Thank you for trying Sticky AMP!!

ফ্রেমের সঙ্গে প্রেম তাঁর

ছবি বাঁধানোর ফ্রেম তৈরির কারিগর মো. জাহাঙ্গীর

লোকে তাঁর বাবাকে বলত, ‘ফ্রেম তৈরি করা কোনো কাজ না। ছেলেকে অন্য কোনো ভালো কাজে দিন।’ কথাটি কিশোর জাহাঙ্গীরের মনে ধাক্কা দিয়েছিল। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ফ্রেম তৈরির কাজটিকে একটি উন্নত পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবেন। মো. জাহাঙ্গীর এখন একজন সুপরিচিত ফ্রেম-ব্যবসায়ী। এখন তাঁর সঙ্গে কাজ করেন ১৩ জন কর্মী। তিনি এখন বলেন, ‘যারা শিল্প বোঝে না, তারাই ফ্রেমের কাজকে অবজ্ঞার চোখে দেখে।’

মো. জাহাঙ্গীরের জন্ম ঢাকায়, ১৯৭৭ সালে। ১৯৮৯ সালে ফ্রেমের কাজে হাতেখড়ি। এলিফ্যান্ট রোডে মামার ছবি বাঁধাইয়ের দোকানে কাজ শুরু করেন। ২০০৩ সালে নিজেই ‘জাহাঙ্গীর ফ্রেম ঘর’ নামে দোকান দেন—নীলক্ষেতের গাউসুল আজম সুপার মার্কেটে। একই বছর বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রদর্শনীর কাজ পায় জাহাঙ্গীর ফ্রেম ঘর। প্রশংসা কুড়ায় জাহাঙ্গীরের নিজ হাতে করা নান্দনিক ফ্রেমগুলো। একের পর এক ছোট–বড় প্রদর্শনীর কাজ আসতে থাকে। এখন অনেকের কাছে শৈল্পিক ফ্রেম মানেই জাহাঙ্গীরের ফ্রেম।

দৃক ও পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট আয়োজিত ছবি মেলায় একাধিকবার কাজ করেছেন জাহাঙ্গীর। ২০১২ সালে ঢাকার বেঙ্গল গ্যালারিতে ভারতের প্রখ্যাত আলোকচিত্রী রঘু রায়ের একক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। ফ্রেম করার দায়িত্ব পড়ে জাহাঙ্গীরের ওপর। দেশের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলাভিত্তিক ফটোগ্রাফি সংগঠনের বেশির ভাগ কাজ জাহাঙ্গীর ফ্রেম ঘর করে থাকে। এখানেই থেমে থাকেননি জাহাঙ্গীর। ২০১৩ সালে দৃক গ্যালারি করলেন ‘টাইম ইন ফ্রেম’ শিরোনামের ফ্রেম প্রদর্শনী। এমন প্রদর্শনীর কথা আগে কখনো শোনা যায়নি। সেই প্রদর্শনীর মাধ্যমে সবাই জানতে পারল, কাঠের ফ্রেম কতটা শৈল্পিক ও উঁচু দরের হতে পারে। পরের বছর অনুষ্ঠিত হয় ‘টাইম ইন ফ্রেম-২’।

ফ্রেম শিল্প সম্পর্কে জাহাঙ্গীর বলছিলেন, ‘আগের চেয়ে ফ্রেমের চাহিদা অনেক বেড়েছে। কিন্তু কারিগরের সংখ্যা বাড়ছে না। কেউ শিখতে চাইলে আমি কাজ শেখাতে রাজি আছি।’ ফ্রেমের এই কারুকাজকে শিল্প হিসেবে গড়ে তুলতে চান তিনি।