Thank you for trying Sticky AMP!!

পুরস্কার পেয়েছে এক কলেজের নয় শিক্ষার্থী

চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের এই শিক্ষার্থীরা দ্য কুইনস কমনওয়েলথ রচনা প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পেয়েছেন

গল্পটা আজ থেকে ১৫ বছর পরের পৃথিবীর। বিষাক্ত বাতাসে তখন বেঁচে থাকা দায়। বাতাসের পাশাপাশি দূষিত পুরো পরিবেশ। বিষাক্ত পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে না পেরে মারা যায় নাতাশার বোন জিজি। মৃত্যুর সময় জিজির প্রশ্ন, ‘আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশে সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার অধিকার ক্ষুণ্ন করা হলো কেন?’
গল্পের মাধ্যমে ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অধিকার সংরক্ষণ’ বিষয়ে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাঈশা মুশাররাত এভাবেই জিজি নামক এক তরুণীর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে। কুইনস কমনওয়েলথ রচনা প্রতিযোগিতায় এই গল্পটি জিতেছে স্বর্ণপদক। মাঈশার মতো স্বর্ণপদক জিতেছে একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আহমেদ সানজিদান রাফসান। দুজনেই রচনা প্রতিযোগিতায় জ্যেষ্ঠ বিভাগে অংশ নিয়ে এই পদক জিতেছে।
একই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের আরও সাত শিক্ষার্থী পুরস্কার পেয়েছে। এদের মধ্যে দ্বাদশ শ্রেণির নুজাবা তাসান্নুম, একাদশ শ্রেণির সিদরাতুল মুনতাহা ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী +তাওসিপা জারিন পেয়েছে সিলভার পদক। এ ছাড়াও ব্রোঞ্জ পদক পায় একাদশ শ্রেণির সায়মা সুলতানা, দশম শ্রেণির তাওসিফা আনোয়ার, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী দুর্জয় দে ও আজমাঈন মুহাম্মদ। এদের মধ্যে আজমাঈন জুনিয়র বিভাগে এবং বাকিরা জ্যেষ্ঠ বিভাগে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল।
প্রতিবছর ব্রিটেনের রয়েল কমনওয়েলথ সোসাইটি আয়োজন করে ‘দ্য কুইনস কমনওয়েলথ রচনা প্রতিযোগিতা’। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নিতে পারে। প্রতিযোগিতা হয় দুই ভাগে। অনূর্ধ্ব ১৪ বছর পর্যন্ত জুনিয়র ক্যাটাগরি এবং ১৮ বছর পর্যন্ত জ্যেষ্ঠ ক্যাটাগরি। প্রতিযোগীরা রচনা চাইলে নিবন্ধ, গল্প, কবিতা ও চিঠির মতো করে লিখতে পারে।
গত মে মাসে শুরু হওয়া এ প্রতিযোগিতায় রচনা জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল পয়লা জুন। একদিকে পরীক্ষা, অন্যদিকে কলেজের সাংস্কৃতিক আয়োজন। সব মিলিয়ে বেশ চাপেই ছিলেন মাঈশা। সবদিক সামলে একেবারে শেষ সময়ে এসে রচনা মেইল করে সে। প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছে মাঈশা। তাড়াহুড়া করে জমা দিয়েছে বলে পুরস্কার পাওয়ার আশা নাকি তার ছিল না। তাই ১২ সেপ্টেম্বর ওয়েবসাইট খুলে প্রতিযোগিতার ফলাফল দেখে বিস্ময়ের ঘোর কাটছিল না। মাঈশা বলে, ‘রানির নামে দেওয়া পুরস্কার এভাবে পেয়ে যাব ভাবতেও পারিনি। মনে হচ্ছিল স্বপ্ন দেখছি।’
কথা হয় আরেক স্বর্ণপদক জয়ী আহমেদ সানজিদান রাফসানের সঙ্গে। তার বক্তব্য, ‘সারা পৃথিবীর মেধাবী তরুণদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়ে ভালো লাগছে। নিজের পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুনাম তুলে ধরতে পেরেছি এটাই বড় কথা।’ পদক জিতে খুশি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের বাকি শিক্ষার্থীরাও। সিলভার পদকজয়ী নুজাবা তাসান্নুম বলে, ‘একই প্রতিষ্ঠানের নয়জন শিক্ষার্থী পুরস্কার জিতেছি আমরা। এ আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। পরিবার ও শিক্ষকদের সহযোগিতা ছিল বলেই এতটা পথ পাড়ি দিতে পেরেছি।’ কমনওয়েলথের এই প্রতিযোগিতার যাবতীয় তথ্য জানা যাবে thercs. org ওয়েবসাইটে।