Thank you for trying Sticky AMP!!

ফল প্রকাশের পর দেখি, হুমায়ূন সত্যিই পণ্ডিত!

বগুড়া জিলা স্কুল ভবনের দোতলার ২০১ নম্বর কক্ষ, দোতলার বারান্দা, পরিত্যক্ত শহীদ দোলন ছাত্রাবাসসহ ঘুরে আমরা তখন থমসন হলে এসেছি। স্কুলের সীমানাপ্রাচীরের ১৩৭ বছরের পুরোনো এই হল এখন গ্রন্থাগার। সেখানে দাঁড়িয়েই ৫৬ বছর আগের দিনগুলোতে চলে গেলেন এ কে এম রাজিউল্লাহ ও তৌফিকুল আলম। তাঁরা দুজন কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের বন্ধু। স্কুলজীবনে হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার জায়গাগুলো আঙুল উঁচিয়ে দেখাচ্ছিলেন। একফাঁকে এ কে এম রাজিউল্লাহ বললেন হুমায়ূন আহমেদকে প্রথম দেখার স্মৃতি, ‘হালকা-পাতলা, শ্যামবর্ণের একটা ছেলে আমাদের ক্লাসে ভর্তি হলো। শ্রেণিকক্ষে এসে নাম বলল হুমায়ূন। সেই প্রথম দেখা। একদম চুপচাপ স্বভাবের। পড়ুয়া। ক্লাসের ফাঁকে লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়ে। তার সঙ্গে দ্রুতই সবার বন্ধুত্ব হয়ে গেল।’

১৯৬৩ সালে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। ১৯৬৫ সালে ম্যাট্রিক (বর্তমান এসএসসি) পরীক্ষায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে মেধাতালিকায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন বগুড়া জিলা স্কুল থেকেই। তারপর ঢাকা কলেজে ভর্তি হন হুমায়ূন আহমেদ। তৌফিকুল আলম বললেন, ‘ম্যাট্রিকে বোর্ড স্ট্যান্ড করার পর আমরা ওর কাছে খুব লজ্জা পেয়েছিলাম। কারণ, ক্লাসে ৮-১০ জন ডানপিটে স্বভাবের ছাত্র ছিলাম, যাদের হুমায়ূন নানা উপদেশ দিতে আসত। এতে আমরা ওর ওপর বেশ খ্যাপা ছিলাম। স্বাস্থ্য কম ছিল বলে “শুঁটকো” বলে খ্যাপাতাম। কেউ কেউ আবার ঠাট্টা করে ‘‘পণ্ডিত’’ বলেও ডাকত। ফল প্রকাশের পর দেখি, সত্যিই সে পণ্ডিত!’

বগুড়া জিলা স্কুলের ছাত্র হিসেবেই ম্যাট্রিক পাস করেন হুমায়ূন আহমেদ। ছবি: সোয়েল রানা

তাঁদের সঙ্গে নিয়েই স্কুল চত্বরে ঘুরি। কথা বলি বর্তমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতিময় বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়ে রীতিমতো গর্বিত বর্তমান শিক্ষার্থীরা। বগুড়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তাক হাবিবও গর্বের সঙ্গে বললেন বর্তমান শিক্ষার্থীদের মাঝে হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যের আলো ও জ্ঞানের চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার কথা। জানালেন, ঐতিহ্যবাহী থমসন হলকে বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে রূপান্তর করে সেখানে হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে হুমায়ূন স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠারও স্বপ্ন রয়েছে।