Thank you for trying Sticky AMP!!

নতুন করে শুরু করুন

নতুন বছরে জীবনযাপনে পরিবর্তন আনুন, নতুন উদ্যোমে শুরু করুন। মডেল: তনকা। ছবি: অধুনা

কোথা থেকে শুরু করব—এমন দ্বিধায় বছরের পর বছর কেটে যায় অনেকের। শত শত পরিকল্পনা নিয়ে নতুন করে বছর শুরুর পরিকল্পনা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আর বাস্তবে দেখা যায় না। আপনি কতটা দক্ষ তা নির্ভর করছে আপনার পরিকল্পনার ওপর। আর কী বাস্তবায়ন করছেন, তার মধ্যকার মিল কতটুকু আছে তার ওপর। পরিবার, কর্মক্ষেত্র আর ব্যক্তিত্ব বিকাশ—এই তিন ভাগে আপনার সারা বছরের পরিকল্পনা বছরের শুরুতেই নিয়ে নিতে পারেন। ছোট করে শুরু করলে সাফল্যের মাত্রা অনেক বেড়ে যায় পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে।

মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ এস এম আরিফুজ্জামান নতুন বছরকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা নিয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দিচ্ছেন।

পরিবারের জন্য যা ঠিক করবেন

* বছরের শুরুতেই পরিবারের জন্য কতটুকু সময় দিতে চান, তা ঠিক করে নিন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বছরে দুই-তিন জায়গা ঘুরে আসুন। উৎসব-পার্বণে পরিবারের জন্য ছুটি হাতে রাখুন।

* সন্তানকে সময় দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবুন। সন্তানের বনভোজন, স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন সামাজিক উৎসবে সময় দেওয়ার কথা মাথায় রাখুন। বাবা-মাকে সময় দেওয়ার কথা মাথায় রাখুন।

* বছরের শুরুতে আত্মীয়দের কতটা সময় দেবেন, কার বাড়িতে বেড়াতে যাবেন, তা পরিকল্পনা নিয়ে তাদের জানিয়ে রাখুন।

* বছরের নির্দিষ্ট কিছু কেনাকাটা যেমন নতুন টেলিভিশন বা ফ্রিজ কেনার পরিকল্পনা নিয়ে টাকা জমানো শুরু করুন।

* পরিবারের জন্য আগের বছরের কোনো দেনা বা দায় থাকলে তা দ্রুত পরিশোধের পরিকল্পনা করুন।

কর্মক্ষেত্রে নতুন বছরে যা করবেন

* সারা বছরের অফিসের প্রোজেক্ট কিংবা কাজের লক্ষ্যমাত্রাগুলো আগেই ঠিক করে নিন। আগের বছরের কোনো কাজ বাকি থাকলে তার অগ্রগতি জেনে ঝাঁপিয়ে পড়ুন।

* কথায় বলে, ‘অফিসে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ডেস্ক কাজে মনোযোগ বাড়ায়’। আপনার কর্মক্ষেত্রের চারপাশটা গুছিয়ে রাখুন বছরের প্রথম থেকেই। কাজের টেবিল অগোছালো না রেখে টবে ছোট গাছ কিংবা ক্ষুদ্রকায় অ্যাকুরিয়াম টেবিলে রাখুন।

* অফিসের কাজ আর মিটিংয়ের জন্য ডায়েরি বা অনলাইনে ক্যালেন্ডার তৈরির অভ্যাস গড়ে তুলুন।

* নিয়মিত অফিস ডায়েরি লেখার অভ্যাস করতে পারেন। এতে প্রতি মাস শেষে আপনার অগ্রগতি, দুর্বলতা কিংবা ভুলগুলো নিজেই দেখার সুযোগ পাবেন।

* কর্মদক্ষতা বাড়ানোর জন্য বছরের কোন মাসে কোন কর্মশালা কিংবা সেমিনারে অংশ নিতে চান, তা আগে থেকেই ঠিক করে নিন। বছরে দু-তিনটি পেশাদার প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিন।

* নিজের ই-মেইল-ইনবক্সকে আরও পেশাদারভাবে ব্যবহার করতে অভ্যস্ত হোন।

ব্যক্তিত্ব বিকাশে যা করবেন

* নতুন বছরে অন্তত চার-পাঁচটি বই পড়ুন। পেশাসংশ্লিষ্ট দক্ষতা বিকাশে সহায়ক বই পড়ার পাশাপাশি গল্প-উপন্যাস পড়ার পরিকল্পনা করুন।

* নিজেকে বিকাশের জন্য মাস হিসাব করে চ্যালেঞ্জ গ্রহণের চেষ্টা করুন। যেমন জানুয়ারিতে ৩১ দিন আপনি ভোর পাঁচটায় উঠবেন, ফেব্রুয়ারিতে প্রতিদিন সকাল-বিকেল ৪০ মিনিট করে দৌড়াবেন, মার্চে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের চেষ্টা করবেন—এমন করে বারো মাস গুছিয়ে নিন।

* নিজের সুস্থতার দিকে মনোযোগ দিন। মানসিক চাপ কমানো থেকে শুরু করে শারীরিক কোনো ব্যথা কিংবা অসুস্থতা নিয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সুস্থ না থাকলে সাফল্যের কোনো মূল্য নেই।

* দৈনন্দিন পরিকল্পনা গুছিয়ে নেওয়ার অভ্যাস করুন বছরের প্রথম থেকেই। প্রতিদিন সকালে নাশতা, বিকেলে বই পড়া কিংবা সন্ধ্যায় পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর পরিকল্পনা নিলে আপনার দিনগুলো বেশ ভালোই কাটবে।

* দাঁত ব্রাশ, শেভিং কিটস বদলে ফেলুন নিয়মিত। দু-তিনটি নতুন পোশাক বানাতে পারেন।

* সামাজিক যোগাযোগের দুনিয়ায় আসক্তি কমিয়ে বাস্তব দুনিয়ায় সময় ও মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করুন।

* নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রতিদিন মুঠোফোন কিংবা ল্যাপটপ থেকে দূরে থাকার অভ্যাস করে নিজের মনোযোগ বিকাশে সময় দিন।

* ডায়েরি লেখার অভ্যাস করতে পারেন।

* নিজের কোনো শখ থাকলে সেখানে সময় দিন। শখ না থাকলে বারান্দায় বাগান কিংবা পোষা প্রাণী বাড়িতে রাখুন। এতে আপনার মন সব সময়ই ফুরফুরে থাকবে।

* আর্থিক স্বাধীনতার দিকে খেয়াল রাখুন। পুরোনো ঋণ থাকলে দ্রুত পরিশোধ করুন। কারও কাছে অর্থ বা অন্য যেকোনো কিছু দেনা-পাওনা থাকলে তা পরিশোধ করে নিজের ইতিবাচক জীবন নিশ্চিত করুন।