Thank you for trying Sticky AMP!!

ফাল্গুনী সাহা

ফাল্গুনী সাহা

শিক্ষার্থী

শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে ট্রাস্ট কলেজ থেকে এ বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ফাল্গুনী সাহা। মাধ্যমিক পরীক্ষায়ও একই ফল ছিল তাঁর। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময় একটি দুর্ঘটনায় তাঁর দুই হাতের প্রায় কনুই পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়। কিন্তু তাতে দমে যাননি ফাল্গুনী। দুই কনুইয়ের মাঝখানে কলম চেপে ধরে লেখার কৌশল আয়ত্ত করেন তিনি। তাঁর সাফল্যের খবর জানাচ্ছেন মুসা আহমেদ

আপনার দুর্ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছিল?
আমার বয়স তখন সাত বছর। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ি। পাশের বাড়ির একটি ভবনের ছাদে বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করছিলাম। হঠাৎ বিদ্যুতের তারের সঙ্গে শক লেগে আমার হাতের প্রায় কনুই পর্যন্ত পুড়ে যায়। প্রথমে এলাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিই। কয়েক দিন যাওয়ার পর দেখি, আমার বাঁ হাতের দুটি আঙুল পচে পড়ে গেছে। তখন উন্নত চিকিৎসা করানোর মতো টাকা আমার বাবার ছিল না। পরে এলাকার লোকজনের আর্থিক সাহায্য নিয়ে চিকিৎসার জন্য কলকাতা যাই। সেখানকার চিকিৎসকেরা ক্যানসারের আশঙ্কায় আমার দুই হাতের প্রায় কনুই পর্যন্ত কেটে ফেলেন।

পরবর্তী সময়ে স্কুলে গিয়ে দুই কনুইয়ের মাঝখানে কলম রেখে লেখার কৌশল আয়ত্ত করলেন কেমন করে?

সুস্থ হওয়ার পর নিজের ইচ্ছায়ই স্কুলে গিয়েছি। পরে স্কুলের শিক্ষকদের সহযোগিতায় এভাবে লেখার কৌশল আমার আয়ত্তে আসে। এ ক্ষেত্রে অন্যান্য শিক্ষার্থীর চেয়ে আমার বসার চেয়ার-টেবিল আলাদা ছিল।

স্কুল-কলেজের সহপাঠীরা আপনার এ প্রতিবন্ধকতাকে কীভাবে দেখত?

কে কীভাবে দেখত, তা জানি না। তবে আমার মনে হয়েছে, সবাই আমাকে বন্ধু মনে করত। বিভিন্ন সময় তারা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।

মাধ্যমিকে ভালো ফল করার পর ঢাকায় পড়াশোনা করতে এলেন কার উৎসাহে?

গলাচিপা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করার পর বিভিন্ন পত্রিকায় আমাকে নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়। তখন ঢাকার ট্রাস্ট কলেজের অধ্যক্ষ বশির আহাম্মেদ ভূঁইয়া আরও ভালো পড়াশোনার জন্য আমাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন এবং ট্রাস্ট কলেজে বিনা খরচে পড়াশোনার সুযোগ করে দেন। এ ছাড়া কলেজ কর্তৃপক্ষ ফার্মগেট এলাকার একটি হোস্টেলে আমার থাকা-খাওয়ারও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

পড়াশোনা শেষে কী করতে চান, আপনার জীবনের লক্ষ্য কী?

এখন আমার একটাই লক্ষ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হওয়া। পড়াশোনা শেষে আমি ম্যাজিস্ট্রেট হতে চাই। আমার বাবা খুব দরিদ্র। তাই  পড়াশোনার জন্য আমি সমাজের সবার কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।