Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রকৃতির ছবিতে তৃতীয় মোমিন

আবদুল মোমিনের তোলা ছবিটি

বছর তিনেক আগে স্রেফ শখের বশেই ছবি তোলা শুরু করেছিলেন আবদুল মোমিন। সেই শখ তাঁর জীবনকে এত এত অর্জনে পূর্ণ করে দেবে, তা কে জানত! একগাল হেসে মোমিন বললেন, ‘আমিও জানতাম না। আর সব সময় যে জানা পথেই সাফল্য আসবে, তার কোনো মানে নেই। অজানা পথ ধরেও অনেক সময় সাফল্য আসে।’

তারপর উদাহরণ হিসেবে নিজেকেই উপস্থাপন করেন মোমিন, ‘এই যে আমাকে দেখেন। ফটোগ্রাফির পথ কি চিনতাম? স্রেফ শখের বশে মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলতে শুরু করেছিলাম। সেই ছবিগুলোই দেশ–বিদেশে পুরস্কার পেতে শুরু করে।’

হ্যাঁ, আবদুল মোমিনের তোলা হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের প্রকৃতির ছবি সম্প্রতি উইকি লাভস আর্থ ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। ১৭ ডিসেম্বর উইকি লাভস আর্থ ২০১৮ সালের সেরা ১৫ আলোকচিত্র প্রকাশ করেছে। ইন্টারনেটে মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ার মূল প্রতিষ্ঠান উইকিমিডিয়া কমনসের আয়োজনে প্রতিবছর এই আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রকৃতি রক্ষার বার্তা নিয়েই এই প্রতিযোগিতার আয়োজন। উদ্যানে সবুজ গাছের ফাঁকে রোদ্দুরের খেলা করার সাতছড়ির ছবিটি ছাড়া মোমিনের আরেকটি ছবি তালিকার অষ্টম অবস্থানে রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের আলোকচিত্রী শাহানশাহ বাপ্পীর তোলা পাখির ছবিটি হয়েছে দ্বাদশ। প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রুশ আলোকচিত্রী একতিরিনা ভাসিজিনা ও ইলা তিমিনির ছবি।

পুরস্কার বিজয়ী ছবির প্রসঙ্গ ধরেই মূলত কথা হয় মোমিনের সঙ্গে। ছবির গল্প বলতে গিয়ে স্মৃতিতে ডুব দেন মোমিন। প্রথম ছবি তোলার স্মৃতি মনে পড়ে তাঁর, ‘প্রথম ছবি তুলেছিলাম একটা পোকার। মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে। সেই ছবিটাই প্রথম পুরস্কার এনে দেয়। ১০ হাজার টাকা পুরস্কার পেয়েছিলেন বলে জানান আবদুল মোমিন। তারপর একে একে বেশ কিছু পুরস্কার জুটে যায়। পুরস্কারের সব টাকা একত্র করে একটা ডিএসএলআর ক্যামেরা কেনেন তিনি। সেই ক্যামেরা দিয়েই এখন চলছে তাঁর শখের ফটোগ্রাফি।

শখকে কি পেশা হিসেবে নিতে চান?—প্রশ্ন করি। উত্তরটা মোমিন একটু বিশদভাবেই দেন, ‘দেখুন, আমি পড়ালেখা করেছি রসায়নবিদ্যায়। বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেছি। কিন্তু পেশা হিসেবে ফটোগ্রাফিকে নিতে চাই। এ জন্য এখন সিনেমাটোগ্রাফি শিখছি।’

সিনেমাটোগ্রাফি? সিনেমাও বানাবেন তাহলে? প্রশ্ন শুনে হো হো করে হেসে ওঠেন মোমিন, ‘বানাব মানে কী? বেশ কয়েক মাস আগে শুরু করে দিয়েছি। ইতিমধ্যে আমার একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ভালোবাসার বাংলাদেশ এক প্রতিযোগিতায় ১০ লাখ টাকার পুরস্কার জিতেছে।’

বলেন কী! বিস্ময়ে চোখ কপালে ওঠে আমাদের। এতক্ষণ তো বলেননি!

‘আমি তো মুখ দিয়ে বেশি কথা বলতে পারি না। তাই ক্যামেরা দিয়ে কথা বলি। আসেন, আপনার একটা ছবি তুলি।’ ক্যামেরার লেন্স ঠিক করতে করতে আহ্বান জানান বগুড়ার বাঘোপাড়ার ছেলে আবদুল মোমিন।