Thank you for trying Sticky AMP!!

নাটক যাঁর ধ্যান-জ্ঞান

শ্রাবন্তী কুরী

শ্রাবন্তী কুরী চিকিত্সাশাস্ত্রে পড়ছেন। পরীক্ষা আর ক্লাসের ফাঁকে যখনই একরত্তি অবসর মেলে, ছুটে যান নাটকের মহড়ায়। এভাবেই তিনি হয়ে উঠেছেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের এক পরিচিত মুখ।

শ্রাবন্তীর জন্ম চাঁদপুর শহরের পুরান বাজারে। ২০০৬ সালে পরিবারসহ তাঁরা রাজধানীবাসী হন। বাবা হরিপদ কুরী ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। মা অনুরাধা কুরী ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে মারা যান। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে শ্রাবন্তী ছোট। ঢাকার বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক—দুটোতেই জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি।

২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু মায়ের ইচ্ছে ছিল, মেয়েকে চিকিৎসক বানাবেন। মায়ের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়েই তিনি মেডিকেলে ভর্তি হন ২০১৭ সালে। কিন্তু দুঃখ একটাই, যাঁর জন্য এত পরিশ্রম, সেই মাকে সুখবরটা দেওয়া হলো না। 

শ্রাবন্তী এখন চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন। মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর এখানকার প্রতিবেশী নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এই নাট্যসংগঠন ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে তিনি সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করছেন। একেই কি বলে সভ্যতা? ও আত্মসমর্পণ নামে দুটি মঞ্চনাটকে অভিনয় করছেন। তাসের দেশ, মায়ার খেলাসহ তিনটি গীতিনাট্যতেও দেখা গেছে তাঁকে। নাটকের পাশাপাশি নৃত্যশিল্পী হিসেবেও শ্রাবন্তীর পরিচয় রয়েছে। একসময় গান গাইলেও এখন নাটকই তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। স্কুলে নৃত্য ও সংগীত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে একাধিকবার পুরস্কৃতও হয়েছেন। 

শ্রাবন্তী কুরী বলেন, ‘নাটক আমাকে নতুনভাবে ভাবতে শিখিয়েছে। ভাগ্যিস, এখানে নাটকের একটা দল ছিল। নইলে মরেই যেতাম। পড়ালেখার এত চাপের মধ্যে নাটকই আমাকে মূলত বাঁচিয়ে রেখেছে। এটা যেন আমার প্রাণ। চিকিত্সক হওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে নাটকের সঙ্গেও যুক্ত থাকতে চাই। আমি নাটক করতে গিয়ে অনেক কিছু একসঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়টি আয়ত্ত করতে শিখে ফেলেছি। এটা আমার একাডেমিক জীবনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এখন আর পরীক্ষা কিংবা যেকোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ভয় পাই না। আমার মনোবল বেড়েছে কেবল নাটকে যুক্ত হওয়ার কারণেই।’

সুমনকুমার দাশ