Thank you for trying Sticky AMP!!

নবজাতকের যত্ন

জন্মের পর থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত বয়সী শিশুকে নবজাতক বলা হয়। এ সময় মা ও শিশু দুজনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ৷ নবজাতককে নিরাপদ রাখতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কোনো বিকল্প নেই। ওর নাজুক কোমল শরীর খুব সহজেই 

বিভিন্ন রোগজীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে৷ জন্মের এক ঘণ্টা শিশুর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সময়টা শিশুর জন্য ‘গোল্ডেন ওয়ান আওয়ার’। শিশুর জম্মের পরে প্রথম ও একমাত্র কাজ হলো মায়ের দুধ (শালদুধ) খাওয়ানো। শালদুধ শিশুর জন্য প্রথম টিকা হিসেবে কাজ করে। এবং শিশুকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে। শালদুধ পরিমাণে কম হলেও শিশুর জন্য যথেষ্ট ও পরিপূর্ণ পুষ্টি জোগায়। শালদুধ খাওয়ালে শিশুর রাতকানা, জন্ডিস ও অন্যান্য রোগ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। শালদুধ খাওয়ালে মা ও শিশু উভয়েই সুস্থ থাকে। শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানো বলতে বোঝায় শিশুকে পূর্ণ ছয় মাস কেবল বুকের দুধই পান করানো।

জন্মের পর নবজাতককে নরম কাপড় দিয়ে ভালোভাবে মুছে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এখন গরমের সময়। এই সময় শিশুকে মোটা কোনো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা উচিত নয়। তাতে শিশু অস্থির হয়ে যেতে পারে। শিশুকে হালকা নরম কাপড় দিয়ে জড়িয়ে রাখলেই চলবে। প্রয়োজন হলে ঘরে ফ্যান বা এসি চালানো যেতে পারে।

শিশুর জম্মের তিন দিনের মধ্যে নবজাতককে গোসল করানো যাবে না। নবজাতকের স্বাভাবিক ওজন হলো ২.৫ কেজি। এই ওজনের চেয়ে কম বা কোনো সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

শিশু জন্মের পরে নবজাতককে মধু বা চিনির পানি খাওয়ানো ঠিক নয়। শিশু জন্মের পর মাকে বেশি করে পানি খেতে হবে। এ ছাড়া পরিবারের স্বাভাবিক খাবার মাকে খেতে দিতে হবে।

জন্মের পর থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত বয়সী নবজাতককে যে ঘরে রাখা হয়, অনেকে সেই ঘরের দরজা–জানালা বন্ধ করে রাখে। এটা করা কখনোই ঠিক নয়। নবজাতক ও মাকে যে ঘরে রাখা হয়, সেই ঘরের দরজা–জানালা খোলা রাখা উচিত। যাতে বাইরের আলো–বাতাস ঘরে আসতে পারে।

বাইরে থেকে কেউ এসেই নবজাতককে কোলে তুলে নেওয়া উচিত নয়। কারণ, বাইরে থেকে কেউ এলে তার শরীরে অনেক ময়লা–জীবাণু থাকতে পারে। শিশুকে হাত দিয়ে ধরার ফলে সেগুলো নবজাতককে আক্রান্ত করতে পারে। তাই নবজাতককে কোলে না নেওয়াই উচিত। আর যদি নিতে হয়, তাহলে কোলে নেওয়ার আগে ব্যবহার করতে পারেন জীবাণুনাশক হ্যান্ডওয়াশ অথবা ইনস্ট্যান্ট হ্যান্ড স্যানিটাইজার। এ ছাড়া হাত ধুয়ে নেওয়া উচিত শিশুর ডায়াপার বা প্রস্রাব-পায়খানা করা কাপড়-কাঁথা পাল্টানোর পরে।

বাচ্চাদের নখ খুব দ্রুত বাড়ে। ওর নখের আঘাতে ওর ত্বকে লাগতে পারে আঁচড়। আঁচড় গভীর হলে ঘা হওয়ার আশঙ্কা থাকে৷ তাই সুন্দর করে কেটে দিন ছোট্ট নখগুলো। শিশু ঘুমিয়ে গেলেই কাটুন, তাহলে নড়াচড়ার বা কেটে যাওয়ার ভয় থাকবে না। আর জেগে থাকা অবস্থায় কাটতে চাইলে কারও সাহায্য নিন। তবে খুব বেশি চেপে ধরবেন না৷ বাচ্চাদের নখ সাধারণত নরমই থাকে,
 তবে শক্ত মনে হলে গোসলের পর নখ কাটুন৷

শিশুকে পোশাক পরানোর সময় এবং ডায়াপার বাছতে গিয়ে খেয়াল রাখুন, তা আরামদায়ক এবং উচ্চ শোষণ ক্ষমতাসম্পন্ন কি না৷

অধ্যাপক তাহমিনা বেগম : শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ