Thank you for trying Sticky AMP!!

গলায় মাফলার, ফ্লিস জ্যাকেট আর চুলঢাকা বেসবল ক্যাপ—এ সময়ের তরুণদের পছন্দের শীতের সাজপোশাক।

নাতির দখলে নানা-দাদার ফ্যাশন

ফ্যাশন ঘুরেফিরে আবার সামনে আসে। এখন যেমন নব্বইয়ের দশকের নানা-দাদার মাফলার, সোয়েটার আর মাথাঢাকা টুপি দেখা যাচ্ছে হালফ্যাশনে। এই গ্র্যান্ডপা ফ্যাশন এখন তরুণদের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয়...

মাথায় টুপি, গলায় মাফলার, গায়ে ফ্লিস জ্যাকেট—নব্বইয়ের দশকে যাঁরা কৈশোর পেরিয়েছেন, হিম শীতের পোশাকের এই সাজ তাঁদের নস্টালজিক করে তুলবে। কেননা, এটিই ছিল সেই সময়ের স্মার্ট দাদা–নানাদের পছন্দের স্টাইল স্টেটমেন্ট। প্রাতর্ভ্রমণ, বিকেলের অল্পবিস্তর হাঁটাহাঁটি বা বয়স্কদের চায়ের আড্ডায় হরহামেশাই দেখা যেত এমন পোশাক। কুয়াশামাখা স্মৃতিময় সেই শীতের সকালের পোশাক যেন আবার ফিরেছে হালফ্যাশনে, যাকে বলা হচ্ছে গ্র্যান্ডপা ফ্যাশন। তরুণদের মধ্যে এই ফ্যাশন এখন দারুণ জনপ্রিয়।

পানামা হ্যাটের কারণে পুরো সাজেই চলে এসেছে ভিন্নতা

গ্র্যান্ডপা ফ্যাশনের প্রধান পোশাক সোয়েটার ও ফ্লিস জ্যাকেট। কিন্তু এই স্টাইলের আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে এর অনুষঙ্গ। যেমন বিভিন্ন ধরনের ক্যাপ, হ্যাট ও বেরেটের সঙ্গে ছেলেদের শীতের স্কার্ফ (আমাদের দেশে উইন্টার স্কার্ফ মাফলার হিসেবে প্রচলিত) থাকে। হালফ্যাশনে যোগ হয়েছে ক্ল্যাসিক এই স্টাইল। বলা যায়, নানা–দাদাদের ফ্যাশন এখন আবার নাতিদের দখলে। আমাদের দেশে এর জনপ্রিয়তার আরও একটি কারণ হচ্ছে আবহাওয়া।

হালকা শীতের জন্য আদর্শ সোয়েট শার্ট

বিশেষত, বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে শীত ততটা জেঁকে বসে না। সকাল আর সন্ধ্যায় একটু বেশি অনুভূত হলেও মাঝের সময়টায় শীত খুব একটা থাকে না বললেই চলে। সোয়েটার ও ফ্লিস জ্যাকেটের সুবিধা হচ্ছে, এগুলো খুবই হালকা। শীতের হালকা পোশাক হিসেবেই বেশি পরিচিত ও জনপ্রিয়। এ ছাড়া শার্ট কিংবা টি-শার্টের সঙ্গে স্তর করেও পরা যায়। এ নিয়ে ইনফিনিটির ভাইস চেয়ারম্যান নাইমুল হক খান বলেন, প্রযুক্তির কল্যাণে এখন সবাই খুব সহজেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন। এমনকি বিশ্বের কোথায় ফ্যাশনের কোন ধারা চলছে, খুব সহজেই সেটির খোঁজ নেওয়া যায়। মাঝের একটা সময় সোয়েটারের ব্যবহার কমে গিয়েছিল। গত কয়েক বছরে নতুনভাবে তা আবার ফিরে এসেছে।

ফ্যাশন ট্রেন্ড পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, পিনটারেস্ট, টিকটকের মতো সামাজিক যোগযোগমাধ্যম। বলা যায়, ফ্যাশনের প্রচলিত অনেক কিছুই বদলে দিয়েছে এসব অ্যাপস। শুধু তা-ই নয়, পুরোনোকেও নতুন মাত্রায় হাজির করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুধু সাধারণ মানুষই মজেছেন এমন নয়, তারকারাও এতে মজেছেন। বিশেষ করে অতিমারির ঘরবন্দী সময়ে এই মাধ্যমগুলো মানুষের কাছে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

নিউজবয় ক্যাপে নিজস্ব মেজাজে

গ্র্যান্ডপা ফ্যাশনের শুরুটাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ২০১৯ সালে ‘কপিং ইয়োর গ্র্যান্ডপ্যারেন্টস আউটফিট ফর আ উইক’ হ্যাশট্যাগে একটি প্রতিযোগিতা শুরু হয় ইউটিউব ও টিকটকে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল–এ প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বলা হয়, সেই সময় থেকেই গ্র্যান্ডপা ফ্যাশনের চল শুরু। এটাই পরবর্তী সময়ে তরুণদের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয় ফ্যাশন ট্রেন্ড হিসেবে জায়গা করে নেয়।

পুরোনো ধারা নতুন করে ফিরলে তাতে কিছু সংযোজন-বিয়োজন দেখা যায়। যেমন টিকটকার বা ইউটিউবাররা গ্র্যান্ডপা ফ্যাশনের সঙ্গে যোগ করেন ওয়াইটুকের জনপ্রিয় ট্র্যাকার হ্যাট। অনেকে ক্ল্যাসিক ফ্ল্যাট ক্যাপ বা নিউজবয় ক্যাপেও নিজেকে উপস্থাপন করেন। তবে ট্র্যাকার হ্যাটই বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এককথায় বলা যায়, এই ট্রেন্ড নতুনভাবে ফ্যাশনের চলতি ধারায় যোগ না হলে ভিনটেজ ও রেট্রো ক্যাপ–হ্যাটগুলো বর্তমান প্রজন্মের ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যেত। পাশাপাশি মাফলার বা উইন্টার স্কার্ফের ব্যবহারও যেন অনেকটা হারিয়ে গিয়েছিল।

গ্র্যান্ডপা স্টাইলে

গ্র্যান্ডপা ফ্যাশনের সঙ্গে নতুন জীবন পেয়েছে এই অনুষঙ্গ। এই স্টাইলের সঙ্গে একরঙা বা রেট্রো চেকের মাফলার দারুণ মানায়। অনেকে আবার সোয়েটার বা ফ্লিস জ্যাকেটের পরিবর্তে বম্বার জ্যাকেটও গায়ে চাপিয়েছেন। কয়েক বছর ধরেই ফ্যাশন ট্রেন্ডে রয়েছে বম্বার জ্যাকেট। এই জ্যাকেটকে আবার ভার্সিটি, লেটারম্যান, বেসবল বা কলেজ জ্যাকেটও বলা হয়।