয়েরাও এখন প্রতিবাদ করতে শিখেছে।’

যশোরের বাঘাপাড়া উপজেলার রঘুরামপুর গ্রামের নিপা বিশ্বাস নবম শ্রেণিতে পড়ে। সে বলে, ‘ছয় কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে প্রতিদিন স্কুলে আসা-যাওয়া করি। বেনাহাটি-হাতিয়ারা মোড়ে পৌঁছালে আগে বখাটেরা আজবাজে কথা বলত। শিক্ষকসহ মেয়েরা প্রতিবাদ করায় এখন বন্ধ হয়েছে।’

সপ্তম শ্রেণির যূথী গোস্বামী, অষ্টম শ্রেণির সান্ত্বনা গুপ্ত, নবম শ্রেণির হৈমন্তী ভট্টসহ অনেকেই বলে, স্কুলে আগে হেঁটে আসতে হতো বা ভ্যানের জন্য অপেক্ষা করতে হতো। এখন আর করতে হয় না। বাড়ি থেকে সাইকেল কিনে দেওয়ায় তা চালিয়ে স্কুলে আসি। তারা জানায়, কেউ বাবার কাছে, কেউবা দাদার কাছে সাইকেল চালানো শিখেছে।

শেখহাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বুলবুল আহম্মেদ বলেন, যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বাকড়ী, ঘোড়ানাচ, কমলাপুর, দোগাছি, রঘুরামপুর এবং নড়াইল সদর উপজেলার মালিয়াট, বাকলি, হাতিয়ারা, গুয়াখোলা, বেনাহাটি, মান্দিয়ারচর—এই ১১টি গ্রাম নিয়ে এগারখান এলাকা। স্কুলের ছেলেমেয়েরা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করে, এ দৃশ্য দেখতে দারুণ লাগে।

এই মেয়েরা নিরাপদে যাতায়াত করুক, এগিয়ে যাক আরও সামনে, স্বপ্নের কাছে।